#বীরভূমের_পটকথা_ও_দুর্গা

#পর্ব_২

দুর্গা শিবা মহালক্ষ্মী-র্মহাগৌরী চ চন্ডীকা |
সর্বজ্ঞা সর্বলোকেশী সর্বকর্মফলপ্রদা ||  ||

সর্বতীর্থময়ি পুণ্যা দেবযোনি-রযোনিজা |
ভূমিজা নির্গুণাধারশক্তিশ্চানীশ্বরী তথা || ||

নির্গুণা নিরহংকারা সর্বগর্ববিমর্দিনী |
সর্বলোকপ্রিয়া বাণী সর্ববিদ্যাধিদেবতা || ||


দুর্গাপট , বিষয়টি বেশ প্রাচীন। হম , আমরা যে সালে দাঁড়িয়ে , সেখান থেকে দেখলে সত্যই তা প্রাচীন।আদিত্য মুখপাধ্যায় দুর্গাপট প্রবন্ধে পট এই শিল্প বা বিষয়টির উৎপত্তির কারন হিসাবে বলেছেন – 
“পটদুর্গার উৎপত্তির কারণও সামাজিক অস্থিরতা, বাঙ্গলা তথা সমগ্র ভারতে ইসলামিক আক্রমন ও আগ্রাসন এবং তাদের দ্বারা মূর্তি পূজায় বিরোধিতা , অর্থনৈতিক বিপন্নতা, সহজ বহন যোগ্যতা, বর্গি হাঙ্গামা ইত্যাদির মধ্যে থেকে গেছে।যেখানে কোনো ভাবেই ধর্ম চুত্য করা যায় নি হিন্দু বাঙ্গালী মেধাকে, তাঁর প্রাচীন ঐতিহ্য মন্ডিত সংস্কৃতিকে….তাই চিন্ময়ী মা দুর্গার আরাধনা মৃন্ময়ী থেকে পটেশ্বরী রূপে আবির্ভুতা  হয়েছেন মন্ডপ মন্ডপে।”


যদি লেখকের মন্তব্যকে যথার্থ ধরে নেওয়া হয় তাহলে হবে যে বীরভূমে পট পূজার সূচনা সপ্তদশ অষ্টদশ শতকের পূর্বে নয়।কারন এর পূর্বে নবাবী আমল সূচিত হয় নাই। এছাড়াও যে অন্যান্য বিপর্যয় গুলির উল্লেখ তিনি করেছেন তার সব গুলিই অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কালের ঘটনা। যদি সেই মতই মেনে নেওয়া হয়, তাহলে কোনো মতেই বীরভূম জেলার পটের পূজা ১৫০ থেকে ২০০ বৎসর পূর্বের নয়।


আবার এই একই প্রবন্ধে লেখক বলেছেন যে , জমিদারি চলে যাবার পরে যখন আর্থিক অস্বাচ্ছন্দ আসে, তখন থেকে শুরু হয় #ঘটেপটে পূজা। গোপীকান্ত কোঙার মহাশয়ের মতে, উনিশ শতকের গোড়ায় কালীঘাটের পটশিল্পীগন পট আঁকতেন । সেখান থেকেই পটের দুর্গা পূজা শুরু হয়। কারন এতে ব্যয় কম।এই বাঙ্গলার বহু স্থানেই আজও পটের পূজা প্রচলিত আছে।হাটসেরান্দি পটের পূজা প্রায় ২০০ বছরের পুরাতন। অর্থাৎ আর্থিক কারনকেই তিনি মূল কারণ হিসাবে দেখেছেন পটের পূজা শুরু হবার নিমিত্ত…
কিন্তু এই যে পটের পূজা ….জমিদারি চলে যাবার জন্য শুরু হয় , জমিদারি চলে যাবার সময় কাল কখন? ১৭৯৩ সালের পরে কি? ১৮১৫ সালের পূর্বে কি কালীঘাটের পটুয়ারা পট আঁকতে শুরু করেন?  গুরুসদয় সংগ্রহ শালায় ২৫০ পুরাতন দুর্গা পটের দেখা মেলে…তার ব্যাখ্যা কি? 


অনেকেই বলবেন হয়ত সেগুলি প্রতিমা জ্ঞানে পূজা হত না। যদি না ই হত তাহলে কেন সেগুলি আঁকা হল? কি ব্যাখ্যা আছে তার? তখনকার তো এমন হাল ফ্যাশন চালু ছিল না যে দুর্গা পট দিয়ে মানুষ ঘর সাজাবেন….তাছাড়া প্রতিমা জ্ঞানে পূজিত পট বিসর্জন হয়ে যেত। সেগুলি দীর্ঘস্থায়ী বস্তু দ্বারা নির্মিত হত না…
পটদুর্গা ও পটপূজার মধ্যে বঙ্গের সংস্কৃতি চেতনা , ধর্ম, দর্শন, বিশ্বাস মিশে আছে , মিশে আছে পরিশ্রম, শিল্প …তাকে কেবলমাত্র কিছু বিপর্যয়ের কারন কি করে বলব? 
যখন নতুন জমিদার পুজো শুরু করেন ,যেমন – গণপুর , মহোদরী , সে সময় তো আর্থিক অনটন ছিল না। তখন জমিদারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হত জমকালো করে পুজো করা নিয়ে। সঙ্গে থাকত নাচ , গান ,কবির লড়াই, পায়রা ওড়ানো, পায়রা লড়াই ….
মহারাজ কংসনারায়ন , রাজা নবকৃষ্ণ দেব  প্রত্যেকেই মায়ের আরাধনা করতেন। 


পটের পূজায় ঐশ্বর্য , আড়ম্বর  বা নেই…সব রকম আধুনিক লক্ষণের বিপক্ষে তার অবস্থান। কেন সেই পটের পুজো? – ভক্তির প্রাবল্য যেখানে থাকে সেখানে আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। 
আমাদের আলোচ্য বিষয়টি হল পটের দুর্গা।মা দুর্গা ও পট উভয়েই বঙ্গ জীবনে বড় প্রিয় ও ভীষন ভাবে আপন, ভীষন পরিচিত। এখানে মা ও পট উভয়েই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।  যেহেতু বীরভূমের পটের দুর্গা এই বিষয় আলোচনা করছি , সেহেতু বলি এই জেলায় মায়ের আরাধনাটাই প্রধান।এখানে পটের চিত্র যেমন তেমন। পট আড়ম্বর মূল লক্ষ্য নয় , সেটি শক্তি আরাধনায় একটি মাধ্যম।তাই বঙ্গে এই পটকে যাদু পটও বলা হয়।

পট একটি চর্চিত বিষয় বাঙ্গলা , ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চল ও উড়িষ্যায়। এই পট শব্দ ঘিরে আছে মতান্তর। মতভেদ আছে শব্দের উৎস ঘিরেও।তবে বহুমতের সিন্ধান্ত হল সংস্কৃত #পট্ট( বস্ত্র) হতে পট শব্দের উৎপত্তি। অনেকের বিশ্বাস এই পট শব্দটির মধ্যে লুক্কায়িত আছে প্রাচীন যাদু বিশ্বাস। সেই বিশ্বাস যা প্রকৃতির গুপ্ত শক্তিকে আরাধনার করে একটি মাধ্যমে আবাহন করা। ডক্টর সুব্রতকুমার মান্না মহাশয় ” বাংলার পটচিত্র , পটুয়াসংগীত, পটুয়াসমাজ, ও লোকসংস্কৃতি বিজ্ঞান”  গ্রন্থে সেই মতই প্রকাশ করেছেন।
ডক্টর বারিদবরণ ঘোষ মহাশয় বলেছেন – 
“আমাদের পট শব্দটি বস্ত্র বা কাপড় সম্পর্কেই সব থেকে ঘনিষ্ঠ। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য যে কেউ কেউ বলছেন পট শব্দটি আদিতে ছিল তামিল শব্দ #পডম্। তামিল ভাষায় পডম্ অর্থ ছবি। “তাই বাঙ্গলা ও উড়িষ্যায় যে পটচিত্র দেখা যায় তা যেমন পট মানে বস্ত্রখণ্ডের উপর হয় তেমনি পট মানে মাটির সরা বা পাত্রের উপর ও চিত্রিত হয়।

“মাতঃ দুর্গে! যুগে যুগে মানবশরীরে অবতীর্ণ হইয়া জন্মে জন্মে তোমারই কার্য্য করিয়া তোমার আনন্দধামে ফিরিয়া যাই। এইবারও জন্মিয়া তোমারই কার্যে্য ব্রতী আমরা, শুন, মাতঃ, ঊর বঙ্গদেশে, সহায় হও।।”

অতি প্রাচীন কাল থেকেই আমরা পটের উল্লেখ পেয়ে যাই নানা ভাবে। পটশিল্প ভারত তথা বিশ্ব ইতিহাসের এক অন্যতম প্রাচীন অধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তথা জেলার পট ও পট দেখানোর গানের মধ্যে পুরুলিয়া, বীরভূম, মেদিনীপুর জেলা বিশেষত্বের অধিকারী । আড়াই হাজার বছর আগে থেকে ভারতবর্ষের নানা জায়গায় জড়ানো পট, চৌক পট জনসাধারনের, শিক্ষা , চিত্তবিনোদন ও হিন্দু ধর্ম, মহাকাব্য, পুরান, লৌকিক প্রথাকে উজ্জ্বল করে তোলার উদ্দেশ্যে ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হয়েছে ।হিন্দু ধর্ম ও তার থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন কাল্টকে প্রচার এবং লোক শিক্ষার এই বাহনটির আবির্ভাব সমাজের তাগিদেই ঘটে। ভারতে প্রায় সব এলাকাতেই পটুয়ার অস্তিত্ব ছিল।

 এরপর খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের #অষ্টাধ্যায়ী, খ্রিস্টাব্দ সপ্তম শতকে #হর্ষচরিত ,অষ্টম শতকে #উত্তররামচরিত, #মুদ্রারাক্ষস ইত্যাদি গ্রন্থে পটুয়া, পট, পটগীতির উল্লেখ পাই। কালিদাস ও ভবভূতির নাটকের আঁকা পট এবং পট দেখানোর উল্লেখ আছে। পটের বাস্তব উল্লেখ আছে বিশাখ দত্তের মুদ্রারাক্ষসে….এখানে পটুয়াদের যম পট্টিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মুদ্রারাক্ষসের রচনা কাল নিয়ে মতান্তর থাকলেও খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে যম পট্টিক বলে বিশেষ এক শ্রেণীর পটুয়ারা ছিল সেটি সর্বৈব সত্য। বাণভট্ট তাঁর হর্ষচরিত গ্রন্থে যম পট্টিকদের পট প্রদর্শন নিয়ে একটি সুন্দর দৃশ্য অবতারণা করেছেন।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান অনুসারে জানা যায় বিশ্বকর্মা ও ঘৃতাচীর নয় জন পুত্র ছিলেন । তাঁরা হলেন মালাকার ,কর্মকার, শঙ্খকার, তন্তুবায় বা কুন্দিবক,  কুম্ভকার ,কাংস্যকার ,চিত্রকর অর্থাৎ পটুয়া এবং স্বর্ণকার ।এদিক থেকে বিবেচনা করলে সমাজের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো  পটুয়ারা অত্যন্ত সম্মানিত এক সম্প্রদায়।

পটিদারদের ভিতর হতে কুম্ভকার জাতির উদ্ভব।বঙ্গে অনেক পটিদার যেমন কুম্ভকারের কাজ করেন তেমনি বহু কুম্ভকার করেন পটিদারের কাজ। পট যারা করেন তাঁরাই তাই পটিদার। জাতিতত্বের বিচারে পটিদারদের সঙ্গে কুম্ভকার জাতি সংশ্লিষ্ট , মধ্যে সন্ধিরূপে গোপকন্যার অবস্থান।

ভার্গবরাম বলেছেন :

পট্টিকোৎ গোপকন্যায়ং কুলালো জায়তে ততঃ

মতান্তরে , পট্টকারচ্চ তৈলক্যাং কুম্ভকারো বভুব হ।

গুজরাট অঞ্চলেও একরকম পট আছে ,তাকে বলে চিত্রকথী।এঁরাও কিন্তু ঘুরে ঘুরে গান করে পট দেখিয়ে জীবন সংগ্রাম অতবাহিত করেন। কি অদ্ভুত? এক দেশ, নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান কিন্তু শিল্প , পেশায় ,মননে কেমন সব বিবিধের মাঝে মিলন মহান হয়ে উঠেছে….

এই পটুয়া সম্প্রদায় লোকশিক্ষার বিরাট এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রচারের অনুকূলে কাজ করতেন। প্রচারের সরস মাধ্যম ছিলেন। পরে বৌদ্ধ কাল্ট উদ্ভব ও বৃদ্ধি পেলে একটা সময় মানুষ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। তারমধ্যে পটুয়ারাও ছিলেন। ওই সময় তাঁরা বৌদ্ধ কাল্ট নিয়র বেশ প্রচারও করেছিলেন।

বঙ্গ তথা ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যেও পট আঁকা ও পট প্রদর্শন রীতি ছিল ও আছে। আদিবাসী সমাজে পটুয়ারা পটকিরি নামে পরিচিত। কবি চন্ডী তে সব থেকে বেশি পটের উল্লেখ আছে।

পূর্বেই বলেছি যে বঙ্গের পট কে যাদু পট বলা হত। কেন তাও উল্লেখ করেছি। এছাড়াও একে যম পট ও বলা হত। কারন পটের শেষে যম রাজের রাজ্য দেখানো রীতি আছে। এটি প্রাচীন নিয়ম। জীবন, পাপ ,পুণ্য ,অনিত্যতাকে প্রকাশ করাই এর উদ্দেশ্য ছিল। তাই নাম হল যমপট্টিক।

বীরভূমের যে সমস্ত জায়গায় পটের পূজা হয় তার বেশির ভাগটাই হলো কলাবৌ বা নবপত্রিকা পূজা । সেক্ষেত্রে মায়ের ছোট একটা আঁকা মুখ হলেই চলে যায় ।কোথাও আবার সেটুকুও থাকে না । মা দূর্গার এই মুখচ্ছবি পূজকরা সংগ্রহ করেন মালাকার সম্প্রদায়ের কাছ থেকে। কিন্তু ছবিগুলো মালাকারেরা কোন শিল্পীকে দিয়ে চাহিদা অনুসারে যোগান দিতে বলেন। এসব শিল্পী হয় গরিব, তেমন ভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব  শিল্পী বীরভূম জেলার কোন তথাকথিত পটুয়া নন। কয়েকটি পরিবারে পূজায় পরিবারসহ মা দুর্গার পট আঁকা হয়। যদিও এদের সংখ্যা খুব বেশি নয় । তাঁরা আশেপাশের নির্দিষ্ট কোন শিল্পীর অথবা পারিবারিক সূত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন শিল্পীকে দিয়ে ছবি আঁকিয়ে নেন। এক্ষেত্রে আশেপাশে বেশ কয়েকটি গ্রামে যে দুর্গাপটেপুজো হয় তা শিল্পী সিউড়ি শহরের সমীরণ সরকার। তিনি জাতিগত ভাবে পটুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত নন এবং ঐতিহ্য গত ভাবে তিনি পটের দুর্গা হয়ত আঁকেন না।

প্রাচীন গ্রন্থাদিতে জানা যায় পটুয়ারা নানাভাবে গুপ্তচর্বৃত্তিতে নিযুক্ত হতেন। মুদ্রারাক্ষস নাটকেও তেমন ইঙ্গিত মেলে। বাংলায় পাল যুগের চিত্রকরগণ রাজ অনুগ্রহ লাভ করতে না পারলেও ,সেন যুগে নবশাখ গোষ্ঠীর একজন হয়ে উঠেছিলেন। যদিও পরবর্তীকালে বিভিন্ন জাতিভেদ প্রথার জন্য তারা পতিত হয়েছিলেন সমাজে। সম্ভবত ভরত নির্দেশিত রং ব্যবহার অমান্য করার কারনে তার আগেই তাঁরা সমাজ পতিত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে  সেন আমলে তাঁরা নবশাখ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হন ।  সম্ভবত তখন থেকেই তাঁদের আঁকা পট পূজায় ব্যবহার শুরু হয় নবশাখ গোষ্ঠীর অন্য এক সদস্য মালাকারদের মাধ্যমে।একাদশ দ্বাদশ শতক, এই সময় থেকেই বঙ্গের বিশেষ করে রাঢ় অঞ্চলে নবপত্রিকায় সঙ্গের দুর্গার মুখচ্ছবির প্রচলন হয়েছিল সম্ভবত। ভাবকল্পনা থেকে রূপকল্পনায় প্রবেশের এই তো ছিল সঠিক সময়।
ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ভারত বর্ষ তথা বাংলায় তুর্কি আক্রমণ ও বৈদেশিক অধিকারে নিপীড়িত হতে থাকে ঐতিহ্যময় সমাজ।মধ্যযুগীয় জাতিভেদ প্রথার কঠোর হয়ে বসতে থাকে সমাজে । তার ফলে বহু অকুলীন সহ এই ধরনের পটুয়া সম্প্রদায়ের কীয়দংশ বিদেশ হতে আগত ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য হন। সেই সময় হঠাৎ করে একটা নিষেধাজ্ঞা বা মূর্তি তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু পটুয়া সম্প্রদায় কিভাবে মেনে নেবেন? যাঁদের রক্তে বিশ্বকর্মা বাহিত হচ্ছেন…সর্বোপরি শিল্প বাহিত হচ্ছে…. তাই তাঁরা সেই সংকট থেকে উদ্ধার পেতেই মূর্তি তৈরি কম এবং পট তৈরি বেশি করে শুরু করলেন ।


অনেকেই একটা সময় অবধি তাই কোনো ধর্মেই অবস্থান না করে কেবল শিল্প ধর্মকে গ্রহণ ও সনাতন ঐতিহ্যকে সম্মান করে পট রচনা করে গিয়েছিলেন। ঠিক তখন থেকেই পট সরবরাহের ভার চলে যায় মালাকার দের হাতে। নাহলে শিল্পের সঙ্গে শিল্পগোষ্ঠীর এতটা ফারাক অন্য ক্ষেত্রগুলোতে চোখে পড়ে না ।পরবর্তীকালে বিভিন্ন ছোট ছোট মন্দির ও মঠ গুলো এই ধরনের পটুয়াদের আবার হিন্দু সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।
যাই হোক আবার ফিরে আসা যাক দুর্গা পূজায়। বিশেষ করে পটের দুর্গা পূজার কথায় …..

ওঁ দুর্গায়ৈ নমঃ ।
য়া অম্বা মধুকৈটভপ্রমথিনী য়া মাহিষোন্মূলিনী
য়া ধূম্রেক্ষণ চন্ডমুণ্ডমথিনী য়া রক্তবীজাশিনী ।
শক্তিঃ শুম্ভনিশুম্ভদৈত্যদলিনী য়া সিদ্ধলক্ষ্মীঃ পরা 
সা দুর্গা নবকোটিবিশ্বসহিতা মাং পাতু বিশ্বেশ্বরী ॥

#ক্রমশঃ

#দুর্গেশনন্দিনী

তথ্যঃ ১. পটের দুর্গা : বীরভূম

২.পট : বিমলেন্দু চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.