কাল দেখলাম, দিলীপবাবুর কথায় অনেকেই বলছেন BJP একটি অশিক্ষিত মানুষের দল। ঠিক, একদম ঠিক । আমি আপনাদের এই নিখুঁত বিচারের জন্য আপনাদের নতমস্তকে অভিনন্দন জানাই।
পশ্চিমবঙ্গে বাম ও ডান, এই দুই জমানাতেই এক সুশীল শিক্ষিত সমাজ মানুষ দেখতে পেয়েছেন । আমাদের তাঁদের থেকে একটু শিক্ষা নেওয়া উচিত ।আসলে শিক্ষিত মানুষের উচিত, বামেদের মতো বিরোধী দলের মহিলা বক্তা স্টেজে ওঠার আগে ফাঁকতালে চেয়ারে লাল কালি ছিটিয়ে রেখে তাঁকে অপদস্থ করা। তার শাড়িতে লাল দাগ লাগিয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে এক পৈশাচিক আত্মরতিতে মগ্ন হওয়া। কিংবা ধরুন স্বাধীনতা সংগ্রামে পুলিশের আঘাতে কোনো বিরোধীনেতার চোখ নষ্ট হয়ে গেলে তাঁকে “কানা” বলে সম্বোধন করা। কিংবা ধরুন বেবি ফুড মাইলো-র প্রচার করা মহিলাদের নিয়ে “মাইলো” কথাটির সন্ধিবিচ্ছেদ করে ছড়া কাটা, এগুলো তো আসল শিক্ষা । সুশীল সমাজ মাতৃদুগ্ধ পান করে না, জন্মেই মার্কসের উচ্ছিষ্ট ভক্ষন করে। তাই তাঁরা মাতৃজাতিকে নিয়ে ব্যঙ্গ রঙ্গ করতেই পারেন, খুব স্বাভাবিক যে তাঁদের জমানায় বানতলার ঘটনা ঘটবে। দিলীপবাবু তো মনে প্রাণে ভারতীয়, বামপন্থীদের এই শিক্ষা উনি জানবেন কিভাবে? উনি জানেন না যে দা-কাটারি নিয়ে মারামারি করা কিম্বা বে-আইনী অস্ত্র চালানো মেয়েটা দরকার মাফিক অ-বলা হয়ে যায় । আর “চাড্ডি” কথাটাতো ভীষণ সংস্কৃতিসম্পন্ন রুচিশীল একটা শব্দ, যে নামে BJP দলের কর্মীদের শিক্ষিতরা ডাকেন। সেই তুলনায় বারমুডা একটি অতি অশালীন শব্দ ।
এবার আসি ডান-পন্থীদের কথায় । এখানে তো আবার বহুভাষাবিদ শিক্ষিত অবলা নারীরা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে “শালা” বলে ডেকে কাঁকরের লাড্ডু খেতে দেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘কান ধরে’ ভাষা শিক্ষা দেন। সংস্কৃত, উর্দু, বাংলা মিশিয়ে অপূর্ব মন্ত্রপাঠ করেন, যার অর্থ শুধু সুশিক্ষিত ডান-পন্থীরাই বুঝতে পারবেন । পুরুষ ডানপন্থীদের শিক্ষা সংস্কৃতির তো শেষ নেই । তাঁরা আবার কথায় কথায় নাড়ু, বাতাসা, খেলা-এই শব্দগুলির রূপক ধর্মী প্রয়োগ করে থাকেন। সত্যিই তো , মহিলা হয়ে শাড়ি তুলে সকলকে প্ল্যাস্টার দেখানো সুশিক্ষা, কিন্তু সেটা নিয়ে মন্তব্য করলে সেটা অশিক্ষা । অথচ, গেরুয়া পরলেই সমাজ বিরোধী গুন্ডা হয়, এটা বলা কিন্তু শিক্ষা। শিক্ষা অর্থ মহিলারা নির্লজ্জের মতো যা-ইচ্ছে তাই করবে, আর পুরুষরা বিনা প্রতিবাদে আঁচলের তলায় লুকোবে। এটাই তো প্রগতিশীল সমাজের নিয়ম। সুস্থ সবল যুবতী সংরক্ষিত সিটে বসে যাবে আর বৃদ্ধ দুর্বল পুরুষমানুষ দাঁড়িয়ে থাকবেন, এটাই প্রগতিশীল সমাজ। ইংরেজিতে
কি যেন বলে “এলিট” নাকি যেন, এরাই একমাত্র শিক্ষিত, যারা সঠিক বাংলার চেয়ে বেঠিক ইংরেজিতে, ততোধিক বেঠিক উচ্চারণে অত্যন্ত কষ্টের সাথে স্বর বের করেন। এইসব শিক্ষা সনাতন ভারতীয়রা জানবে কিভাবে!
BJP এর শিক্ষা নেই বলেই তো সেই দল থেকে নির্বাচিত দেশের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে এত সমাদৃত । শিক্ষা নেই বলেই তো আজ সেই দেশের বিজেপি সরকারের শাসনকালে বাইরের দেশে এত ভ্যাকসিন যাচ্ছে । কিছুদিন বাদে এই দেশ অস্ত্রও রপ্তানি করতে চলেছে ।
আসলে BJP সত্যিই একটি অশিক্ষিত মানুষের দল, যারা এখনো সনাতন ভারতের আদর্শ নিয়ে চলে, তাই এখনো তারা ভণ্ডামি আর নোংরামি শেখে নি, এই যুগে শয়তানদের সাথে লড়াই করতে গেলে যেটা ভীষণ দরকার ।
লিখলেন Srutirupa Chattopadhyay