টানা ৩৮ দিনের লকডাউনে মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে করোনা মুক্ত বনমহল পুরুলিয়া। তাই ‘শিমুল–পলাশের দেশে নো পজিটিভ’ ট্যাগলাইনে বিশ্ববাংলা লোগো লাগিয়ে সোশ্যাল সাইটে প্রচার করছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এই প্রচারের মধ্যেই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বার্তা, করোনামুক্ত পুরুলিয়া গড়ার চ্যালেঞ্জ সফল হবে সামাজিক দূরত্ব মেনেই।
সেই সামাজিক দূরত্বের সঙ্গে লকডাউন সফল করতে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মোট ৬৪টি মামলায় ৩১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। পাঁচটি চার চাকা, দশটি টোটো, ১১০টি মোটরবাইক ও একটি সাইকেলও বাজেয়াপ্ত করেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। সেই সঙ্গে এই রোগ নিয়ে গুজব ছড়ানোয় ছ’টি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে দশ জন। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব বলছে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১৬১ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার মধ্যে ১১৩টি নেগেটিভ। বাকি ৪৮টির এখনও রিপোর্ট আসেনি। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “এখনও পর্যন্ত পুরুলিয়া করোনামুক্ত হওয়ার অধিকাংশ কৃতিত্বই আমি জেলার মানুষজনকে দিতে চাই। তারা আমাদের মতই দিন–রাত লড়াই না করলে এই কাজ সম্ভব হত না। জেলার আম জনতাও এক এক জন করোনা যোদ্ধা।”
তবে এই জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও জেলা পরিষদকে কম কাঠ–খড় পোড়াতে হয়নি। লকডাউন সফল করতে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে যেমন রাস্তায় নামতে হয়েছে। তেমনই মাস্ক সচেতনতায় পথে নেমে প্রচার করেছেন জেলাশাসক। গ্রামে-গ্রামে গিয়ে হাত ধোওয়ার স্বাস্থ্যবিধি বুঝিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েতে ঢ্যাড়া পিটিয়ে ভিন রাজ্য থেকে আসা মানুষজনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগনের কথায়, “আমরা বারবার মানুষকে বোঝাচ্ছি খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বার হবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।” তাই পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ফি দিন আকাশে ড্রোন ওড়াচ্ছে। সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “লকডাউনের সময়টুকু শুধু নয়। করোনামুক্ত পুরুলিয়া গড়তে মুখে মাস্ক বেঁধে সামাজিক দূরত্ব রাখার লড়াই বহুদিন চালিয়ে যেতে হবে। তবেই আমাদের চ্যালে়ঞ্জ সার্থক হবে।” সেই চ্যালে়ঞ্জ সার্থক করতেই এদিন বিকাল পর্যন্ত ২১,১৭২ জন ১৪দিন অতিক্রান্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্তি পান।