মমতা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের বিধায়ক, আসানসোলের প্রশাসক, বড় অভিযোগ জিতেন্দ্রর

বিদ্রোহ, অসন্তোষ, ক্ষোভের আগুন যেন ক্রমশই সংক্রামিত হতে শুরু করেছে। এই সবে গতকাল বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। চব্বিশ ঘণ্টা না কাটতেই আজ সোমবার ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠল আসানসোলে।

তাও আবার কে!

খোদ আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান পুর-প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লিখে বলেছেন, কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি যোজনার আওতায় আসানসোলের ২ হাজার কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্রেফ রাজনৈতিক কারণে ওই টাকা নিতে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল, ওই টাকা রাজ্য দেবে। কিন্তু রাজ্য তা দেয়নি। তার ফলে বঞ্চনা হয়েছে আসানসোলের সঙ্গে। আসানসোল, কুলটি, জামুরিয়া, রাণিগঞ্জের বহু রাস্তা খারাপ। কিন্তু আপনার সরকার সেগুলির জন্য কোনও প্রকল্পই অনুমোদন করেনি।

দুর্গাপুর-আসানসোল চত্বরে তৃণমূলের দাপুটে নেতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সন্দেহ নেই, তাঁর এই চিঠিকে অনেকে বিদ্রোহের বার্তা বলেই মনে করছেন। এও জল্পনা শুরু হয়েছে, তা হলে কি জিতেন্দ্রও বেরিয়ে যাওয়ার দরজা খুঁজছেন।

লোকসভা ভোটে এই জিতেন্দ্রর উপরেই বাবুল সুপ্রিয়কে পরাস্ত করার দায় বর্তেছিল। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন মুনমুন সেন। কিন্তু পরোক্ষে লড়েছিলেন জিতেন্দ্রই। তবে বাবুলকে পরাস্ত করতে পারেননি। বরং দেখা গিয়েছিল, আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকায় মজবুত জনভিত্তি গড়ে তুলতে পেরেছে বিজেপি।

এদিন জিতেন্দ্রর চিঠি তৃণমূলকে বেশ অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ ব্যাপারে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকারের নীতি নিয়ে উনি যে প্রশ্ন তুলছেন তা ঠিক নয়। জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিধায়ক। উনি বিধানসভার সদস্য। সরকারের নীতি প্রনয়ণের উনিও শরিক। এ ভাবে চিঠি লিখে বলে তা বাইরে প্রকাশ করে দিয়ে উনি ঠিক করেননি।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, জিতেন্দ্র পুরমন্ত্রীকে ওই চিঠি পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই তা টুইট করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। তা থেকেই অনেকের এও সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, তা হলে কি গেরুয়া পথে হাঁটা লাগাচ্ছেন জিতেন্দ্র।

এ প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, তৃণমূল তো দরজা খুলে রেখেছে। কারও ভাল না লাগলে বেরিয়ে যেতে পারেন। তবে জিতেন্দ্র আমার ভাই। ও তৃণমূল ছাড়বে বলে মনে করি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.