আলিপুরদুয়ার পশ্চিমবঙ্গের এক নতুন জেলা। এই জেলায় অবস্থিত একটি স্থানের নাম “রাজা ভাত খাওয়া”। এটি সড়কপথে জেলাসদরের সাথে যুক্ত থাকলেও চারদিক দিয়ে ঘেরা বক্সা জাতীয় উদ্যান একে প্রাকৃতিক সুন্দরতায় ভরে তুলেছে। কিন্তু এই স্থানের নাম “রাজা ভাত খাওয়া” হওয়ার পেছনের কাহিনী হয়তো অনেকের অজানা।
ঘটনাটি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের। তৎকালীন কোচবিহারের রাজা ধৈর্য্যেন্দ্রনারায়ন ভুটান সেনাপতি পেনশু তোমা হাতে বন্দী হন। বন্দী রাজাকে প্রথমে বক্সা ও পরে তৎকালীন ভুটান রাজধানী পুনাখাতে বন্দী করে রাখা হয়। ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানীর যৌথ সেনাবাহিনী কোচবিহারের সমস্ত ভুটানি সেনা ঘাঁটি ভেঙে দেয়। যুদ্ধের পর রংপুরের কালেক্টর পারলিং ভুটান রাজাকে চিঠি লিখে জানান রাজা ধৈর্য্যেন্দ্রনারায়নকে মুক্তি না দিলে ইংরেজ সৈন্যরা ভুটান রাজধানী দখল করবে। এরপর রাজা ভুটান থেকে মুক্তি পেয়ে বক্সার পথে কোচবিহার যান। রাজার মুক্তির আনন্দে রাজপুরুষগণ রাজাকে অভ্যর্থনা জানাতে বক্সায় যায় এবং এইখানেই চেকাখাতার কাছে রাজার প্রথম অন্নগ্রহনের ব্যবস্থা করেন। বহুদিনের পর স্বদেশে ফিরে এই স্থানে রাজা ভাত খেয়েছিলেন। এই ঘটনার পর থেকেই লোকমুখে এই স্থানের নাম হয় রাজাভাতখাওয়া।
বর্তমানে রাজাভাতখাওয়া আলিপুরদুয়ারের একটি অন্যতম স্থান ও রাজাভাতখাওয়া একটি উল্লেখযোগ্য রেলওয়ে স্টেশনও। ৩১৭ নং জাতীয় সড়কটি এই স্থানের উপর দিয়ে গেছে। তাছাড়াও এই রেলওয়ে স্টেশনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শামুকতলায় যেতে পরে।