দেশ জুড়ে লকডাউনের মধ্যেও থেমে রইল না পথ চলা। নতুন পথে চলা শুরু হল সালানপুরের উত্তরামপুরের জিৎপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ৬ নম্বর কল্যাণগ্রামে। ছোটন মির্ধার ছেলের জগন্নাথের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল টুলু দাসের মেয়ে মিনুর। পাত্রপাত্রী একই গ্রামের বাসিন্দা। লকডাউন চলায় বিয়ের অনুষ্ঠান অবশ্য তাঁরা করতে পারেননি।
লকডাউনের জন্য অনেকেই বিয়ে স্থগিত রেখেছেন তবে জগন্নাথ ও মিনুর বিয়ে হল নির্দিষ্ট দিনেই। তাঁরা বিয়ে করলেন মুখ মাস্কে ঢেকে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দুই পরিবারের সঙ্গে সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন।
দুই পরিবারই গরিব। অতি কষ্টে টাকাপয়সা জোগাড় করে মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন টুলু দাস। এর মাঝেই লকডাউন। তাঁদের আশা ছিল ১ বৈশাখ লকডাউন উঠবে তারপরে ৪ বৈশাখ বিয়ে হবে। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়ে যান দুই পক্ষই। বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস তাঁরা কিনতে পারেননি। তাছাড়া করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সাত জনের বেশি লোক জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাই বিয়ের আনন্দ তাঁদের একেবারেই মাটি হয়ে যায়।
এই অবস্থাতেও অবশ্য বিয়ে পিছিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না কোনও পক্ষই। তাঁরা কথা বলেন জিৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি সব কথা শুনে পঞ্চায়েত সদস্য বলাই বাদ্যকরের সঙ্গে আলোচনা করেন কী ভাবে বিয়ে দেওয়া সম্ভব। শেষ পর্যন্ত তিনি সব নিয়ম মেনে পাঁচ নম্বর কল্যাণগ্রামের কালীমন্দিরে বিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।
প্রধানের অনুমতি পেয়ে কালীমন্দিরে পুরোহিত, দুই পক্ষের অভিভাবক, পঞ্চায়েত প্রধান তাপস চৌধুরী ও পঞ্চায়েত সদস্য বলাই বাদ্যকার-সহ দশ জনের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়েছিল এই বিয়েতে। প্রত্যেকেই মুখে মাস্ক পরেছিলেন ও হাত স্যানিটাইজ করে নেন।
নির্ধারিত দিনে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় গ্রামের বাসিন্দারা পঞ্চায়েতের প্রশংসা করেন।দুই পরিবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিয়ের শেষে উপহার হিসাবে চাল, ডাল, আলু ও তেল দুই পরিবারের হাতে তুলে দেন পঞ্চায়েত প্রধান তাপস চৌধুরী।