নিয়োগে অস্বচ্ছতা, হাইকোর্টের নির্দেশে অনুসন্ধান করবে সিবিআই।

রাজ্যে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগে অস্বচ্ছতা রয়েছে। এই মর্মে দায়ের হওয়া মামলায় অনুসন্ধানের ভার দেওয়া হল সিবিআইকে। আজই এই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অনুসন্ধানের পর ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতেও CBI-কে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, সিবিআই-এর ডিরেক্টর একটি কমিটি গঠন করবেন। DIG পদমর্যাদার অফিসারদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। তার নীচে নয়। আর সেই কমিটির মাথায় থাকবেন জয়েন্ট ডিরেক্টর। এই কমিটি-ই অনুসন্ধান করবে। কোনও কাউকেই অনুসন্ধানের বাইরে রাখা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন বিচারপতি। আদালত মনে করছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন যদি কোনও সুপারিশ করে না-ই থাকে, তাহলে বোর্ড কী ভাবে নিয়োগ করল? এদিকে বোর্ড জানিয়েছে যে, কমিশনের থেকেই সুপারিশ পেয়েছে একটি পেন ড্রাইভে। যদিও কমিশনের পাঠানো আসল সুপারিশের চিঠি বোর্ডের কাছে নেই বলেও আজ হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছে আদালত। একইসঙ্গে আদালতের সাফ প্রশ্ন, এটা কি করে সম্ভব? কাদের নির্দেশে সুপারিশের চিঠি গেল? এরপরই বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেন যে, “স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেক্রেটারি যা করছেন, তা নিশ্চয়ই কারও নির্দেশে। এটা সিবিআইকে দিতে হবে মনে হচ্ছে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনেরালকে ডেকে আনা হোক। অপরাধীরা নানাভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে। গভীর জলের মাছ ধরতে হবে। কারা অপরাধী সেটা জানা দরকার।” প্রসঙ্গত, আজ মামলাকারী আদালতের হাতে ৫০০-র বেশি প্রার্থীর নামের তালিকা তুলে দেন, যাঁদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের সিবিআই-কে দিয়ে অনুসন্ধান করানোর ভাবনার অবশ্য বিরোধিতা করে রাজ্য। রাজ্যের তরফে বলা হয় যে, “আদালত চাইলে ৩ জন বিচারপতির কমিটি করে তদন্ত হোক। পুরোটাই তাদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হোক।” একইসঙ্গে রাজ্যের পুলিস দিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল বা SIT গঠন করে তদন্তের প্রস্তাবও দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। কিন্তু রাজ্যের কোনও ওজর-আপত্তিই ধোপে টেঁকেনি আদালতের কাছে। হাইকোর্ট সাফ জানায়, “চাকরিতে স্বচ্ছতা খুব দরকার। অপরাধীদের কোনও রং হয় না। নানা দলের রঙের নীচে আশ্রয় নেয়। এদের দেখতে চায় আদালত। যাদের জন্য এমনটা হয়েছে, তাঁদের পদ থেকে সরে যেতে হবে, সেটা প্রশাসনিক পদ হলেও। আমি কোনও রাজনৈতিক নেতা বা দলের বিরুদ্ধে নই। আমি মানুষের স্বার্থে যা মনে করব সেটাই করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.