কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং একজন মুসলিম কলেজের শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি মৌখিক বিবাদের বিষয়

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং একজন মুসলিম কলেজের শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি মৌখিক বিবাদের বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে বিজেপির সাংসদের “শিক্ষার স্তর” জানতে চেয়েছে সেই যুবক। বাবুল সুপ্রিয়ও সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন …কি সেই মন্তব্য?

শুক্রবার শিক্ষার্থী মুস্তাফিজুর রহমান বলেছে যে তিনি বিজেপি নেতার কাছ থেকে জনসমক্ষে “নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া” ছাড়া আর কিছুই চান না।

কিন্তু কেন ক্ষমা চাইবেন একজন নেতা?

প্রসঙ্গত গত ২৬ ডিসেম্বর বাবুল সুপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় সিএএ-র আইনজীবির পক্ষে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন এবং যাদবপুরে ২৪ ডিসেম্বর স্বর্ণপদক গ্রহণের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তনে বিতর্কিত আইনটির প্রথম পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন এমন এক মহিলা ছাত্রীর ব্যবহারের সমালোচনা করেছিলেন।

পরদিন রহমান সুপ্রিয়ের ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেন এবং সুপ্রিয় ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

“বাবুল-দা (দাদা) আপনার মতো লোকেরা কতটা শিক্ষিত তা এই বিষয় থেকে অনুমান করা যায় যে আপনার পরামর্শদাতা (রাজ্য সভাপতি) দিলীপ ঘোষ গরুর দুধে সোনার পেয়েছেন,”

সুপ্রিয় উত্তরে বলেন “মুস্তাফিজুর রাহমান আমাকে প্রথমে আপনাকে আপনার দেশে পাঠিয়ে দিতে দিন, তারপরে উত্তর পোস্ট কার্ডে পাঠিয়ে দেব”।

সেই সঙ্গে একজন বুর্জোয়া জীবনধারী সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ মন্ত্রীকে বেনজির ভাবে আক্রমন করছে।

মন্তব্যটি বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছে অবশ্যই। তবে বাবুল সুপ্রিয় ভুল কিছুই বলেন নি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘিরে ধরে যা হয়েছে, সেটা কমিউনিস্ট-নকশালদের স্বভাবোচিত কাজ।

১) একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘেরাও।
২) তাঁকে হেনস্থা করা। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া।
৩) তাঁকে মিডল ফিঙ্গার দেখানো। সমানে অপমান করে যাওয়া।
৪) তাঁর নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি। একজন অন ডিউটি পুলিশ অফিসারের টুপি খুলে নেওয়া।
৫) আরেকজন মহিলা নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলকে ঘিরে ধরে একইরকম বিক্ষোভ দেখানো।
৬) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যেরও কোন কথা না শোনা।
৭) একজন মানুষকে তাঁর কথাটুকু বলতে না দেওয়া।
৮) আগে থেকে নিয়ম মেনে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বুক করা হলে পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠান করতে না দেওয়া।
৯) প্রতিবাদের নামে হুলিগানিজম, গুণ্ডামো, অসভ্যতা।
১০) “যা করেছি বেশ করেছি” মনোভাবে দাম্ভিকভাবে গর্ব করে এগুলো প্রচার করা।

এগুলো সবই কমিউনিস্ট-নকশালসুলভ কাজ। ওরা এরকমই। এবার কথা হল, একটা গণতান্ত্রিক দেশের জুরিসডিকশনে, একটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে এরা এগুলো করতে পারছে কেন? কারণ, ওরা খুব ভাল করে জানে, ওরা যাই করুক না কেন, ওদের কোন শাস্তি হবে না। কেউ ওদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেবে না। উল্টে ওদের বাহবা দিয়ে, ওদের এই বরাহনন্দনগিরি সমর্থন করে অনেক তথাকথিত বিশিষ্ট মানুষ ওদের পাশে থাকবে। তাহলে আর ওরা এরকম করবে না কেন? ওরা গণতন্ত্র মানে না। ভারতের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য ওরা সর্বদা সক্রিয়।

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের দেড়শো বছর উদযাপনের সময় এই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছবি আর বাণী টাঙ্গানোর বিরুদ্ধে ওরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, বিবেকানন্দের নামে কুৎসা লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করেছিল। পরে ওরা ভারতের টুকরো করার সমর্থনে মিছিল করেছিল। সেইসব সময়ে, ওদের কারুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি? হয়নি। ওরা ভারতের মধ্যে একটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিস্ট-নকশাল মুক্তাঞ্চল বানিয়ে রেখেছে। এবং নির্বিঘ্নে সেটা ওদের করতে দেওয়া হয়েছে।

ইউএপিএ অ্যামেন্ড হওয়ার পর কত জন আর্বান নকশালকে এখনো পর্যন্ত অ্যারেস্ট করা হয়েছে? আজকের নকশালদের হুলিগানিজম তো আনপ্ল্যানড নয়। যথেষ্ট পরিকল্পনা করেই সংগঠিতভাবে যা করার করেছে। সেক্ষেত্রে আগে থেকে ইন্টেলের ভিত্তিতে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? এরপরও ওদের কারুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি? নাকি “প্রচুর মেধাবী ছাত্রছাত্রী” বলে, “তারুণ্যের আবেগ”-এর যুক্তি দেখিয়ে সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে?

তিয়েন আনমেনের প্রতিবাদ কীকরে দমন করেছিল, সেটা ওরা খুব ভাল করে জানে। ওরাও সেই পদ্ধতিতেই বিশ্বাস করে। সেই ভাষাতেই কথা বলে। এবার ওদের সাথে সেই পদ্ধতি প্রয়োগ না করে, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার দেখালে, ওরা সেগুলোর সুযোগ নিয়ে অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার হরণ করার কাজই করবে।

দু’মুখো নীতি নিয়ে তো লাভ নেই। কমিউনিস্ট-নকশালদের সায়েস্তা না করে, ওদের সাথে অন্যান্য নাগরিকদের মতো ব্যবহার করলে, ওদের থেকে এরকম ব্যবহারই বারবার প্রাপ্য হবে, যা আজ ওরা একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাথে করেছে। তখন কিন্তু “কেন এরকম করল” বলে কড়ি নিন্দা করে কিছু হবে না। দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষার পর, তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার পর, সে ছোবল মারলেও তাকে কিছু না করে, আরও বেশী করে দুধ-কলা-নিরাপত্তা দিলে, তারপর “কেন ছোবল মারে” বললে সেটা হাস্যকরই শোনায়।

হয় এই কমিউনিস্ট-নকশালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন, এদের কঠোর হাতে দমন করুন, সবরকমভাবে নির্মূল করার জন্য উদ্যোগী হন, নাহলে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সাথে যা হয়েছে, সেরকম ঘটনায় অভ্যস্ত হোন। এর মাঝামাঝি আর কোন রাস্তা নেই।
[03/01, 23:34] Sree.paul4: ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ২৩ শে মার্চ যখন মুসলিম লীগ লাহোর অধিবেশনে পাকিস্তান প্রস্তাব গ্রহণ করে তখন বিষয়টিকে পূর্ন সমর্থন জানায় সি.পি.আই। এই প্রসঙ্গে তারা বলে, ” Hindus and Muslims are two nations. The demand of participation is a greatest democratic and progressive demand.”

১৬.০৮.১৯৪৬ এর ভয়ঙ্কর ডাইরেক্ট একশন ডের গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং এ নরবলি অনুষ্ঠিত ভাল। নারী, পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে হাজারে হাজারে হিন্দুর লাশ কলকাতার রাজপথ রাঙা করল। এই ঘটনার উল্লেখ কিন্তু জ্যোতি বসুর আত্মজীবনীতেও উল্লিখিত আছে। এই ডাইরেক্ট একশন ডে র প্রথম তিনদিন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়।

কিন্তু কি অদ্ভুত ! সোমনাথ লাহিড়ী এই সময় স্বাধীনতা পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখলেন। যেখানে উনি লিখলেন দাঙ্গার জন্য নাকি দায়ী হিন্দুরা! তাকে যখন প্রশ্ন করা হল তখন তিনি বলেন যে , তিনি দলের নির্দেশানুযায়ী এ কাজ করেছেন , অতএব এর দায় সব দলের।

কমরেড গঙ্গাধর সরকার পাকিস্থান প্রস্তাব নামক একটি পুস্তক প্রকাশ করেন। যেখানে তিনি পাকিস্তান প্রস্তাব ও দাবিকে সমর্থন করেন। মুসলিম লীগ নেতা আবুল হাসেম তাঁর বিভাগ পূর্ব বাংলার রাজনীতি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে , কমরেড নিখিল চক্রবর্তী নামক এক কমিউনিস্ট নেতা মুসলিম লীগের পাকিস্তান প্রস্তাবের ম্যানিফেস্ট লিখে দেন।

কমিউনিস্ট নেতা পিসি জোশী বলেন যে , মুসলিম ও পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। পাঞ্জাব ও বাংলা সম্পূর্ণ ভাবে পাকিস্তান কে দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।

এতদ সত্ত্বেও কমিউনিস্টরা কিন্তু কেউ পাকিস্তানে থাকতে পারেন নি। মার খেয়ে এই ভারতে পশ্চিম বঙ্গে আসতে হয়েছিল। পূর্ব বঙ্গে প্রথম অত্যাচারের আঘাত আসে কমিউনিস্টদের উপরে। একে তারা কাফের তায় খোদায় নাই বিশ্বাস, সুতরাং তারা পাপী, পাকি ( পবিত্র) স্তানে থাকার অধিকার নেই তাদের।

এ বিষয় আপনারা খোঁজ করে দেখতে পারেন যে কমিউনিস্ট রা পাকিস্তানে কিভাবে অত্যাচারিত হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রাক্তন সিপি আই এম মন্ত্রী ও বর্তমানে তৃণমূল নেতা রাধিকা রঞ্জন প্রামানিকের একটি কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য , ” আমি আগে যে দল করতাম , সেই দলের পার্টি অফিসে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তির ছবি থাকত। তাঁরা হলেন – মার্ক্স, এঙ্গেল, লেনিন ও স্ট্যালিন। এঁদের মধ্যে প্রথম দুজন একটি অদ্ভুত চারা গাছের আবিষ্কার করেছিলেন। বাকি দুজন তাকে রাশিয়ার মাটিতে পুঁতে একটি মহাবৃক্ষে রূপান্তরিত করেছিলেন। সেই বৃক্ষ বিষ বৃক্ষ। সেই বিষ বৃক্ষের ফল খেয়ে মেরেছে রাশিয়ার মানুষ। পশ্চিম বঙ্গের বুকেও কমিউনিস্টরা সেই বৃক্ষের উৎপাদন করেছেন। তাকে স্বমূলে উৎপাটিত না করতে পারলে আমরা ধনে প্রাণে মারা পরব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.