শিক্ষক দিবস : কীভাবে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মধ্যে

একজন শিক্ষার্থী-শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হতে গেলে উভয় দিক থেকেই সঠিক পরিমাণে প্রচেষ্টা ও সাহায্যের প্রয়োজন। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে, শিক্ষার্থী-শিক্ষকের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়তে শিক্ষক দিবস উদযাপন করুন। সেই উপলক্ষ্যে, শিক্ষার্থী-শিক্ষকের মধ্যে ভালো, মিষ্টি সম্পর্ক গড়ে তুলতে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়ের জন্যই রইল কিছু টিপস-

একজন শিক্ষার্থীর কি করা উচিত

১) শিক্ষকের উপর আস্থা রাখতে হবে : একজন শিক্ষার্থীর উচিত তার শিক্ষককে সঠিকভাবে গ্রহণ করা এবং বিশ্বাস করা, তার শিক্ষকের কথা শোনা। একজন শিক্ষকই পারে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে। তবে কোনওকিছুই একতরফা নয়। কোনও শিক্ষার্থী যদি তার শিক্ষককে বিশ্বাস না করে, আস্থা না রাখে তবে সে তার শিক্ষকের দ্বারা উপকৃত হবে না।

২) শিক্ষককে শ্রদ্ধা করতে হবে : একজন শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে এবং ক্যারিয়ারের লক্ষ্য স্থির করতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে। তাই, এর বিনিময়ে সকল শিক্ষার্থীর উচিত তার শিক্ষককে সম্মান করা।

৩) শিক্ষকের সাহায্যকারী হওয়া উচিত : কোনও শিক্ষক স্কুল / কলেজে নতুন,ফলে তিনি তার শিক্ষার্থীর সমস্ত বিষয় এবং অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন না। এছাড়া, তার নিজস্ব কিছু সমস্যাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে, শিক্ষককে নিয়ে মজা না করে তার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের উচিত শিক্ষককে সাহায্য করা। শিক্ষার্থীরা যদি নতুন শিক্ষককে স্কুল/ কলেজের পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য হতে সাহায্য না করে তবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকের সম্পর্কের গভীরতা পাবে না।

একজন শিক্ষকের কী করা উচিত

১) যোগাযোগের পরিবেশ তৈরি করতে হবে : খুব গম্ভীর, মেজাজী শিক্ষক যদি হয় তাহলে তা কখনোই কোনও শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক সম্পর্কে ভালো প্রভাব পড়বে না। এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ ভালো হয়, কোনও ছাত্র বা ছাত্রী যাতে কিছু বলতে ভয় না পায়, তারা যেন সবকিছু শেয়ার করতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীর কোনও কথা বা প্রশ্ন নিয়ে মজা করা বা তিরস্কার করার পরিবর্তে শিক্ষকদের উচিত সেগুলি নিয়ে সঠিক ব্যাখ্যা করা বা তাদের ভালোভাবে সেটা সম্পর্কে জ্ঞাত করা।

২) শিক্ষার্থীদের সাহায্য করুন তাদের সংশয়গুলি সামনে আনতে : শিক্ষকদের উচিত বিনা দ্বিধায় তার শিক্ষার্থীদের সমস্ত সংশয়গুলি জিজ্ঞাসা করা এবং তা সমাধানের চেষ্টা করা। শিক্ষক যা বোঝান তা তার শিক্ষার্থীরা বুঝতে সক্ষম হচ্ছে কী না তা জানতে শিক্ষকদের উচিত তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করা। এইভাবে, শিক্ষকরা তার প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাথে সঠিক সংযোগ করতে সক্ষম হবেন এবং পাশাপাশি শিক্ষার ধারাটিও উন্নত করতে পারবেন।

৩) প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে আলাদা আলাদা ব্যক্তি হিসেবে দেখা উচিত : প্রত্যেকটা মানুষ একরকম হয় না বা একরকম হতেও পারে না। প্রত্যেকেরই নিজস্ব ব্যক্তিত্ব আছে বা নিজস্বভাবে আলাদা। ঠিক সেরকমই, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। শিক্ষকদের মনে করতে হবে যে সমস্ত শিক্ষার্থী এক নয়। তাদের মধ্যে কিছু ছাত্র-ছাত্রী মেধাবী হবে ও কিছুজন মেধাবী হবে না। সেক্ষেত্রে, প্রতিটি শিক্ষার্থীর একই আচরণ নাও হতে পারে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে শিক্ষকদের কাছে আলাদা কৌশল থাকা দরকার।

শিক্ষার্থী-শিক্ষকের একটি ভাল সম্পর্ক শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনে একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে সাহায্য করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.