অভিষেকের ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি ১২, তৃণমূল ৪

ডায়মন্ড হারবার লোকসভা জিতেছে তৃণমূল। চোদ্দর তুলনায় এ বার ব্যবধানও বাড়িয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবু ডায়মন্ড হারবার নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকতে পারছে না তৃণমূল। যা হিসেব, তাতে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি।

লোকসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে ২৩ মে। তারপর থেকে যত দিন যাচ্ছে, তত পরিষ্কার হচ্ছে বাংলায় কতটা ব্যপ্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। লোকসভার নিরিখে এ রাজ্যেওর ১২৯টি বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। তা গণনার সন্ধে বেলাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যত সময় এগোচ্ছে, বুথ ওয়াড়ি ফলাফলের হিসেব কষে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে শাসক দলের কপালে ভাঁজ পড়ারই কথা।

ভোট বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতেই, যে পরিমাণ ভোট পেয়েছে বিজেপি, তাতে এটা বোঝাই যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম, পঞ্চায়েতের পর পঞ্চায়েতে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। তেমনই বেশ কিছু পুর এলাকাতেও এট ট্রেন্ড বজায় রয়েছে।

ডায়মন্ড হারবার পুরসভার মোট বুথ সংখ্যা ৩৮টি। এর মধ্যে ২৮টি বুথে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পিছনে ফেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ ওয়ার্ডে লিড পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়। অল্প ব্যবধান হলেও এগিয়ে বিজেপি-ই। মোট ভোটের অঙ্কতেও ডায়মন্ড হারবার পুর এলাকায় জোড়াফুলকে টেক্কা দিয়েছে পদ্মফুল। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ১১হাজার ৫৩৬। অন্য দিকে বিজেপির পেয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ টি ভোট। পুর এলাকায় কম বেশি তিন হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।

এই পুর বোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে। বকেয়া রয়েছে নির্বাচন । তবে শাসক দলের নেতারা এই হিসেবে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। পুর এলাকার এক তৃণমূল নেতা বলেন, “লোকসভা ভোট আর পুরসভা ভোট এক নয়। সুতরাং এই ভোটের ফলাফলের প্রতিফলন পুর ভোটে পড়বে না।”

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, আজ থেকে দশ-বারো বছর আগের বাংলার রাজনীতিটা একবার ফ্ল্যাশব্যাকে দেখে নিলেই বোঝা যাবে ট্রেন্ড কেমন করে তৈরি হয়। ২০০৯-এর লোকসভায় বাংলায় ১৯টি আসন জিতেছিল তৃণমূল। সে বারও ফলের বিশ্লেষন করে দেখা গিয়েছিল রাজ্যে প্রায় ১২০টির বেশি বিধানসভা এবং একের পর এক পুরসভায় পিছিয়ে পড়েছে বামেরা। কিন্তু আমল দেয়নি আলিমুদ্দিন। সিপিএম তথা বাম নেতারা বলেছিলেন, লোকসভা আর পুরসভা এক নয়। ২০১০ সালের ভোটে গঙ্গার দু’পারে লাইন দিয়ে পুরসভাগুলিতে কার্যত সাফ হয়ে গিয়েছিল লাল ঝাণ্ডা। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ট্রেন্ড যদি সত্যি বজায় থাকে, তাহলে তৃণমূলকে বড় মূল্য চোকাতে হবে আগামী কয়েকটি ভোটে। ডায়মন্ড হারবার তার একটা নমূনা মাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.