WC Qualifiers: নাটকীয় রাতে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলস্কোরার হয়ে পর্তুগালের ত্রাতা সেই রোনাল্ডো

বিতর্ক, গোল, রেকর্ড ও শিরোনাম যেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে সমার্থক হয়ে গিয়েছে। ৩৬ বছরের রোনাল্ডো যে এখনও যে কোন দলের জন্য অপরিহার্য আরও একবার রিপালবিক অফ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতাপর্বের ম্যাচে তার প্রমাণ মিলল।

বৃহস্পতিবার (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) মধ্যরাতে গোটা বিশ্বের নজর ছিল পর্তুগাল বনাম আয়ারল্যান্ড ম্যাচে, কারণ অবশ্যই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এইদিনই আলি দাইয়ের রেকর্ড ভেঙে একচ্ছত্রভাবে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলস্কোরার হওয়ার হাতছানি ছিল পর্তুগিজ অধিনায়কের কাছে। প্রথমার্ধে ১০ মিনিটের মাথায় পেনাল্টির সুযোগ পায় পর্তুগাল, তখন সকলেই একপ্রকার প্রায় রোনাল্ডোর রেকর্ড গড়ার বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

তবে আয়ারল্যান্ড গোলরক্ষক বাজুনু, কোটি কোটি মানুষের হৃদয় চুরমার করে রুখে দেন রোনাল্ডোর স্পট কিক। তবে বিতর্ক এই পেনাল্টিকে ঘিরেই। অত্যন্ত বিতর্কিত এক পেনাল্টি সিদ্ধান্তে ভিএআর চেকের সময়ই রোনাল্ডো পেনাল্টি স্পটে বল বসিয়ে মারার জন্য প্রস্তুতি নেন। তখনই ডারা ওশে সেই জায়গা থেকে বল সরিয়ে দেন। এরপরেই ক্ষুব্ধ রোনাল্ডোকে তাঁর প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররকে চড় মারতে দেখা যায়। এরপর পর্তুগিজ তারকার লাল কার্ডের দাবি উঠলেও গোটা ঘটনাটির দিকে বিন্দুমাত্র দৃষ্টিপাত করেননি রেফারি। 

তবে পেনাল্টি থেকে তো গোল হয়ই না, বরং প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করে পর্তুগাল। উপরন্তু, দুরন্ত হেডে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে আইরিশদের এগিয়ে দেন জন ইগান। লুক্সেমবার্গের কাছে গত ম্যাচেই লজ্জার হারের পর সম্ভবত এই রাউন্ডের যোগ্যতাপর্বের সবচেয়ে বিস্ময়কর জয় থেকে এক মিনিট ও ইনজুরি টাইমের দূরত্ব ছিল আয়ারল্যান্ডের। তবে দলে রোনাল্ডো থাকলে যে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।

দলের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মুহূর্তেই তো মহাতারকাদের মাহাত্ম্য আরও বেশি করে চোখে পড়ে। ৮৯ মিনিটে গঞ্জালো গুয়েদেশের কাটব্যাকে পেনাল্টি বক্সে স্বভাবচিত পজ, লাফ এবং গোল, মুহূর্তেই আয়ারল্যান্ড হৃদয় ভঙ্গ করে নিজের কেরিয়ারের ১১০তম গোল করেন রোনাল্ডো। আলি দাইয়ের সর্বকালীন গোলের রেকর্ড ভেঙে রচনা করেন ইতিহাস। তবে রোনাল্ডো কবে ড্র করে খুশি হয়েছেন।

ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে ফের একবার উড়ন্ত বাজপাখির মতো ঝাঁপালেন তিনি। পরিমিত গতি, সঠিক দিশা ও অকল্পনীয় পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তের গোলে জয় ছিনিয়ে নিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা। রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১১১। এদিনের সকল শিরোনাম রোনাল্ডোর সর্বোচ্চ গোলস্কোরার নিয়ে লেখা হবে ঠিকই, কিন্তু এই রাত দেখালো কেন রোনাল্ডোরা বিশ্বের সকলের থেকে আলাদা

কিভাবে একজন ৩৬ বছর বয়সী রেকর্ডের চূড়ায় বসেও স্রেফ অদম্য ইচ্ছাশক্তি, হার না মানা মনোভাব ও জয়ের অসম্ভব খিদে মাধ্যমের বারংবার অসম্ভবকে সম্ভব করে। বৃহস্পতিবার রাত যদি কিছু প্রমাণ করে, তা হল এখনও বিশ্ব ফুটবলকে রোনাল্ডোর অনেক কিছু দেওয়া বাকি, আরও অনেক নজির গড়ার লক্ষ্যে এখনও বদ্ধপরিকর পর্তুগালের মাদেইরা থেকে উঠে আসা সাধারণ ঘরের এক অসাধারণ ফুটবল তারকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.