আজি দোল-ফাগুনের দোল লেগেছে
আমের বউলে দোলন-চাঁপায়।
মৌমাছিরা পলাশ ফুলের গেলাস ভরে
যউ পিয়ে যায়।
শ্যামল পাতার কোলে কোলে
আবির-রাঙা কুসুম দোলে,
দোয়েল শ্যামা লহর তোলে
কৃষ্ণচূড়ার ফুলেল শাখায়৷
বন-গোপিনী ফুল ছুঁড়ে
ওই খেলে হোরি দখিন-বায়ে
হলদে পাখি দোদুল দুলে
সোনাল শাখায় আদুল গায়ে।
ভাঁট-ফুলের এ নাট-দেউলে
রঙিন প্রজাপতির দুলে,
মন ছুটে যায় দূর গোকুলে
বৃন্দাবনে প্রেম-যমুনায়৷

বেলুড়ের চন্নকেশব মন্দির গাত্রে সূক্ষ্মভাবে খোদিত নৃত্যবাদনরতা অপূর্ব সুন্দরী মদনিকাগণ মহারাণী শান্তলার স্বর্গীয় সৌন্দর্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হন। মদনিকাদের ভাস্কর্য এবং ভাস্কর্যের সূক্ষ্ম অলঙ্করণ আজও বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। নীচের ছবির মদনিকা হোলি খেলছেন। তাঁর বাম পায়ের নিকটে বসে পিচকারীতে রঙ ভরা হচ্ছে।

এখন অনেক দ্বিচারী ব্যক্তি বলতে চেষ্টা করেন যে কর্ণাটকে হোলি পালন হত না বা স্বাধীনতার পরে হোলি বা দোল উৎসব পালন সূচিত হয়। সেক্ষেত্রে তাঁদের জানিয়ে রাখি যে, কর্ণাটকে সুপ্রাচীন সময় থেকে হোলি পালিত হয়। উত্তরভারতীয়রা হোলি, বঙ্গে দোল যেরূপ পালিত হয় বা হতো সেই রূপ কর্ণাটকে #ওকুলি বা #সেচনাকিরডে পালিত হয়। চালুক্য , হয়সলা সাম্রাজ্যে বসন্তের ফাগপূর্ণিমায় পালিত ওকুলি ছিল রঙের উৎসব। কন্নড় ভাষায় ওকুলির অর্থ হল হলুদ মিশ্রিত জল। সেই হলুদ মিশ্রিত জল দিয়েই ওকুলি বা দোল বা হোলি পালিত হত মহাসমারোহে। আমাদের সুবিশাল ও সুপ্রাচীন ভারতবর্ষ অতুল্য। সনাতনী নানা সংস্কৃতি নানা স্থানে নানা ভাষায়,নামে ও নানাভাবে অবস্থান করছে, পালিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সনাতনী ঐতিহ্য ও ঐক্যসূত্র এক। আমরা সনাতন, আমরা ভারতবাসী।

©দুর্গেশনন্দিনী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.