পর্ব ৩
‘ত্রিগুণা প্রকৃতির পরিণাম এই সংসারে সকলই সুখ, দুঃখ ও বিবাদের আকর। পুরুষ তত্ত্ব নির্লেপ। কিন্তু অবিবেকহেতু প্রকৃতির সঙ্গে আপন তাদাত্ম্য কল্পনা করে তার দুঃখভোগ হয়। এই দুঃখকে পরিহার করার একমাত্র উপায় তার উৎপত্তির মূলটি খুঁজে বার করে তাকে বিনষ্ট করা। যোগশাস্ত্র সেই শিক্ষাই দেয়।’ (পতঞ্জলি যোগদর্শন)
কপিলমুনির সাংখ্যদর্শনের ভিত্তিতেই যোগদর্শন গঠিত এমন অনেকে মনে করেন। যোগের উদ্দেশ্য ঈশ্বরের সঙ্গে একাত্ম হওয়া। তবে এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। মহাদেব পরম ব্রহ্ম স্বরূপ হয়ে যোগধ্যানে নিবিষ্ট থাকতেন। বিষ্ণু অনন্ত সলিলে যোগনিদ্রায় নিবিষ্ট হতেন। যোগধ্যানের মাধ্যমেই প্রথম ব্রহ্মা আদ্যাশক্তি মহামায়ার আবাহন করেন মধু কৈটবকে বধের উদ্দেশ্যে।

Dated to 3rd century BCE
মহর্ষি কপিলের মতে প্রকৃতিতে সৃষ্টির প্রবৃত্তি ও ভোগের উপাদান আছে; প্রকৃতি জড় ও পুরুষ চৈতন্য; এতদুভয়ের সান্নিধ্য হেতু জীব জগতের সৃষ্টি; অদৃষ্ট বশতঃই প্রকৃতি ও পুরুষের সান্নিধ্য হয়। কিন্তু মহর্ষি পতঞ্জলির মত এই যে, প্রকৃতি ও অদৃষ্ট উভয়ই জড়; জড় কখনও জড়কে চালিত করতে পারে না; অতএব অদৃষ্ট প্রকৃতিকে চালিত করতে পারে না; যে পুরুষ অদৃষ্টের পরিচালক তিনিই ঈশ্বর।
বেদ ,উপনিষদ পুরানাদিতে যোগ ও যোগানুষ্ঠান বিধানের উল্লেখ দেখা যায়। প্রাচীন সাহিত্য ও শাস্ত্র গ্রন্থগুলিতে এই দুই সম্প্রদায়কে এক বলেই বর্ণনা করা হয়েছে।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছে-
‘সাংখ্যযোগৌ পৃথগ্ বালাঃ প্রবদন্তি ন পণ্ডিতাঃ।
একমপ্যাস্থিতঃ সম্যগুভয়োর্বিন্দতে ফলম্ ।।’
অজ্ঞ ব্যক্তিগণ সাংখ্য ও যোগকে পরস্পরবিরুদ্ধ ও ভিন্ন-ফল-বিশিষ্ট বলে থাকেন, কিন্তু আত্মজ্ঞানীগণ তা বলেন না। কারণ উভয়ের ফল এক মোক্ষ। সেজন্য একটি সম্যক্ রূপে অনুষ্ঠিত হলে উভয়ের ফল মোক্ষ লাভ হয়।
.
‘যৎ সাংখ্যৈঃ প্রাপ্যতে স্থানং তদযোগৈরপি গম্যতে।
একং সাংখ্যং চ যোগং চ যঃ পশ্যতি স পশ্যতি।।’-
সাংখ্য যার অধিগম্য, যোগও তার অধিগম্য। সাংখ্য ও যোগের ফল একই মোক্ষ বলে উভয়কে যিনি অভিন্ন দেখেন, তিনিই যথার্থদর্শী, সম্যক্ জ্ঞানী।
মোক্ষশাস্ত্রেও বলা হয়-
‘নাস্তি সাংখ্যসমং জ্ঞানং নাস্তি যোগসমং বলম্’।
সাংখ্যতত্ত্বের তুল্য জ্ঞান নেই, যোগের তুল্য বল বা শক্তি নেই।
খৃষ্টপূর্ব ৭ম শতকে শিক্ষাক্ষেত্রে তক্ষশীলা খুব প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। খৃষ্টপূর্ব ৭০০ শতক থেকে ৫০০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত তক্ষশীলার ছিল এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ব্রহ্মদত্ত, কৌটিল্য, পাণিনী, জীবক ও পতঞ্জলি’র মত মহান পণ্ডিতগণ তক্ষশীলায় অধ্যয়ন করতেন। এদের মধ্যে পতঞ্জলি ছিলেন ভারতীয় যোগ দর্শনের সংকলক, মহান দার্শনিক, ব্যাকরণবিদ ও বিজ্ঞানী। যোগ দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক শাস্ত্রগ্রন্থ ‘যোগসূত্র’র সংকলক ছিলেন পতঞ্জলি। মহাভাষ্য (পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী-এর উপর রচিত কাত্যায়নের বৃত্তিকার টীকা) গ্রন্থেরও রচয়িতা। বিজয় নগরের রাজা বীরবাক্কুর প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন এই পতঞ্জলি। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ‘মাধব নিদান’। রোগ নির্ণয়ের জন্য এই গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছে।

যোগ দর্শনে পতঞ্জলির প্রদর্শিত মার্গ ‘পাতঞ্জল দর্শন’ নামে পরিচিত। পতঞ্জলির যোগশাস্ত্রের চারটি পাদ। প্রথম পাদে আলোচিত হয়েছে যোগের লক্ষণ ও সমাধি। দ্বিতীয় পাদে সমাধি লাভের পূর্বে অনুসরণীয় ব্যবহারিক যোগ এবং যম, নিয়ম, আসন ইত্যাদি যোগাঙ্গের কথা আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় পাদে ধারণা, ধ্যান, সমাধি ও এসবের ফল এবং বিভূতি বা ঐশ্বর্য আলোচিত হয়েছে। চতুর্থ পাদে পাঁচ প্রকার সিদ্ধি ও পরা প্রয়োজন কৈবল্যের আলোচনা করা হয়েছে।
সনাতনী দর্শনে যোগের প্রধান শাখাগুলি হল রাজযোগ, কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ও হঠযোগ। যোগ সনাতনী ধর্মের প্রাচীনত্বের সাথে ওতপ্রোত জড়িয়ে আছে যোগ। দেবাদিদেব মহাদেবকে সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী বলা হয়। যদিও মহর্ষি পতঞ্জলি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদর্শনের কাঠামোগত রূপ দেন, তবুও দত্তাত্রেয় ঋষি সেই কর্ম পূর্বেই সম্পাদন করেন। করেন বলেই শৈব নাথদের নিকট দত্তাত্রেয়সংহিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। পতঞ্জলির যোগসূত্রে যে যোগের উল্লেখ আছে, তা সনাতনী দর্শনের ছয়টি প্রধান শাখার অন্যতম (অন্যান্য শাখাগুলি হলো কপিলের সাংখ্য, গৌতমের ন্যায়, কণাদের বৈশেষিক, জৈমিনীর পূর্ব মীমাংসা ও বাদরায়ানের উত্তর মীমাংসা বা বেদান্ত)। যোগ সম্পর্কে উপনিষদ্, ভগবদ্গীতা, হঠযোগ প্রদীপিকা, শিব সংহিতা, বিভিন্ন পুরাণ ও বিভিন্ন তন্ত্রগ্রন্থে আলোচনা করা হয়েছে। যোগ ইতিহাসের প্রাচীনত্ব অন্তত ৫০০০ বছর বা তারও অধিক।

Till the date there is no any referncial oldest Shiva temple , not only Shiva any hindu deity temples are not as old as this gudimallam temple
All most famous ellora – kailasanatha temple , angor wat – Cambodia vishnu temple , or any other temples are later developed in different emperors in their kingdoms at different times.
After Indus valley civilization where historians consider Pasupati as a deity later we find least significance of him in rig Veda simply representing a local deity as Rudra , in yajur Veda this Rudra got played a important role , but we find no construction of temples in Vedic times , all community based rural society initially slowly developed into kingdoms but mostly depending on yagna and yagas as fire alters.
This Gudimallam temple is considered the most incipient temples constructed , historians consider the main sculpture of deity would have been constructed by tribals. However despite of it’s uniqueness this temple had got least significance , importance and concern mostly being unkown to the most. Being in Chittoor district of Andhrapradesh tirupati got glorified leaving such an unique temple that history left to us.
দত্তাত্রেয় সংহিতায় অষ্ট অঙ্গই কথিত হয়েছে। পূর্বেই বলেছি দত্তাত্রেয়কে যোগের ঈশ্বর বলা হয় এবং তিনি ত্রিদেবের অংশ ছিলেন। অর্থাৎ পতঞ্জলেরও বহু বহু পূর্বে সেই বেদের মহর্ষিদের যুগ হতে যোগ দর্শন এবং তার ব্যবহারিক প্রয়োগ ছিল। উক্ত সংহিতায় বলা হয়েছে –
যমশ্চ নিয়মশ্চৈব আসনঞ্চ ততঃ পরম্।
প্রাণায়ামশ্চতুর্থঃ স্যাত , প্রত্যাহারশ্চ পঞ্চমঃ।।
ষষ্ঠী তু ধারণা প্রোক্তা ধ্যানং সপ্তমমূচ্যতে।
সমধিরষ্টমঃ প্রোক্তঃ সর্বপুণ্যফলপ্রদঃ।।
দত্তাত্রেয় সংহিতায় বলা হয়েছে – মাতৃকা ন্যাসাদি পূর্বক কেবল মন্ত্র – জপ দ্বারা যে যোগ কৃত হয় তাকে মন্ত্রযোগ বলে। বলা হয়েছে –
আসনং প্রাণসংরোধঃ প্রত্যাহারশ্চ ধারণা।
ধ্যানং সমাধিরেতানি যোগঙ্গানি বদন্তি ষট্।।
আসন, প্রাণায়ম্, প্রত্যাহার , ধারণা, ধ্যান এবং সমাধি – এই ছয়টি যোগের অঙ্গ বলে উল্লিখিত হয়।
সেখানে বলা হয়েছে –
শরীরলঘুতা দীপ্তিতর্জঠরাগ্নিবিবর্ধনম্।
কৃশতঞ্চ শরীরস্য তস্য জায়তে নিশ্চিতম্।।
দত্তাত্রেয় সংহিতায় বলা হয়েছে যোগের নানাভাব নানা ভঙ্গি –
অন্তঃকপালবিবরে জিহ্বাং ব্যাবৃত্ত বন্ধয়েত্।
ভ্রূমধ্যে দৃষ্টিরপ্যেষা মুদ্রা ভবতি খেচরী।।

তো, বলা হয় শেষনাগ পতঞ্জলি রূপে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মহাদেবের সাধনা করে আনন্দ শিবনৃত্য দেখার সৌভাগ্য লাভ করেন এবং স্বয়ং দেবাদিদেব তাঁকে এই যোগ শিক্ষা ও জ্ঞান দান করেন। কারণ তিনিই আদি যোগী। তাই যোগ অতি প্রাচীন পদ্ধতি। পতঞ্জলির সময়কাল থেকে সনাতনী ধর্মের মধ্যে যোগ দর্শনের নানা উপায় ও পন্থা গৃহীত হতে থাকে। যেদিন কেবল পতঞ্জলি নিয়ে আলোচনা করব সেদিন এসব বলব।
যোগের লক্ষ্য মানবাত্মার সঙ্গতি হলেও হলেও এটি একটি দেহ নির্ভর পদ্ধতি। এই সাধনাতে একটি বৈজ্ঞানিক ধারা সুপ্রাচীন কাল থেকে প্রচলিত আছে। পরে তুকতাক, এসব নিম্ন মানের সাধন ক্রিয়া যুক্ত হয়ে বিষয়টিকে অনেকেই বিষাক্ত করে তুলেছিল। বিশেষ করে মধ্যযুগীয় সময়ে। সুতরাং , শৈব মার্গীয় নাথগণ স্বাভাবিক ভাবেই যোগী হবেন , এইটিই কাম্য। নাথপন্থিদের বিশ্বাস ‘‘ মহাপ্রলয়ের শেষে একমাত্র ‘অলেখ নিরঞ্জন’ই অবশিষ্ট থাকেন এবং সিদ্ধ নাথগুরুগণ নিরঞ্জনের স্বরূপ বলিয়া কথিত হন’।
আগম সংহিতা, বৃদ্ধশাতাতপ সংহিতা, মহাবিরাট তন্ত্র, পরাশর সংহিতা, তন্ত্রালোক ইত্যাদি গ্রন্থে শৈব নাথ মার্গের সম্পর্কে বিবিধ উল্লেখ আছে। সুতরাং, একসময় শৈব নাথ মার্গ অখণ্ডভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্গ হয়ে উঠেছিল। মহাদেব আদিনাথ হলেও , গোরক্ষনাথই প্রধান আচার্য ছিলেন। তাই এনাদের বহুসময় গোরক্ষপন্থীও বলা হয়। গোরক্ষনাথ এমনভাবেই সিদ্ধিলাভ করেন যে তাঁকে নিয়ে নানা ঘটনাদি লৌকিক ,অতি লৌকিকভাবে বিস্তার লাভ করেন। এসবের মধ্যে অন্যতম হল গোর্খবিজয় বা গোরখবিজয় বা গোরক্ষবিজয়।

পূর্বেই বলেছি যে গোরক্ষনাথ একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তি ছিলেন। গ্রিয়ার্সন তাঁকে অষ্টম শতকের লোক বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তাঁকে আবর্তন করে যে সব সাহিত্যাদি রচনা হয়েছে সেগুলি ৮ম থেকে ১৬ শতক পর্যন্ত বিস্তারিত ছিল। জীবদেহে বর্তমান ছাড়াও সাধক বিশ্বাস করেন আচার্যের সূক্ষ্মদেহ বিরাজের কথা। বঙ্গে ” মীনচেতন” , ” গোরক্ষ বিজয়” এবং ” গোর্খবিজয় ” তিনটি গ্রন্থ প্রাপ্ত হয়েছে।
কি ছিল সেই গোরখ্ বিজয় কাহিনী ? কেন সেই কাহিনীর মাহাত্ম্য এত? কেন বলা হয় ” গোর্খ হেন সিদ্ধা নাই জগত ভিতর”?
সে অনেক দিন আগের কথা। সে সময় কদলী নামক এক রাজ্য ছিল। কদলী রাজ্য কোথায় ছিল ? কদলী শব্দের অর্থ কলা। কলা মানে শিক্ষা বা জ্ঞান সংক্রান্ত কলা ব্যতীতও এই জগৎ সংসারে আরো অনেক ছলাকলা আছে। ও সেই কদলী ছিল কিম্পুরুষ অঞ্চল। শাস্ত্রে বলে উমা মহেশ্বরের একান্ত সময় অতিবাহিত করার স্থানের নাম ছিল কুমারবন। অকস্মাৎ সেখানে রাজা ইল শিকারে এলে তিনি এবং সকল পুং প্রাণীর স্ত্রীত্ব প্রাপ্তি ঘটেছিল। এরপর ইল বহু অনুনয় বিনয় করলে দেবী আদ্যাশক্তি তাঁকে একমাস স্ত্রী এবং একমাস পুরুষ থাকার আশির্বাদ দেন। এই রাজা ইলের এই অবস্থাকে কিম্পুরুষত্ব বলা হয় এবং তিনি যেস্থানে বাস করতেন বা তাঁর রাজ্য কিম্পুরুষ বর্ষ নামে সুপরিচিত হয়।

এই কিম্পুরুষ বর্ষ হেমকূট পাহাড়ে বা সুমেরু পর্বতের নিকটে অবস্থান করত। তবে বতর্মান পন্ডিতদের মতে বর্তমান নেপাল ই হল সেই কিম্পুরুষ দেশ। মহাভারতের বনপর্বেও আমরা ভীমকে কদলীখণ্ডে প্রবেশ করতে দেখি। সেটি ছিল গন্ধমাদন পর্বতের সানুদেশে বহু যোজন বিস্তৃত একটি দেশ। সেখানের অধিবাসিনী ছিলেন কদলী নারীগণ। রামায়ণেও প্রমীলা রাজ্যকে নারীদের দেশ বলা হয়েছে। নলিনীকান্ত ভট্টশালী মনে করেন নেপাল হয়ে কামরূপ- মণিপুর- ব্রহ্মদেশ অবধি কদলীর বিস্তার ছিল।
এই কদলী রাজ্য ছিল সম্পদশালী এবং সিংহাসনে দুই ভোগীনি রাজত্ব করতেন। সেখানে মন্ত্রী , পরিষদ সকলেই ছিলেন নারী। এখানে অধিবাসীরাও কদলী নামে পরিচিত ছিল।তো , যোগী যিনি তাঁকে ভিক্ষা করে খেতে হবে। মাধুকরী তার বৃত্তি। তাঁর যোগ সাধনার জন্য দরকার শান্তির পরিবেশ। হঠপ্রদীপিকায় বলা হয়েছে –
সুরাজ্যে ধার্মিকে দেশে সুভিক্ষে নিরুপদ্রবে।
একান্তমাঠকামধ্যে স্থাতক্যং হঠযোগিনাম্।।
অর্থাৎ , যেখানে বহু সংখ্যক ধার্মিক লোকের বাস, ভিক্ষা পাওয়া যাবে, উপদ্রব শূন্য , সেখানেই একজন হঠযোগীর বাস করা উচিত। সুতরাং , এসব দিক থেকে কদলী রাজ্য ছিল আদর্শ রাজ্য। গোরক্ষবিজয়ে বলা হয়েছে –
এহি রাজ্য বড় হএ ভালা।
চারি কড়া কড়ি বিকাএ চন্দনের তোলা।
লোকের পিধন পাটের পাছড়া।
প্রতি ঘর চালে দেখে সোনার কোমড়া।
কার পথরি পানি কেহ নাহি যাএ।
মণিমাণিক্য তারা রৌদ্রেতে সুখাএ।
এছাড়া
স্থানে স্থানে দেখে সব অমরানগর।
সকল নগরে দেখে উচ্চ উচ্চ ঘর।
সুবর্ণের ঘর সব পতাকা রচিত।
সকল দেশের লোক রতনে ভূষিত।
রাজ্যের সকল দেখে তার ভাল রঙ্গ!
প্রতি ঘর দ্বারে দেশে হিরণ্যের টঙ্গ।।
ধন্য ধন্য রাজনগর করিয়া বাখানি।
সুবর্ণের কলসে সর্ব্বলোকে খায় পানি।।

গোরক্ষনাথের গুরু ছিলেন মৎস্যেন্দ্রনাথ। মৎস্যেন্দ্রনাথ, ছিলেন একজন অতি উচ্চমার্গের যোগী এবং অতিন্দ্রীয়বাদী, তিনি অত্যন্ত নির্জনে জীবনযাপন করতেন, লোকসমাজ থেকে দূরে, শুধু তাঁর গুটিকয়েক অগ্নিসম শিষ্য ছাড়া, যাদের মধ্যে গোরক্ষনাথ ছিলেন অন্যতম।
ক্রমশঃ
©দুর্গেশনন্দিনী
তথ্যঋণ স্বীকার : ১. নাথ সম্প্রদায়ের ইতিহাস
২. উত্তরবঙ্গে গোরক্ষনাথের গান
৩. শ্রী শিবগোপাল দেবশর্মা