ভারতের আত্মনির্ভরতায় উপকৃত হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব : প্রধানমন্ত্রী

ভারতের আত্মনির্ভরতায় উপকৃত হয়েছে সমগ্র বিশ্ব। করোনাকালে তা প্রমাণিতও হয়েছে। মানবতাকে মহামারীর সঙ্কট থেকে বাঁচাতে, ভ্যাকসিন তৈরিতে ভারতের আত্মনির্ভরতায় সমগ্র বিশ্ব লাভবান হয়েছে। শুক্রবার ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লি থেকে এদিন সকালেই আহমেদাবাদের সবরমতী আশ্রমে পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী, সবরমতী আশ্রমে পৌঁছনোর পর মহাত্মা গান্ধীর মূর্তিতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সবরমতী আশ্রমের হৃদয় কুঞ্জে গান্ধীজীর মূর্তিতে মাল্যদান করেন প্রধানমন্ত্রী। ভিজিটরস বুকেও সই করেন মোদী। এদিন সকালেই আহমেদাবাদের অভয় ঘাটের কাছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ডান্ডি অভিযানের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি স্বাধীনতার ৭৫ তম বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ ওয়েবসাইটের শুভসূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, “স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের আজ প্রথম দিন। ২০২২ সালের ১৫ আগস্টের ৭৫ সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে এই মহোৎসব। এই মহোৎসব চলবে ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৭৫-এ ধারণা, ৭৫-এ অর্জন, ৭৫-এ ক্রিয়া ও সমাধান-এই পাঁচটি স্তম্ভ দেশকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে। স্বাধীন ভারতের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পেরে আমরা সত্যি ভাগ্যবান।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন ব্রিটিশ শাসনের কথা ভাবি, যখন কোটি কোটি মানুষ স্বাধীনতার অপেক্ষায় ছিলেন, এই ভাবনা স্বাধীনতার ৭৫ তম বছর উদযাপনকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। এই শুভ উপলক্ষ্যে বাপুকে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য। কোনও দেশের ভবিষ্যত তখনই উজ্জ্বল হয়, যখন অতীতের অভিজ্ঞতা এবং ঐতিহ্য নিয়ে গর্বের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ভারতের কাছে গর্ব করার জন্য প্রচুর বিষয় রয়েছে, সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, চেতনাময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে।” মোদী বলেন, “আমরা এখনও বলে থাকি দেশের লবণ খেয়েছি। লবণ খুব দামি এজন্য আমরা এমনটা বলি না, আসলে লবণ আমাদের মধ্যে শ্রম ও সাম্যের প্রতীক। পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ, প্রতিটি অঞ্চলে স্বাধীনতা আন্দোলনের এই শিখাকে অবিচ্ছিন্নভাবে জাগ্রত করার কাজটি আমাদের সাধু-মহন্ত, আচার্যরা করেছিলেন। স্বামীজী কৃষ্ণ বর্মা স্বাধীনতার জন্য সংঘর্ষ করেছিলেন, ভক্তি আন্দোলনই দেশব্যাপী স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠিকা তৈরি করেছিল।”প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “জালিয়ানওয়ালাবাগের স্মৃতিসৌধ হোক অথবা পাইকা আন্দোলনের স্মরণে স্মৃতিসৌধ হোক, সমস্ত কাজ হয়েছে। লোকমান্য তিলকের পূর্ণ স্বরাজ, আজাদ হিন্দ ফৌজের দিল্লি চলো আহ্বান, ভারত ছাড়ো আন্দোলন দেশ কখনও ভুলতে পারবে না। মঙ্গল পান্ডে, তাতিয়া টোপি, রানী লক্ষ্মীবাঈ, চন্দ্রশেখর আজাদ, ভগৎ সিং, পণ্ডিত নেহেরু, সর্দার প্যাটেল, আম্বেদকরের প্রত্যেকের দ্বারা আমরা অনুপ্রাণিত।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে ভারতের প্রাপ্তি শুধুমাত্র নিজস্ব নয়, বরং সমগ্র বিশ্বকে আলোকিত করার প্রচেষ্টা, সমগ্র মানবতার প্রত্যাশা পুনরুজ্জীবিত করার। ভারতের আত্মনির্ভরতা থেকে আমাদের বিকাশ যাত্রা সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন যাত্রাকে গতি দিতে চলেছে। করোনাকালে তা প্রমাণিতও হয়েছে। মানবতাকে মহামারীর সঙ্কট থেকে বাঁচাতে, ভ্যাকসিন তৈরিতে ভারতের আত্মনির্ভরতায় সমগ্র বিশ্ব লাভবান হয়েছে।” অনুষ্ঠান শেষে আহমেদাবাদ থেকে ডান্ডি পর্যন্ত ‘পদযাত্রা’-র সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.