দখলদারি মনোভাবের জবাব দিতে জানে ভারত, কড়া বার্তা মোদীর

আটবারের বৈঠকেও কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। ভারত চিন সম্পর্কের অচলাবস্থা কাটেনি। মে মাস থেকে যে টানাপোড়েনের শুরু, নভেম্বরেও তার হিসেব শেষ হয়নি। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই ইস্যুতে সরব হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তান ও চিনের উপস্থিতিতেই সীমান্তের উত্তাপ নিয়ে মুখ খুললেন মোদী।

এদিন সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে মোদী বলেন দখলদারি মনোভাবের জেরে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি করার প্রবণতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভারতকে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে ভারত সব রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম।

দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কোনও রকম আপোষ করা হবে না জানিয়ে এদিন মোদী বলেন ভারত বন্ধুত্বের সম্পর্কে বিশ্বাসী। বিশ্ব জুড়ে ভাতৃত্ববোধের বার্তা দেয় ভারত। কিন্তু সীমান্তের অশান্তির জবাবও দিতে পারে এই দেশ, সেটা মাথায় রাখা উচিত সেই সব দেশের, যারা অশান্তি বাঁধাতে চায়। অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব ও অন্তবর্তী স্বাধীনতার সম্মান সব দেশের করতে শেখা উচিত।

এর আগে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদী এসসিও সামিটে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। ভার্চুয়ালি এই বৈঠক হবে। বৈঠকের পৌরহিত্য করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ৮ সদস্য দেশের উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। যার মোট জনসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ ও গ্লোবাল জিডিপির ২০ শতাংশ। এসসিও সদস্যদেশগুলি হল ভারত, রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান।

এসসিও সামিট এমন সময়ে আয়োজন করা হয়েছে, যখন ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা তুঙ্গে। ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে লাদাখ সীমান্তে অচলাবস্থা রয়েছে। আট দফার বৈঠকের পরেও ভারত ও চিন টানাপোড়েন কমেনি। তবে শুধু এসসিও বৈঠক নয়, নভেম্বরের ১৭ তারিখ হতে চলা ব্রিকস সামিটেও যোগ দেবে ভারত-চিন। ২১ ও ২২শে নভেম্বর জি২০ সামিটেও অংশ নেবে এই দুটি দেশ।

ব্রিকস ও এসসিও বৈঠকের নেতৃত্ব দিতে চলেছে রাশিয়া। এই দুই সম্মেলনের আয়োজকও রাশিয়া। অন্যদিকে জি২০ সামিট আয়োজন করছে সৌদি আরব। এই প্রথম এত বড় সামিটগুলি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজন করা হচ্ছে। জুন মাসের ১৫ তারিখে গালওয়ান সংঘর্ষের পর মোদী-জিনপিং বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে দুই দেশ।

এই বৈঠকগুলিতে সদস্য দেশগুলির মধ্যে অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ও ক্রস বর্ডার টেররিজম নিয়ে কথা হতে পারে। ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সমস্যার প্রসঙ্গও উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে এই ধরণের বৈঠকের সাইড লাইন বৈঠকে ভারত চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এবার ভার্চুয়াল বৈঠকের কারণে সাইডলাইন বৈঠক সম্ভব নয়। তাই সরাসরি এই বৈঠকের মূল আলোচনার অংশেই ভারত চিন সীমান্ত সমস্যার কথা উঠে আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

নভেম্বরকে এমনিতেই সম্মেলনের মাস হিসেবে ধরা হয়। এই বছর নভেম্বর মাসে এসসিও, জি২০ ও ব্রিকস ছাড়াও রয়েছে আশিয়ান সামিট। আশিয়ান ভার্চুয়াল সম্মেলন হতে চলেছে ১৩ থেকে ১৫ই নভেম্বর। অন্যদিকে নভেম্বরের ৩০ তারিখ এসসিও-র সদস্য দেশগুলোর প্রধানদের আলোচনা হওয়ার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.