ঝড়ে কাক মরে, ফকিরের ক্যারামতি বাড়ে…… সেই কবে কে কোথায় বলে গিয়েছিলেন ।
আজও তা বাস্তব । কেন বলছি ?
শুনুন তাহলে ।
২৬ মে ইয়াস আছড়ে পড়েছিল বাংলায় । কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফরে শুনেছিলাম রাজ্যের ১৫ টি জেলা ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা । মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে যা বলেছিলেন সেটাই বললাম ।
বাস্তবে কি হয়েছে এবার শুনুন ।
জেলাশাসকরা নবান্নে যে রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে ১৪টি নয় আদতে ৮ টি জেলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । তাহলে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ১৪ সংখ্যাটা বললেন কেন ? অর্থ দফতরের এক আধিকারিক বললেন – এটাই হয় । এটাই এ রাজ্যের নিয়ম । দিল্লিকে বললেই বাড়িয়ে বল । রাজ্যের অভ্যন্তরে বেরিয়ে আসে আসলটা । সেটাই হয়েছে । নতুন কিছু নয় ।
গোলমালের এখানেই শেষ নয় । ইয়াসের মাহাত্ম্য অনেক । এ জাতীয় ঝড় উপকুলকেই বিধ্বস্ত করার কথা । পূর্ব মেদনিপুর জেলা সমুদ্রের উপকূলে অবস্থিত । সেখানে ২৫ টি ব্লকের মধ্যে ১৩ টি মাত্র ক্ষতিগ্রস্থ হল । আর সেই জেলা টপকে পশ্চিম মেদনিপুর যেতে হয় । আর সেই পশ্চিম মেদনিপুরের ২১ টি ব্লকের ৫৫৯৩ টি মৌজাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ই ইয়াসের ঝড়ে । অর্থাৎ সব কটি ব্লকের সব মৌজাই ক্ষতিগ্রস্থ ।
কিছু বুঝলেন ? শুধু এতেই শেষ নয় । আম্ফানের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ তালিকাটাও একই ছিল । ২১ টি ব্লকের ৫৫৯৩ টি মৌজাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল সেবারও । একটিও কম বেশী নয় ।
জানতে চেয়েছিলাম কারণ বা রহস্যটা কি ? অর্থ দফতরের ঐ আধিকারিকের সরল উত্তর – কিছুই না কপি পেস্ট ফর্মুলা আর কি ।
মজা আরও আছে । ইয়াসের এফেক্ট পশ্চিম মেদনীপুরের শালবনী, গড়বেতা, গোয়ালতোড়ে পড়েছে । কিন্তু কোন এক অলৌকিক কারণে একদম লাগোয়া ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর, লালগড়, ধরমপুর, রামগড়ে তা পৌঁছতেই পারেনি । কোন এক বিশেষ ক্ষমতাবলে তা আটকেই গেছে । ক্ষতি হয়নি একটি চাষেরও ।
অর্থাৎ ইয়াস চলে গেছে কাজ সেরে । কিন্তু ফকিরের ক্যারমতি বেড়ে গেছে নবান্নের অর্থ দফতরে । নির্দেশমত । নিয়ম মাফিক ।
এগিয়ে বাংলা বলা হয় কি এমনি এমনি !!
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)