এই প্রথম নিউ জার্সিতে রথযাত্রা পালন প্রবাসী বাঙ্গালীদের

১৬ ফিট দৈর্ঘ্যের মেহগনি কাঠের তৈরি রথ নিউ জার্সির (New Jersy) মূল আকর্ষণ। ওজন প্রায় ৫০০কেজি। বিদেশের মাটিতে হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কোনও উত্‍সব মেনে চলা সম্ভবপর নয়।তাই শনি ও রবিবার হল যে কোনও ফেস্টিভ্যালের আদর্শ সময়। দুর্গাপুজো, সরস্বতী, লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন যেমন হয়ে থাকে, তেমনি প্রবাসেও রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে (Ratah Yatra 2022)। তাই কলকাতার (Kolkata) শিল্পীর হাত ধরেই রথযাত্রার আসর বসিয়েছেন নিউ জার্সির প্রবাসী বাঙ্গালীরা।

রথটি পাঁচটি অংশে ভাগ করে বিমানপথেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কলকাতার শিল্পী শিবশঙ্কর দাসের তৈরি হয় এই বিশালাকার সুন্দর রথটি। আমেরিকার হিন্দু মন্দির আনন্দ মন্দিরের আয়োজকরাই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। রথের দিন উত্‍সব পালন করা না হলেও উল্টোরথের দিন ছিল শনিবার। তাই সপ্তাহেন্তে জমিয়ে রথ উত্‍সবে মেতেছেন মার্কিন মুলুকের বাঙ্গালীরা।

আনন্দ মন্দিরের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, রথ উত্‍সব বললেই তো আর হল না। রথের ডিজাইন করা, কীভাবে রথ এখানে আনানো হবে, কেমন দেখতে হবে সবটাই ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। শিল্পী শিবশঙ্কর দাস পুরো ব্যাপারটাই সামলেছেন। জনপ্রিয় থিম আর্টিস্ট শিবশঙ্কর দাস। রথের ডিজাইন তিনিই করেছেন। বাংলার লোকশিল্পেকে তুলে ধরেছেন রথের মধ্যে। বাংলার বিখ্যাত কাঠের পুতুল নির্মাণকারী সূত্রধরের কারুকাজও এখানে জায়গা করে নিয়েছে। পৌরাণিক বিভিন্ন কাহিনি ও লোকশিল্পের মেলবন্ধন ফুটে উঠেছে এই রথে। শুধু তাই নয়, রথের গায়ে রঙবেরঙের উজ্জ্বল রঙ ও বাঙ্গালী ছোঁয়া পরিপূর্ণতা পেয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের নায়া-র মত মাটির শিল্পকেও ওই রথে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে ওই রথ আর শুধু রথ নয়, গোটা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রথের সামনের ঘোড়াদুটিকে ফাইবার দিয়ে বানানো হয়েছে। রথটি বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষটাকার মত। প্রায় ৬ মাস ধরে রথ তৈরি করেছেন শিল্পী শিবশঙ্কর। গড়িয়া স্টেশন রোজের কাছে শিবশঙ্কর দাসের ওয়ার্কশপেই তৈরি হয়েছে এই অসাধারণ রথটি। গত ২২ জুন রথের পাঁচটি অংশ নিয়ে নিউ জার্সি পৌঁছেছেন খোদ শিল্পী। সেখানে গিয়ে রথে সাজিয়ে, ফিনিশিং টাচ দিয়ে তবেই দেশে ফিরেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.