লাল কেল্লা থেকে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা মোদীর

গত ডিসেম্বরে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যের মসনদ চলে যাওয়ার পরও দমে যায়নি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা সেই সময় থেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, “উনিশের ১৫ অগস্ট লাল কেল্লার মঞ্চে দাঁড়িয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীই।” তাই হল। দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের পর প্রথম স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন একাধিক পরিকল্পনার কথা-

১. ‘জল জীবন মিশন‘ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃষ্টির পরিমাণ কম হওয়ায় জল সঙ্কট ভয়াবহ আকার নিয়েছিল পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে। চেন্নাইয়ের তৃষ্ণা মেটাতে ৫০ লক্ষ লিটার জল ভর্তি ট্রেন পৌঁছেছে সেখানে। কিন্তু আগামী দিনে আর যাতে দেশের মানুষকে সেই সঙ্কটে না পড়তে হয়, সেটাকেই নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।

২. পরিকাঠামো উন্নয়নই যে তাঁর দ্বিতীয় সরকারের পাখির চোখ, তাও স্পষ্ট করেন মোদী। ঘোষণা করেন, একশো লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হবে পরিকাঠামো উন্নয়নের খাতে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবহণ- সহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলির ভিতকে মজবুত করাই যে তাঁর লক্ষ্য, তা-ও বুঝিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ পরিকাঠামো উন্নয়ন না হলে, বিনিয়োগ টানার ব্যাপারটিও ধাক্কা খাবে।

৩. দূষণ ঠেকাতেও তাঁর পরিকল্পনার কথা জানান মোদী। এক বার ব্যবহার করা প্লাস্টিক আর যাতে ব্যবহার না হয় তার জন্য কড়া হবে কেন্দ্র। প্রথমবার সরকারে এসে গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বাজেটে তার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল বিপুল পরিমাণ টাকা। নির্মল গঙ্গা প্রকল্প দেশের বহু জায়গাতেই কার্যকর হয়েছে। সম্প্রতি ডিসকভারি চ্যানেলের অনুষ্ঠানেও দূষণ নিয়ে উদ্বেগের কথা শোনা গিয়েছে মোদীর গলায়। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য এই কাজে আরও যত্নশীল হতে হবে তাও জানান তিনি।

৪. লাল কেল্লার মঞ্চ থেকে মোদী বলেন, “ইজ অব লিভিং চাই। ইজ অব ডুইং বিজনেস এ গোটা পৃথিবীর প্রথম পঞ্চাশের মধ্যে পৌঁছতে হবে। ইজ অব লিভিং আমার আসল স্বপ্ন। সাধারণ মানুষকে যেন প্রতিদিনের জীবনে সরকারি কাজ কর্ম নিয়ে ঝঞ্ঝাট না থাকে।” সরকারি দফতরের কাজের জটিলতা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে তা বুঝেই এই পদক্ষেপের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গোটা প্রক্রিয়াটাকে আরও সহজ-সরল করে দেওয়াই লক্ষ্য।

৫. ভারতের তিন সেনাবাহিনীকে এক ছাতার তলায় আনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, এ ব্যাপারে ভাবনার ঐক্য দরকার। টুকরো টুকরো করে ভাবলে চলবে না। তাঁর কথায়, “চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ নিয়োগের কথা ভেবেছি। আজ তা ঘোষণা করছি।” তিন বাহিনীর মধ্যে.সমন্বয় করাই হবে একমাত্র কাজ।

৬. দেশের প্রতিটি জেলায় এক্সপোর্ট হাব তৈরির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। কোথাও শাড়ি, কোথাও মিষ্টি, কোথাও অন্য শিল্প কর্মের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা গুলির পরিচিতি রয়েছে। সেগুলির যথাযথ মার্কেটিং-এরও যে অভাব রয়েছে, তাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই অনন্য দিকগুলিকেই দুনিয়ার সামনে তুলে ধরতে চায় সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.