দিল্লিতে দুষ্কৃতীদের হাতে মরার সময় কারও সাহায্য পায়নি নির্ভয়া। এবার সেই নির্ভয়া ফান্ড থেকে অর্থ নিয়ে বিপন্ন মানুষের জন্য চালু হল কমন হেল্পলাইন। আগে জরুরি প্রয়োজনে পুলিশকে ডায়াল করতে হত ১০০ নম্বরে। দমকলের নম্বর ছিল ১০১। মহিলারা বিপদে পড়লে ফোন করতে হত ১০৯০ নম্বরে। এবার প্রতিটি ক্ষেত্রে ১১২ নম্বরে ফোন করলেই চলবে। দেশের ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ১১২ নম্বরটি চালু করেছে। যে কোনও বিপদে ওই নম্বরে ডায়াল করা যাবে। আমেরিকাতেও এমন একটি এমার্জেন্সি নম্বর আছে। তা হল ৯১১।

যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ওই নম্বর চালু হয়েছে, তার মধ্যে আছে হিমাচল প্রদেশে, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, গুজরাত, পুদুচেরি, লক্ষদ্বীপ, আন্দামান এবং নিকোবর, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন ও দিউ, জম্মু-কাশ্মীর ও নাগাল্যান্ড।

১১২ হল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এমার্জেন্সি নাম্বার। ১১২ বলতে সব রকমের আপৎকালীন অবস্থা বোঝায়। মোবাইল ফোনে ইতিমধ্যেই প্যানিক বাটন রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তাতে চাপ দিলে আপনা থেকেই ১১২ নম্বরে ডায়াল হয়ে যাবে। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশসিত অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে এমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টার। ১১২ নম্বরে ডায়াল করে সেই সেন্টারে সিগন্যাল পাঠানো যেতে পারে। ফোনে ভয়েস কলও করা যেতে পারে। ওই নম্বরের মাধ্যমে এমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেমে ই-মেলও করা যেতে পারে। বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি কোথায় আছে, তা জানা যাবে জিপিএসের মাধমে।

১১২ নামে একটি মোবাইল অ্যাপও চালু হচ্ছে। তার সাহায্যে বিপন্ন মহিলারা অনেক দূরে খবর পাঠাতে পারবেন। কেউ বিপন্ন মানুষকে সাহায্য করতে চাইলে রাজ্য পুলিশে নিজের নাম রেজিস্ট্রি করাতে পারবেন।

এমার্জেন্সি সার্ভিসের প্রয়োজন হলে কোনও ব্যক্তি স্মার্টফোনে ১১২ ডায়াল করতে পারবেন। অথবা চাপ দিতে পারবেন পাওয়ার বাটনে। তাতেই এমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টারে বার্তা পৌঁছে যাবে। স্মার্টফোন না থাকলে সাধারণ ফোনে ৫ ও ৯ নম্বর বাটনে কিছুক্ষণ চাপ দিলেই এমার্জেন্সি নম্বরে ফোন যাবে।

এমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেম তৈরির জন্য ৩২১ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে নির্ভয়া ফান্ড থেকে ইতিমধ্যে ২৭৮ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে।

২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়ার মৃত্যু পরে মহিলাদের সুরক্ষার জন্য ওই তহবিল গঠিত হয়। তার টাকা কোন কোন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে, তা স্থির করে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.