প্যাঙ্গংয়ে ভারত-চিন সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ, আগামীকাল ফের বৈঠকে বসবে দু’দেশ

প্রতিশ্রুতি মতো আগে থেকেই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছ থেকে সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করেছিল চিন। ভারতও সেনা সরাতে শুরু করে। লাদাখে প্যাঙ্গং হ্রদের দুই তীর থেকেই সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরও কিছু জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনার জন্য আগামীকাল ফের বৈঠকে বসবে দু’দেশ।

সেনা সূত্রে খবর, দেপসাং, হট স্প্রিং ও গোগরা থেকে সেনা প্রত্যাহার কীভাবে করা হবে সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার দশম পর্যায়ের বৈঠকে বসবে সেনার উচ্চপদস্ত আধিকারিকরা। প্যাঙ্গংয়ের দক্ষিণ তীরে চুশুলের কাছে মল্ডোতে হবে এই বৈঠক।

প্যাঙ্গং হ্রদের দুই তীরে আর কোনও দেশের সেনা নেই বলেই জানা গিয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে হ্রদের উত্তর তীরে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে যে চিনা মিলিটারি ক্যাম্প দেখা গিয়েছিল সেগুলি আর নেই।

কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সংসদে জানিয়েছেন, “ধাপে ধাপে একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে ও সব কিছু খতিয়ে দেখে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে রাজি হয়েছে দু’দেশ।” তিনি জানিয়েছিলেন, প্যাঙ্গং হ্রদ থেকে সেনা সরে যাওয়ার পরেই লাদাখের অন্য অংশে শান্তি স্থাপনের বিষয়ে আলোচনায় বসবে ভারত ও চিন। সেই কাজই শুরু হয়েছে।

তবে প্যাঙ্গংয়ের পাহাড়ি রেঞ্জ থেকে সেনা সরাতে বলে চিন নতুন করে ফাঁদ পাততে পারে বলেও মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। চিন সেনা সরানো শুরু করলে, পিছিয়ে আসতে হবে ভারতীয় বাহিনীকেও। সেই সুযোগে ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করতে পারে লাল সেনা, সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

কিছুদিন আগেই ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর মিলেছিল, ৩৪৮৮ কিলোমিটার জুড়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসি বরাবর সেনার সংখ্যা আরও বাড়চ্ছে চিন। সেনার বিন্যাসও বদলাচ্ছে তারা। সেই সঙ্গেই আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করার কাজ চলছে। ভারতের বাহিনী খবর দিয়েছে, নতুন করে রাইফেল ডিভিশন মোতায়েন করছে চিনের লাল সেনা। হাউইৎজার কামান সাজাতে দেখা গিয়েছে তাদের। ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করা যায় এমন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করছে চিনের সেনা। অন্তত সাড়ে তিনশো যুদ্ধ ট্যাঙ্ক তারা নিয়ে এসেছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর। টাইপ-৯৯ এর মতো আধুনিক যুদ্ধ ট্যাঙ্কও রয়েছে তাদের সঙ্গে। তবে ভারতীয় সেনারা জানাচ্ছে, চিনের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে খুব ভালভাবেই পরিচিত ভারত। তাই প্রতি মূহূর্তেই সতর্ক নজর রাখা হবে চিনের বাহিনীর ওপরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.