সেনা প্রত্যাহারের পরে ভারতীয় ভূখন্ডের সীমা অপরিবর্তিত রয়েছে : বিদেশমন্ত্রক

দুদেশের সেনা প্রত্যাহারের সময় ভারতীয় ভূখন্ডের কোনও অংশে দখলদারি করা হয়নি, সীমান্তের কোনও অংশে চিনের জবরদখল নেই। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এমনই জানাল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। দুদেশই সম্পূর্ণ শান্তিপ্রক্রিয়া মেনে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে এদিন বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবারই চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং হির সাথে কথা বলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন ফোনে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কথা হয় মস্কো এগ্রিমেন্টের বাস্তবায়ন নিয়েও। এই প্রেক্ষিতে দুই দেশ কীভাবে এগোবে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়।

এরপরেই প্রেস বিবৃতি দেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন দুই দেশের যৌথ সম্মতির ভিত্তিতেই ভারত ও চিন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ভারতীয় ভূখন্ডের কোনও অংশ চিনা সেনার দখলে নেই। সীমান্ত পাহারায় যে সেনা মজুত রয়েছে, তার কোনও ভুল ব্যাখ্যা হলে কেন্দ্র দায়ী নয়।

সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও, সীমান্তে টানা নজরদারি চালাবে ভারত বলে এদিন জানিয়েছেন অনুরাগ শ্রীবাস্তব। গত সেপ্টেম্বরেই সাংহাই কোঅপারেশন আর্গানাইজেশনের কনক্লেভে মস্কোতে বিশেষ বৈঠকে বসেন দুই নেতা। সেখানেই অহেতুক সংঘর্ষ এড়ানো, সেনা প্রত্যাহার, সব ধরণের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলা সহ একাধিক বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

এদিকে, বৃহস্পতিবারই নাম না করে পাকিস্তান ও চিনকে এক হাত নেয় ভারতীয় সেনা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনা পরিষ্কার জানিয়ে দিল দেশের সীমান্তে যে বহিরাগত শক্তি নজর দেবে, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। তাই প্রতিবেশী দেশ যেন সতর্ক থাকে। উল্লেখ্য বুধবার রাত থেকেই নতুন করে কার্যকর হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি। সেই প্রেক্ষিতেই ভারতের প্রতিক্রিয়া উস্কানি না দিলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সীমান্তে খবরদারি বরদাস্ত করবে না ভারত।

এদিন সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, পাক সেনা উস্কানি দিলে তবে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে বাধ্য হবে ভারত। নয়তো কোথাও কোনও সমস্যা নেই। আন্তর্জাতিক সীমান্ত নীতি সবদিক থেকে পালন করবে ভারত। তবে এর পাশাপাশি এটাও ঠিক, যে সবরকম পরিস্থিতির জন্যই ভারতীয় সেনা তৈরি। তাই সীমান্তে সক্রিয়তা প্রতিবেশী দেশের না দেখানোই ভালো।

সেনা আধিকারিকের দাবি বিগত বছরগুলিতে পাকিস্তানের জন্যই দুদেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা বারবার বিঘ্নিত হয়েছে। তবে ভারত আশাবাদী প্রতিবেশী দেশের সুমতি হবে। ২০০৩ সালে ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। একাধিকবার সীমান্তে চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি বর্ষণ করেছে পাক সেনা। বাধ্য হয়ে প্রত্যুত্তর দিয়েছে ভারতও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.