ইন্দ্রানীর বয়ানের ভিত্তিতেই দ্বিতীয় রাউন্ডে জেরা চিদম্বরমকে, অভিযোগ মোটা টাকা ঘুষ নেওয়ার

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার গ্রেফতারির পরে রাতভর লোদী রোডের সিবিআই দফতরেই ছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। দফায় দফায় তাঁকে জেরা করেন সিবিআই অফিসাররা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, দ্বিতীয় রাউন্ডে চিদম্বরমকে জেরার সময় উঠে আসে আইএনএক্স মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও শিনা বরা হত্যায় মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ের নাম। সিবিআই জানিয়েছে, আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তির বিরুদ্ধে তদন্ত গতি পায় ইন্দ্রানীর বয়ান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই।

বুধবার রাতে গ্রেফতারির পরে চিদম্বরমকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষার পরে সিবিআই গেস্ট হাউসের গ্রাউন্ড ফ্লোরের ৫ নম্বর ঘরে রাখা হয় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে। সিবিআই জানিয়েছে, চিদম্বরম ও কার্তির বিরুদ্ধে তদন্তের অন্যতম বড় অস্ত্র হলই ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান।

২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান রেকর্ড করেছিলেন সিবিআই অফিসাররা। বয়ানে ইন্দ্রানী বলেছিলেন, তাঁদের আইএনএক্স মিডিয়াকে বেশ কিছু সুযোগসুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বদলে বড় অঙ্কের ঘুষ চেয়েছিলেন কার্তি। ইডি-র কাছে ইন্দ্রাণী ও তাঁর স্বামী মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায় দু’জনেই দাবি করেছিলেন, চিদম্বরম অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৬ সালে তাঁরা নর্থ ব্লকে গিয়ে দেখা করেছিলেন। চিদম্বরম তাঁদের কার্তির কাছে পাঠান। চার দফায় ৭ লক্ষ ডলার কার্তির চারটি সংস্থাকে ‘ঘুষ’ দেওয়া হয়েছিল।

মেয়ে শিনা বরাকে হত্যার অভিযোগে ২০১৫-র অগস্ট থেকে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে বন্দি ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে, মুম্বইয়েরই আর্থার রোড জেলে রয়েছেন পিটার। তাঁরাই আইএনএক্স মিডিয়ার যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা। অর্থমন্ত্রকের অধীনস্থ ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের (এফআইপিবি)-র অনুমোদন না নিয়েই, সংস্থার জন্য কোটি কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ আনার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে।  ২০০৮ সালে আইএনএক্স মিডিয়াকে নোটিস ধরায় আয়কর দফতর। তখনই কার্তি চিদম্বরমের আইনি ও আর্থিক পরামর্শদাতা সংস্থা অ্যাডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজিক কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেডের (ASCPL) দ্বারস্থ হন ইন্দ্রাণীরা। অভিযোগ, ইন্দ্রানী-পিটারের সংস্থার থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তাঁদের বিদেশি লগ্নির টাকায় ছাড়পত্র পাইয়ে দেন কার্তি। এই কাজে ছেলের পাশে ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.