সীমান্ত সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ অসম-মিজোরাম, বৈঠকের ডাক কেন্দ্রের

সীমান্ত সংঘাতে অগ্নিগর্ভ অসম ও মিজোরাম। গত শনিবার দুই রাজ্যের সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। আহত হন বেশ কয়েকজন। এহেন পরিস্থিতিতে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছে দুই রাজ্য।

রবিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন অসমের (Assam) মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। এই বিষয়ে জোরামথাঙ্গা আশ্বাস দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরাতে চান তাঁরাও। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দপ্তরেও এই বিষয়ে জানিয়েছেন তিনি। মিজোরামের (Mizoram) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালচামলিয়ানা জানিয়েছেন, সোমবার দুই রাজ্যের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে দুই রাজ্যের মুখ্যসচিবরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া কেন্দ্রের তরফে স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা উপস্থিত থাকবেন।

এই মুহূর্তে সীমান্তে উত্তপ্ত এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছে দু’রাজ্যই। মিজোরামের কলাসিব জেলার ভাইরাংটে গ্রাম ও অসমের কাছাড় জেলার লাইলাপুর এলাকায় এই নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছে। তার ফলে মিজোরামের দিকে যাওয়ার পথে কয়েকশ ট্রাক এই মুহূর্তে সীমান্তে আটকে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, লাইলাপুরের গ্রামবাসীর পণ্যবাহী ট্রাক মিজোরামে ঢুকতে দিচ্ছেন না। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হলে খাবার, ওষুধ, রান্নার গ্যাস ও পেট্রোল ডিজেলের অভাব দেখা দেবে মিজোরামে

জানা গিয়েছে, গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয় গত শনিবার। অসমের বাসিন্দারা অভিযোগ তোলেন তাঁদের দিকে মিজোরাম সরকার একটি কোভিড ১৯ নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র বানিয়েছে। মিজোরামের দিকে যে ট্রাক চালক ও অন্যান্যরা যাচ্ছে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানে। অসম সরকারকে না জানিয়েই এই পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তারা। তারপরই লাইলাপুরের বেশকিছু বাসিন্দা লাঠি, দা হাতে নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। এর পরেই মিজোরামের দিক থেকে কিছু যুবক এসে লাইলাপুরে ১৫ টি দোকান ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে সংঘাত পাশের করিমগঞ্জ জেলাতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষী বাড়াতে বাধ্য হয় দুই রাজ্য

এই বিষয়ে অসমের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, দুই রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় এমন ঘটনা প্রত্যেক বছর ঘটে। এর নেপথ্যে রয়েছে চোরাই কাঠের ব্যবসা। তবে মিজোরামের এক শীর্ষ আধিকারিক পালটা দাবি করেছেন, তারা অসমের জমি দখল করতে চায় না। অসম মিজোরাম সীমান্তে অধিকাংশ জায়গা দখল করেছে অবৈধভাবে অসময়ে প্রবেশ করা বাংলাদেশীরা। তারাই সংঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.