পশ্চিমবঙ্গের ৮০% করোনা আক্রান্ত কলকাতায়, জানুন কোন কোন বরোয় প্রকোপ বেশি
কলকাতায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শক্ত, বলছেন মুখ্যসচিব।TopicsCoronavirusCovid-19Coronavirus in KolkataCoronavirus in West Bengal
রাজ্যে চারটি হটস্পট থাকলেও করোনার কেন্দ্রস্থল যে কার্যত রাজধানী কলকাতা, বৃহস্পতিবার তা স্বীকার করে নিল প্রশাসন। একই সঙ্গে এই কথাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হয়েছে যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ মহানগরে। মুখ্যসচিব কার্যত এটাও মেনে নেন যে আগামী মাসের তিন তারিখ যদি লকডাউন উঠে যায়, তাহলে বিপদে পড়ে যাবে পশ্চিমবঙ্গ।
কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকায় ৫০টির ওপর কনটেনমেন্ট জোন তৈরী করা হয়েছে। রেকর্ড ঘেঁটে হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে যে এখানে বড় ফ্ল্যাট থেকে ছোটো বাড়ি, কমপ্লক্স থেকে ঘিঞ্জি বস্তি, কিছুই করোনা মুক্ত নয়। তবে অনেক স্থানই আদি কলকাতার অংশ। রাজ্যের হিসাব অনুযায়ী বৃহস্পতিবার অবধি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫৬।
কলকাতায় মূলত বরো এক থেকে এগারোর মধ্যেই রয়েছে অধিকাংশ করোনা রোগী। হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে যে পূর্ব কলকাতায় বরো ১ ও ৩-এর অনেকটাই কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও কন্টেনমেন্ট জোন আছে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বরো ৪,৫ ও ৬-তে। দক্ষিণ কলকাতা ও পশ্চিম কলকাতার একাংশ যেগুলি বরো ৭,৮ ও ৯-এর অংশ, সেখানেও কন্টেনমেন্ট জোন তৈরী হয়েছে।
কন্টেনমেন্ট জোনে যারা আছেন তাদের বাড়ি থেকে বেরোনা একেবারেই নিষেধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার এক কর্তা জানান যে কোন কোন বাড়িতে করোনা পাওয়া গিয়েছে সেই রেকর্ড তারা রাখেন। অন্যদিকে কন্টেনমন্ট জোন কোনটি হবে, সেটি ঠিক করে স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতায় মোট ষোলোটি বরো আছে, প্রতি বরোয় গড়ে নয় থেকে দশটি ওয়ার্ড আছে ।
কীভাবে কন্টেনমেন্ট জোন নির্ধারিত হচ্ছে, সেটিও জানান মুখ্যসচিব। তিনি বলেন যে একটি বাড়িতে হলেই সেখানে কন্টেনমেন্ট জোন করা হচ্ছে না। একই সঙ্গে বাড়ি ও বস্তির জন্য ভিন্ন নীতি নেওয়া হচ্ছে। মূলত ব্যারিকেড দিয়ে মানুষকে কন্টেনমেন্ট জোনের মধ্যে রাখা হচ্ছে। তবে এর পরেও এক বরো থেকে অন্য বরোতে লোক যাতায়াত করছে, সেটি স্বীকার করে নেন তিনি।
মুখ্যসচিব বলেন যে কলকাতায় লকডাউন মান্য করানো খুব একটা সোজা কাজ নয়। অনেক জায়গায় একসঙ্গে অনেকে থাকেন, সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শক্ত বলে জানান রাজ্যের পদস্থ আমলা। তেসরা মে লকডাউন উঠলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া শক্ত হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে দক্ষিণ কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জোনের কাছে স্থিত এক পুলিশ স্টেশনের কর্তা জানান যে প্রাথমিক ভাবে সরকারের নির্দেশ ছিল লকডাউন মান্য করাতে কোনও বলপ্রয়োগ না করতে। কিন্তু মানুষ কথা শুনছে না। তাই জনগণের স্বার্থেই পুলিশ এবার কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে বলে জানান তিনি।