‘একটু দাঁড়া তো, কাজ আছে’, বাইক থেকে নেমেই মধ্যমগ্রাম উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দাদার! হতবাক ভাই

দুই ভাই কাজ করেন একই কারখানায়। একসঙ্গেই কারখানায় যান। মঙ্গলবারও বাইক নিয়ে কাজে বার হন দুই সহোদর। বাইক চালাচ্ছিলেন ভাই। পিছনের আসনে বসেছিলেন দাদা। মধ্যমগ্রাম উড়ালপুলের কাছে দাদাকে বাইক থামাতে বলেন দাদা। ভাই তা-ই করেন। এর পরের ঘটনার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না ভাই। তাঁর চোখের সামনে উড়ালপুল থেকে নীচে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন দাদা। মঙ্গলবার এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় উত্তর ২৪ পরগনার ব্যস্ত স্টেশন এলাকায়।

বারাসত জিআরপি সূত্রে খবর, আত্মহত্যার চেষ্টা করেন যে যুবক, তাঁর নাম অপূর্ব দে। বয়স ৩৪ বছর। তিনি বিবাহিত এবং চার বছরের এক সন্তানের বাবা। তাঁর ভাইয়ের নাম দেবকুমার দে। তাঁদের বাড়ি ঘোলা থানার কদমতলা এলাকায়। দুই ভাই মধ্যমগ্রামে একটি পোশাকের কারখানায় কাজ করেন। একসঙ্গে একই বাইকে অফিস থেকে বাড়ি যাতায়াত করেন তাঁরা। মঙ্গলবারও সে ভাবে সোদপুর রোড ধরে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা।

মধ্যমগ্রাম উড়ালপুলের কাছে অপূর্ব তাঁর ভাইকে বাইক থামাতে বলেন। জানান, ছোট্ট একটা কাজ সেরে আসছেন। কিন্তু ভাই বাইক থামাতেই মাথায় হেলমেট পরা অবস্থায় উড়ালপুল থেকে রেললাইনে ঝাঁপ দেন দাদা। হতচকিত ভাই চিৎকার করতে করতে দৌড়ে যান। স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দাদাকে উদ্ধার করেন রেললাইন থেকে। খবর যায় মধ্যমগ্রাম এবং ঘোলা থানায়। সেখান থেকে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশের সাহায্য নিয়ে প্রথমে অপূর্বকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে পরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এখনও ঘটনার ঘোর কাটাতে পারেননি অপূর্বের ভাই দেবকুমার। তিনি বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে ৯টার সময় দুই ভাই কথা বলতে বলতে কারখানায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দাদা বলল, ‘একটু দাঁড়া। কাজ আছে।’ আমি বাইক থামাতেই কোনও দিকে না তাকিয়ে সোজা ব্রিজ়ের উপর থেকে ট্রেনের উপরে ঝাঁপ দেয়।’’ তিনি জানান, বর্তমানে এসএসকেএমে সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন দাদা। অপূর্বের পরিবারের কেউ-ই বলতে পারছেন না, কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন যুবক। ঘটনার তদন্তে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.