ওবিসি মামলা: সোমবার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে, জয়েন্ট এন্ট্রান্স নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ কি বহাল থাকবে?

অন্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) সংক্রান্ত জটিলতায় বাতিল হয়ে গিয়েছে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মেধাতালিকা। নতুন করে মেধাতালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চে ওবিসি মামলার শুনানি রয়েছে। আইনজীবী মহলের অনুমান, সেখানে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড সংক্রান্ত হাই কোর্টের নির্দেশ নিয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হতে পারে।

এর আগে রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত সব বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত শুনানিতে ওই স্থগিতাদেশের উপরেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই সময় বলেছিল, “এটা আশ্চর্যজনক! হাই কোর্ট কী ভাবে এমন করে স্থগিতাদেশ দিতে পারে? আমরা ভেবে অবাক হচ্ছি যে, কোন যুক্তিতে হাই কোর্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে!” হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পরে সোমবার ফের সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলার শুনানি রয়েছে।

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতায় ফলপ্রকাশ বিঘ্নিত হয়। হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ ওই মেধাতালিকা বাতিল করার নির্দেশ দেন। নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার জন্য বলা হয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। গত শুক্রবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে হাই কোর্ট অন্য রকম কিছু বিবেচনা করতে পারে, তা আমাদের ধারণার মধ্যে ছিল না। আজকেই আমরা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাব।’’

জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকার বিষয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, ওবিসি পড়ুয়াদের জন্য পূর্বের মতো ৭ শতাংশ সংরক্ষণই বরাদ্দ থাকবে। তা ছাড়া, নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। তালিকা প্রকাশ করলে, তা করতে হবে পুরনো বিধি মেনে। অর্থাৎ, ২০১০ সালের আগের ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতেই নতুন মেধাতালিকা তৈরি করতে হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে বলে জানিয়েছিল হাই কোর্ট।

আইনজীবী মহলের একাংশ জানাচ্ছেন, সোমবার জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকা সংক্রান্ত হাই কোর্টের এই নির্দেশের বিষয়ে শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে সোমবার কী কী বিষয় উঠে আসে, সে দিকে নজর থাকবে। বস্তুত, ২০১০ সালের পরে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। বলা হয়েছিল, সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করতে হবে। তার পর নতুন করে ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। রাজ্য একটি সমীক্ষা করে ওবিসি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তার বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে মামলা হয় এবং সেটির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টও আবার হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.