নবান্ন অভিযান: আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের ডাকা কর্মসূচি রুখতে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা

নবান্ন অভিযানের বিরোধিতায় এ বার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। আগামী শনিবার (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের ওই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। শনিবারের ওই কর্মসূচির বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়েরের জন্য বুধবার হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সঞ্জয়কুমার সাউ নামে এক আইনজীবী। বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র বেঞ্চ তাঁকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

নবান্ন অভিযানের বিরোধিতায় হাই কোর্টে ইতিমধ্যে একটি মামলা চলছে। হাওড়া ময়দানের এক ব্যবসায়ী তপন হাজরা অতীতের উদাহরণ টেনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ওই কর্মসূচির ফলে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে। হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে সেই মামলা চলছে। ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, গত বছরে ২৭ অগস্ট যে নবান্ন অভিযান হয়েছিল, তাতে ৪৭ জন পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হন। এক পুলিশকর্মীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ বারও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিচারপতি ঘোষের এজলাসে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, এ বারের নবান্ন অভিযানে জমায়েত বড় হবে। আরজি করের নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা এই কর্মসূচির ডাক দিলেও একটি রাজনৈতিক দল পুরোপুরি সমর্থন করেছে৷ এই বিষয়গুলি আদালতের বিবেচনা করা উচিত বলে জানান তিনি। বুধবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, আইন মেনে মিছিল, প্রতিবাদ কর্মসূচি হতে পারে। সেই অধিকার সকলের রয়েছে। কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যাতে না হয়, রাজ্যের পুলিশের তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রাজ্যও ওই কর্মসূচি ঘিরে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। জনস্বার্থ মামলায় কী হয়, তা দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বস্তুত, গত বছরের ৯ অগস্ট আরজি করে ধর্ষণ এবং খুন করা হয় মহিলা চিকিৎসককে। আগামী শনিবার ওই ঘটনার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। ওই দিনেই ফের নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে গত বছরের ২৭ অগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’। ওই কর্মসূচি ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শহরে। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামানও ব্যবহার করতে হয়েছিল পুলিশকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.