পুতিনকে বিশ্বাস করি, রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া ইউক্রেনের চেয়ে সহজ, শুল্কের হুঁশিয়ারির পর সুর নরম ট্রাম্পের

পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করা ইউক্রেনের চেয়ে অনেক বেশি সহজ। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে এমনটাই মন্তব্য করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি বিশ্বাস করেন এবং পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে কিছু দিন আগে এই ওভাল অফিসে বসেই ট্রাম্পের বাদানুবাদ হয়েছে। প্রকাশ্যে জ়েলেনস্কিকে যুদ্ধের জন্য দায়ী করেছেন ট্রাম্প। তাঁদের মধ্যে খনিজ চুক্তিও ভেস্তে গিয়েছে। ইউক্রেন এবং আমেরিকার সম্পর্কের এই অবনতির আবহে রাশিয়ার বিষয়ে আবার সুর নরম ট্রাম্পের।

শুক্রবার সকালেই যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে রাশিয়াকে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তি না-হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার বিষয়ে নরম মনোভাব দেখাবে না আমেরিকা। ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি এবং শুল্ক আরোপের বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সামনে পুতিনের প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘আমি পুতিনকে বিশ্বাস করি। সত্যি কথা বলতে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের সঙ্গে বোঝাপড়া করা আমার কাছে বেশি কঠিন মনে হচ্ছে। হয়তো এর চেয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করা সহজ।’’

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে পূর্ব ইউরোপে। প্রথম থেকেই আমেরিকাকে পাশে পেয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তিনি কূটনীতির মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন জ়েলেনস্কিকে। ইউক্রেন আবার রাশিয়ার সঙ্গে আপস করতে নারাজ। জ়েলেনস্কির এই অনড় মনোভাবের পর ইউক্রেনে সামরিক সাহায্য স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। শুক্রবার পুতিনের প্রশংসা করতে গিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, পুতিন যা করেছেন, ওঁর জায়গায় এই মুহূর্তে অন্য যে কেউ থাকলে তা-ই করতেন। পুতিনের সঙ্গে বরাবরই আমার সম্পর্ক খুব ভাল। উনি যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। ভাল কিছু হতে চলেছে।’’

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর না-করে পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন জ়েলেনস্কি। ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমি জানি না ওরা বিষয়টাকে মিটিয়ে নিতে চায় কি না। যদি তা না-চায়, তবে আমরা ওদের পাশে থাকব না। কারণ, আমি চাই বিষয়টি মিটে যাক। মৃত্যুমিছিল বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই আমি এটা করছি।’’ উল্লেখ্য, আমেরিকায় গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বাদানুবাদের পর ইউরোপের দেশগুলিকে পাশে পেয়েছেন জ়েলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে ঋণ দিয়েছে ব্রিটেন। কিন্তু আমেরিকা হাত তুলে নিলে শুধু ইউরোপীয় দেশগুলির সহায়তায় ইউক্রেনের পক্ষে রাশিয়ার মোকাবিলা করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.