হাঁটু মুড়ে বসা অবস্থায় ছিল তরুণীর দেহ! মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ পরিবার

আত্মঘাতী হননি, তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করছে না। এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা কাটেনি। এমনই একাধিক দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হল নেশামুক্তি কেন্দ্রে সম্প্রতি মৃত্যু হওয়া এক তরুণীর পরিবার। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এ দিন উত্তর দিয়ে জানানো হয়েছে, কলকাতার নগরপালকে বিষয়টি পাঠানো হয়েছে। জাতীয় ও রাজ্য মহিলা কমিশনেরও দ্বারস্থ হয়েছে পরিবারটি। যদিও পুলিশের দাবি, এই ধরনের ঘটনার তদন্তে নানা দিক দেখে নিশ্চিত হতে হয়। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া গেলেও অন্যান্য সম্ভাবনার দিক থাকতে পারে ভেবে ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।

গত ৩১ মে মধ্যরাতে হরিদেবপুরের একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে মৃত্যু হয় পৌলোমী ধর নামে ২৮ বছরের ওই তরুণীর। পৌলোমীর বাবা দীপককুমার ধরের অভিযোগ, মেয়ের মৃত্যুর খবর তাঁদের ওই রাতে জানানো হয়নি। থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিবারের অনুপস্থিতিতেই দেহ সরিয়ে নিয়ে যায়। মধ্যরাতে অচেনা নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করা হলেও ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের কেউ ফোন করে মৃত্যুর খবর জানাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। একাধিক অসঙ্গতি দেখে ১ জুন এফআইআর করি। পরে পুলিশ সূত্রে যে ছবি আর ভিডিয়ো পেয়েছি, তাতে আরও বিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে, মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। পুলিশের তরফে তেমন সাড়া না পেয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি।’’

ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের সেক্রেটারি মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কয়েক জন আবাসিকের সঙ্গে গোলমালের পরে শৌচালয়ে ওড়না নিয়ে ঢুকে যান ওই তরুণী। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। যদিও পুলিশ সূত্রে পাওয়া ছবি ও ভিডিয়ো (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখিয়ে মৃতার বাবার দাবি, ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শৌচালয়ের শাওয়ারের রডের সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে পৌলোমীর দেহ। কিন্তু হাঁটু মুড়ে ভাঁজ করে বসে রয়েছেন তিনি। তাঁর বাবার প্রশ্ন, হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসা অবস্থায় কেউ কী ভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়তে পারেন? ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক যদিও বলছেন, ‘‘এই সব প্রশ্ন রয়েছে বলেই ভিসেরা পরীক্ষা করানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে সব বোঝা যাবে।’’ সূত্রের খবর, রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে হঠাৎ পরিদর্শনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরে কি এই তদন্ত অন্য মাত্রা পাবে? আশায় মৃতার পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.