ভারতের ডবল মিউট্যান্ট করোনা ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাবু ভারত। কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্র। টিকা প্রদানই কি একমাত্র পথ নাকি লকডাউন কোন পথে দেশকে হাঁটাবে কেন্দ্রীয় তা স্পষ্ট নয়। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে ভ্যাকসিন, কারণ টিকা সপ্তাহের পর ১৮ বছরের উর্ধ্বের সবাইকে টিকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে পয়লা মে থেকেই। কিন্তু টিকা নেওয়াই কি আলোর পথ? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে গবেষণা। কারণ ডবল মিউটেশন হওয়া ভারতের করোনা ভ্যারিয়েন্ট টিকা নেওয়া মানুষকেও ছাড়ছে না। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে সুদূর আমেরিকাতেও। তাই ভারতের এই ডবল মিউটেশন হওয়া করোনা নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব।

যদি একবার এই সেল অন্য দেশে ঢুকে পড়ে তাহলে সে দেশের দফারফা করে ছাড়বে এটি, যা হচ্ছে এখন ভারতের। গত বার ৯০ হাজারের কিছু বেশিতে শেষ হওয়া প্রথম ঢেউকে পিছনে ফেলে প্রতিদিন তিন গুণ মানুষকে সংক্রমিত করছে এই নয়া করোনা ভ্যারিয়েন্ট।

ভারতে মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে ভারতে নতুন ও ডবল মিউটেশনের খোঁজ মেলে। এর জেরে হঠাৎ সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়, যা এখন চরম আকার নিয়েছে। নয়া প্রজাতির E484Q ও L452R-র প্রভাবেই নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে সংক্রমণ বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তুলনামূলকভাবে বেশি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্ট। ভারতের ১৮টি রাজ্যের পর পাড়ি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। শুধু তাই নয়, ভ্যাকসিন গ্রহণ করা কোনও ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধও কিছুটা হলেও ভাঙতে সক্ষম এই নয়া ভেরিয়েন্ট। আগেই করোনা হয়েছে, এমন ব্যক্তিও আবার আক্রান্ত করতে সক্ষম ভাইরাসের ডবল মিউটেশান। তাই বিশ্বের বিজ্ঞানিরা ভারতের করোনা প্রজাতি নিয়ে বেশি চিন্তিত।

ভারতে পাওয়া ডবল মিউটেন্ট প্রজাতির করোনা নিয়ে ব্রিটেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউইয়র্ক গবেষণা করেছে। এই নয়া প্রজাতি কতটা বিপজ্জনক, তা নিয়ে তারা কাজ করছেন।

এখনও পর্যন্ত ভারতে সংক্রমিতদের শরীরে মূলত তিনটি বিদেশি প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ব্রিটেন স্টেনের। এ ছাড়া পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল প্রজাতি। মূল ভাইরাস থেকে চরিত্র পরিবর্তন করা ওই নতুন প্রজাতিগুলিকে রুখতে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক কতটা কার্যকরী, তা নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কোভিশিল্ড নেওয়ার পরেও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রজাতি আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, মহারাষ্ট্রে যে নতুন ডবল মিউটেন্ট প্রজাতিটি পাওয়া গিয়েছে, তা রুখতে ভারতের দুই প্রতিষেধক কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন আদৌ সক্ষম কি না।

মার্চের শেষের দিকে, এনসিডিসি ‘ডবল মিউটেন্ট’ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল। সেই ডবল মিউটেন্ট এখন ভারতকে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে বিশ্ব-তালিকার দ্বিতীয় স্থানে এনে দিয়েছে। রবিবার দেশের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৪৪ জন। যা করোনা আক্রান্তে নয়া রেকর্ড। দেশে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৬৭।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.