চিনকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করুক বিশ্বব্যাঙ্ক, কোনও রাখঢাক না করে এই মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও একবার চিন নিয়ে তাঁর প্রশাসনের অবস্থান তিনি স্পষ্ট করে দিলেন।
বৃহস্পতিবারই বিশ্বব্যাঙ্ক সিদ্ধান্ত নেয়, চিনকে প্রতি বছর এক থেকে দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়া হবে, তা চলতে থাকবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তার পরেই টুইট করে ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বব্যাঙ্ক কেন চিনকে ঋণ দিচ্ছে? এটা কি আদৌ বাস্তবসম্মত? চিনের প্রচুর অর্থ রয়েছে, যদি না থাকে তারা ছাপিয়ে নেবে। বন্ধ করুন।” ট্রাম্পের ভেরিফায়েড টুইট অ্যাকাউন্ট থেকেই এই টুইট করা হয়েছে।
তাঁর প্রশাসন বারবারই চিন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে এসেছে, এই তালিকায় রয়েছেন ডেভিড মালপাসও, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি ছিলেন মার্কিন অর্থ বিভাগে।
ট্রাম্পের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেছে সে দেশের অর্থসচিব স্টিভেন এমনুচিনের কথাতেও। মার্কিন সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের একটি কমিটিতে তিনি জানান, চিনে বহু বছর ধরে চলা প্রকল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের আপত্তি রয়েছে।
এ নিয়ে শুক্রবারই আলোচনা হয়, সেই আলোচনায় চিনকে ঋণ প্রদান করা কমানোর কথা বলা হয়েছে।
২০১৯ সালের জুন মাসে শেষ হওয়া অর্থবর্ষে চিনকে চিনকে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ২০১৭ অর্থবর্ষে চিনতে ২.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্বব্যাঙ্কের চিন সংক্রান্ত নির্দেশক মার্টিন রাইজার বলেন, এই পরিকল্পনায় “চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কই প্রতিফলিত করছে, আমরা ক্রমেই আরও বেশি সিলেক্টিভ হচ্ছি।”
শুধুমাত্র বেজিংকে অর্থপ্রদান কমানোর কথাই বলছে না ওয়াশিংটন। তাদের মতে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ঋণ নেওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই, নিজেদের প্রকল্প তারা নিজেরাই রূপায়িত করতে সক্ষম। বরং এই অর্থ দরিদ্র দেশগুলোকে দেওয়া হোক।
হোয়াইট হাউস ও বিশ্বব্যাঙ্ক অবশ্য ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে তড়িঘড়ি কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
১৫ ডিসেম্বর থেকে চিনা পণ্যের উপরে নতুন করে কর ধার্য হতে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও অন্তর্বর্তী চুক্তি করতে রাজি হয়নি চিন। এ দিনে গত এক সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ বেড়েছে।
১৮ মাস ধরে চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে মার্কিন বণিকরা বাড়তি সুযোগসুবিধা পান এবং চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি কমুক। মার্কিন বণিকদের জন্য বাড়তি ছাড় পেতে চিনতে চাপও দিয়ে আসছে তারা।