ইউক্রেনের উপর হামলা চালানোর পর পরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট করেছিলেন, তাঁদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ইউক্রেনের রাজধানী কিভ দখল। কিভ-মস্কো যুদ্ধের এক বছরের দোরগোড়়ায় এসে তেড়েফুঁড়ে নিজেদের চূড়ান্ত লক্ষ্যপূরণে মরিয়া রাশিয়া। এর জন্য নিজেদের রণকৌশলও ইতিমধ্যেই বদলে ফেলেছে মস্কো।
ছবি: রয়টার্স।
০২১৮
শুক্রবার ইউক্রেন যুদ্ধের ২৯৫তম দিনে পা দিয়ে কিভে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনা। প্রশ্ন উঠছে, শীতের শুরুতে কিভ দখল করতে কেন এ রকম ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল রাশিয়া?
ছবি: রয়টার্স।
Advertisement
০৩১৮
ঠান্ডা এবং তুষারপাতের জেরে এমনিতেই বেকায়দায় পড়েছেন কিভের বাসিন্দারা। শহরের অনেক রাস্তাঘাট সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। চাইলেই শহরের বাইরে যেতে পারবেন না শহরবাসীরা। মনে করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিরই সুযোগ নিয়েছেন রাশিয়ার সামরিক কর্তারা।
ছবি: রয়টার্স।
০৪১৮
পাশাপাশি শীতকালে কিভে বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকে। নেটওয়ার্কেরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি আগেই জানিয়েছিলেন, শীতকালে তাঁদের কঠিন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আর সেই সময়ে মস্কো থেকে আবার নতুন করে কিভ আক্রমণ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
ছবি: রয়টার্স।
Advertisement
০৫১৮
জ়েলেনস্কির সেই আশঙ্কাকেই সত্যি করে কিভ দখলের নতুন ছক কষতে শুরু করেছে রাশিয়া। বিদ্যুতের সমস্যার মধ্যেই রাশিয়ার ‘কামিকাজ়ে’ (আত্মঘাতী) ড্রোন সোমবার কিভ এবং এর আশপাশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে আঘাত হেনেছে।
ছবি: রয়টার্স।
০৬১৮
হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কিভ শহর এবং পার্শ্ববর্তী খারকিভ, সুমি, পোলতাভা এবং জ়াপোরিঝিয়া অঞ্চল-সহ আরও বেশ কয়েকটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চল এবং পূর্বের এলাকাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন
- ২১ টি ছবি‘ঘুষ দিয়ে পাওয়া’ বিশ্বকাপ? যত বিতর্ক এ বার কাতারে
- ১৪ টি ছবিমেসিরা মাঠে এত থুতু ফেলেন কেন? টেনিস কোর্টে এমন করলেই কিন্তু লাল কার্ড
- ১৫ টি ছবিকাতারে কোটি কোটি টাকার স্টেডিয়াম-হোটেল! বিশ্বকাপের জৌলুস শেষে ভবিষ্যৎ কী?
০৭১৮
নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকলে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি অনেক সময় রাডারে ধরা না-ও পড়তে পারে। মনে করা হচ্ছে, সেই সুযোগকেও কাজে লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছে ক্রেমলিন।
ছবি: রয়টার্স।
০৮১৮
ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় কিভের জল সরবরাহ-সহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবায় সমস্যা বাড়ছে।
ছবি: রয়টার্স।
০৯১৮
পাশাপাশি হঠাৎ হামলায় ব্যাহত হয়েছে খাদ্য সরবরাহও। তীব্র খাদ্যসঙ্কটে পড়তে পারেন কিভের বাসিন্দারা। সামরিক বিশেষজ্ঞরা মতে, ইউক্রেনকে ‘পিঠে’ এবং ‘পেটে’ মারতে মারতে নতিস্বীকার করতে বাধ্য করানোর জন্যই আটঘাঁট বেধে যুদ্ধের ময়দানে নেমেছে পুতিন-বাহিনী।
ছবি: রয়টার্স।
১০১৮
শীতকালে রাজধানী কিভ এবং আশপাশের এলাকাগুলিতে আঘাত হানলে তৈরি হওয়া সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে হয়তো আগে থেকেই অবগত ছিলেন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কর্তারা। আর সেই জন্যই কিভের উপর নতুন করে আক্রমণ শুরুর জন্য তাঁরা শীতকালকে বেছে নিয়েছেন বলে মনে করেছেন অনেকে।
ছবি: রয়টার্স।
১১১৮
ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের পর থেকে বার বার রণকৌশল বদলাতে হয়েছে রাশিয়াকে। কারণ কোনও রণকৌশলেই জ়েলেনস্কিকে বেকায়দায় ফেলতে পারেননি পুতিন। উল্টে ইউক্রেন বাহিনীর হাতে প্রায় ৮০ হাজার রুশ সেনাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে বলে পশ্চিমি সামরিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলির দাবি।
ছবি: রয়টার্স।
১২১৮
ইউক্রেনের অনেক শহরে দখল নেওয়ার পরও সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়ছে রাশিয়ার সেনারা। এমনকি অক্টোবর মাসে ইউক্রেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর খেরসন দখল করেও সেনাদের পিছু হটার নির্দেশ দেন রাশিয়ার সেনাকর্তারা। কিন্তু নতুন হামলায় কিভের পাশাপাশি আবার সেই খেরসনেও হামলা চালাতে শুরু করেছে রাশিয়া।
ছবি: রয়টার্স।
১৩১৮
দখল নেওয়ার পর থেকে ১০ মাস ধরে রুশ সেনাবাহিনীর হাতে এক প্রকার বন্দিদশায় দিন কাটছিল খেরসনবাসীদের। কিন্তু হঠাৎ করে রুশ সেনা সেখান থেকে সরে যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল কেন এ রকম সিদ্ধান্ত নিল পুতিনের দেশ। সংঘাত শুরুর পর থেকে খেরসনই একমাত্র ইউক্রেনের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল যা রুশ সেনা এত দিন দখল করে রেখেছিল।
ছবি: রয়টার্স।
১৪১৮
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত থেকে ইউক্রেনের রাজধানীকে নিশানা করে ৭০টিরও বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়ান সেনা। ইউক্রেনের তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছে, শীতের মধ্যেই কিভ দখলের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ ফৌজ।
ছবি: রয়টার্স।
১৫১৮
সেই বাহিনীতে রয়েছে বাছাই করা বেশ কিছু গোলন্দাজ, ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া ব্যাটেলিয়ন। ইউক্রেন সেনার জেনারেল ভ্যালেরি জ়ালুঝনি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানান, নতুন বছরের গোড়াতেই কিভ দখলের লড়াইয়ে নামতে কৌশলগত প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ সেনা। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ হামলার বর্ষপূর্তি। তার আগেই রাজধানী কিভ দখল করতে চায় রাশিয়া।
ছবি: রয়টার্স।
১৬১৮
শুক্রবারের পর সোমবার আবার কিভ লক্ষ্য করে উড়ে আসে বহু রুশ বোমারু ড্রোন। কিভের উপর হামলা চালাতে রুশ বিমানবাহিনীর দু’টি ‘স্ট্র্যাটেজিক বম্বার’ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও ইউক্রেনের দাবি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাজধানীর আকাশে ‘উড়ান সতর্কতা’ জারি করেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার।
ছবি: রয়টার্স।
১৭১৮
কিভের উপর পর পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে বিপদের মুখে পড়লেও এখনও হার মানেনি জ়েলেনস্কি সরকার। সম্ভাব্য রুশ হামলা মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদের আবেদন জানিয়েছেন ইউক্রেন সেনার জেনারেল ভ্যালেরি জ়ালুঝনি।
ছবি: রয়টার্স।
১৮১৮
জ়ালুঝনি জানান, রাশিয়ার হামলা প্রতিরোধের ক্ষমতা ইউক্রেনের রয়েছে। কিন্তু তার জন্য ৩০০ ট্যাঙ্ক, ৬০০-৭০০ সাঁজোয়া গাড়ি এবং ৫০০টি হাউইৎজার কামান প্রয়োজন। রাশিয়া আরও আগ্রাসী হয়ে উঠলেও তাঁরা ভয় পাচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন ভ্যালেরি।