স্বেচ্ছায় নাকি জোর করেই ধর্মান্তরিত করা হয়েছে পাকিস্তানে অপহৃত দুই হিন্দু কিশোরীকে? এমন প্রশ্ন ঘিরে স্বভাবতই অস্বতিতে ছিল ইমরান খানের প্রশাসন। শনিবার একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ। অভিযোগ, ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে বিয়ে দিয়ে দুই নাবালিকাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছে। প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকেই ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যেরা। ধর্ণায় বসেছে দুই কিশোরীর পরিবারও।
দোলের আগে, গত ২০ মার্চ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি এলাকা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় ১২ বছরের রবীনা ও ১৪ বছরের রিনা। অভিযোগ ওঠে, দোলের প্রস্ততিতে যখন ব্যস্ত ছিল ঘোটকির ধারকি শহরের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা, তখনই অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় রবীনা ও রিনাকে। এর পরের অভিযোগ ওঠে, অপহরণ করে তাদের জোর করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরও করা হয়েছে।
দুই নাবালিকার পরিবারের দাবি, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও লাভ হয়নি। করাচির সেন্ট্রাল পুলিশের দাবি ছিল, তারা স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। কারও চাপে নয়, স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই নাবালিকার বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। সেখানে ইসলাম রীতিতে তাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তুলকালাম শুরু হয়েছে ঘোটকিতে। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন। পাকিস্তানের হিন্দু সেবা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট সঞ্জেশ ধাঁজা জানিয়েছেন, পুলিশ শুধু এফআইআর দায়ের করেছে। ৪৮ ঘণ্টা হয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
নয়া পাকিস্তান গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বছর সে দেশে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান খান। তাঁর সেই নির্বাচনী স্লোগান তুলে ধরেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০১৬ সালে সিন্ধু প্রদেশের আইনসভায় জোর করে ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে বিল পাশ হয়েছিল। তার পরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নয়া পদক্ষেপ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটা কেবল শব্দমাত্র। বাস্তবে তার প্রয়োগ কোথাও হচ্ছে না।