বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেষ্টায় জল ঢেলে জো বিডেনের জয়ে সিলমোহর দিল ইলেক্টোরাল কলেজ। মার্কিন সময় মতে সোমবার আমেরিকার সবচেয়ে দূরের প্রদেশ হাওয়াই ইলেক্টোরাল ভোট দেওয়ার সঙ্গেই এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বিডেন পেয়েছেন ৩০৬টি ভোট। ট্রাম্পের ঝুলিতে এসেছে ২৩২টি ভোট। অর্থাৎ ২৭০টি ভোটের ম্যাজিক ফিগার থেকে অনেক বেশি ভোট পেয়ে বিডেনের পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসা আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র।
আমেরিকার আইন মতে, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বুধবারের পর প্রথম সোমবার প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয় ইলেক্টোরাল কলেজ। অর্থাৎ আজই সেই দিন। সেইমতো আমেরিকার ৫০টি প্রদেশে নির্দিষ্ট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মাস্ক পড়ে ব্যালট পেপারে ভোট দেন ইলেক্টোররা। ফলাফল ওয়াশিংটনে পাঠানো হবে। সেখানে জানুয়ারির ৬ তারিখ সেগুলিকে মিলিয়ে দেখা হবে। সেইমতো ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলে দেখা গেল এবছর ‘ফেথলেস’ ইলেক্টোরের দেখা মেলেনি। সবাই প্রত্যাশামতোই ভোট দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, সংশ্লিষ্ট প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে ইলেক্টোর ভোট দেয় তাঁকে ‘ফেথলেস’ ইলেক্টোর বলা হয়। মার্কিন নির্বাচনে এহেন ঘটনা নগণ্য হলেও বেনজির নয়। এদিকে, ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের পর ওয়াশিংটন থেকে দেশের উদ্দেশে ভাষণ দেন বিডেন। তিনি সাফ বলেন,”এখন করোনার বিরুদ্ধে পাতা উল্টানোর সময়। এটা ঐক্যের সময়। এখন ক্ষত মলম লাগানোর সময়।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন উৎসবের বিষয়, হামলার নয়। ট্রাম্প জনতার রায় মানছেন না।” নিজের বক্তব্যে ট্রাম্পের বিভেদকামী নীতিকেই যে তোপ দেগে নতুন অধ্যায় রচনার কথা বলেছেন বিডেন তা স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, সিডেন্সিয়াল নির্বাচনে পরাজিত হলেও প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে নারাজ ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। কয়েকদিন আগে তিনি জানিয়েছিলেন, ইলেক্টোরাল কলেজে জো বিডেনকে জয়ী ঘোষণা করলে তবেই তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়বেন।নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী তথা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিডেনকে জেতাতে ভোটে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এমনকী সমর্থকদের কাছে ফলাফল মেনে না নেওয়ার আহ্বান ও জানিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু, পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনয়ের মতো সুইং স্টেটগুলিতে ধাক্কা খেয়ে ও আইনি লড়াইয়ে কোনও পথ খোলা না দেখতে পেয়ে ব্যাকফুটে ট্রাম্প শিবির। এছাড়া, চিন-সহ বিশ্বের দেশগুলি ইতিমধ্যেই বিডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তাই সুর কিছুটা নরম করলেও ইলেক্টোরাল কলেজের দোহাই দেন ট্রাম্প। কিন্তু এবার এখানেও তাঁর আশাভঙ্গ হযেছে।