১৮ মার্চ সমস্ত পৃথিবী জুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিপদ ও তার বিরুদ্ধে সার্বিক যুদ্ধ ঘোষণা করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল চিনের তথ্যমন্ত্রক। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি’র চিন সফরের সময়েই সেই শ্বেতপত্র প্রকাশের সময়টি সচেতন ভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কিনা তা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের জল্পনা স্তিমিত হওয়ার আগেই চিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিল তারা কোনও অবস্থাতেই পাকিস্তানের পাশ থেকে সরে দাঁড়াবে না। মঙ্গলবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াই জানান, চিন পাকিস্থানের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষা করতে দায়বদ্ধ।
বেজিং–এ অনুষ্ঠিত চিন ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক স্তরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় চিনের বিদেশমন্ত্রী বলেন, সার্বিক ভাবে সমগ্র পৃথিবীতে এবং অঞ্চলবিশেষে পরিস্থিতির যে পরিবর্তনই ঘটে থাকুক না কেন চিন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং মর্যাদা রক্ষায় সে দেশকে সমর্থন করবে। চিনের সহায়তার স্পষ্ট ঘোষণায় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি ওয়াং ওয়াই কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন অত্যন্ত সংকটের সময় পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বেজিং–এর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা ও তার প্রতিক্রিয়ায় বালাকোটে ভারতের বিমান হানার প্রেক্ষিতে চিন ও পাকিস্তানের যৌথ বিবৃতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞমহল। গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জৈশ নেতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে ‘কালো তালিকা’ ভুক্ত করার প্রস্তাবে চতুর্থবার ভেটো প্রয়োগ করে চিন। চিনের এই ভূমিকা ভারত ও চিনের পরস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্কে ছায়া ফেলে। কিন্তু তার ফলে চিন যে তাদের বিদেশনীতি থেকে সরে আসেনি তার প্রমাণ মিলল চিন–পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায়।
প্রসঙ্গত কুরেশি জানান, পুলওয়ামা হামলার পরবর্তী অবস্থা নিয়ে চিনের ও পাকিস্তানের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা হয়েছে এবং পুলওয়ামা পরবর্তী সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্কের দ্রুত অবনতির বিষয়ে চিন বিদেশমন্ত্রীকে ওয়াকিবহাল করা হয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়েও বেজিং–এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানান পাক বিদেশমন্ত্রী। এমন সংকটের সময় পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর জন্য চিনের ভূমিকার প্রশংসা করেন কুরেশি।