ইউক্রেনে ‘আক্রমণ শুরুর’ জন্য রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপাল আমেরিকা। ‘প্রথম দফার’ সেই নিষেধাজ্ঞায় মস্কোর অর্থনীতি এবং ‘এলিটদের’ উপর কোপ পড়তে চলেছে। তারইমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবশ্য দাবি করেছেন, এখনও যুদ্ধ এড়ানোর সুযোগ আছে।
মঙ্গলবার ‘প্রথম দফার’ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন বাইডেন। তাতে মূলত রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং এলিটদের নিশানা করা হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রাশিয়া যদি পিছু না হটে, তাহলে আগামিদিনে ধাপে ধাপে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে। তবে কড়া অবস্থানের মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্পূর্ণ আক্রমণ রুখতে শেষ চেষ্টার বার্তা দিয়েছেন বাইডেন। খুলে রেখেছেন কূটনৈতিক দরজা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়া যে আগ্রাসনকারীর ভূমিকা পালন করছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কোনও ধন্দ নেই। তাও সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য এখনও সময় আছে। যা লাখ-লাখ মানুষের জীবন ছারখার করে দেবে।’ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
তবে রাশিয়ার তেল এবং গ্যাসের জোগানের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়নি বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তেল এবং গ্যাসের জন্য যে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ইউরোপের একাংশ। তার জেরে রাশিয়া এবং ইউক্রেন সংঘাত চওড়া হতেই আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। সেই পরিস্থিতিতে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স বলেছে, ‘আজ যে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে যে সব নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে, তাতে তেল এবং গ্যাসের জোগানকে নিশানা করা হবে না। আমরা বাজারকে জানিয়ে দিতে চাই যে এই মুহূর্তে দাম বাড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই।’
এমনিতে পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা না করে সোমবার পূর্ব ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী এলাকাকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।সরকারি সংবাদমাধ্যমে আবেগ মেশানো বার্তায় পুতিন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস যে ডোনেত্সক গণপ্রজাতন্ত্রী এবং লুহানৎসক গণপ্রজাতন্ত্রীর স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজন আছে। যে সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে ছিল।’ সেই ঘোষণার পরই সরকারি সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয় যে ক্রেমলিনে বসে ডোনেত্সক এবং লুহানৎসকের ‘বিদ্রোহী’ নেতাদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বের চুক্তি স্বাক্ষর করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবার পুতিনের সেই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার সংসদ উচ্চকক্ষ।