ভারতে ইসলামিক স্টেটের প্রভাব সম্পর্কে নজরদারি চালানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার বিস্ফোরণের সঙ্গে তামিলনাড়ু’র একটি মৌলবাদী সংগঠনের সরাসরি যোগ না থাকলেও ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত–এর সঙ্গে তাদের এবং কেরলের কিছু ব্যক্তির নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন জঙ্গি ইসলামি সংগঠনের একটি পৃথক জোট তৈরি করার উদ্দেশ্যেই তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত বলে জানিয়েছেন সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক। তিনি আরও জানান তামিলনাড়ু’র সংগঠনটির বিষয়ে আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী এনটিজে’র প্রধান চক্রী মৌলবী জাহরান বিন হাশীম কলম্বোর সাংগ্রি লা হোটেলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা শ্রীলঙ্কার বিস্ফোরণের সঙ্গে বাংলাদেশের আইএস শাখার যোগসূত্রের ব্যাপারেও খোঁজ চালাচ্ছে।

গত বছরই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাদের একটি রিপোর্টে জানিয়েছিল যে তামিলনাড়ু ও কেরল থেকে ২০১৬ সালে বেশ কিছু আইএস–এ যোগদান করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন আফগানিস্থানে যাওয়ার আগে শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছে মৌলবাদী শিক্ষা গ্রহণের জন্য। এদের মধ্যে কয়েকজন সপরিবারে গিয়েছে বলে মুম্বাইয়ে গোয়েন্দা সংস্থা তাদের এফআইআর–এ উল্লেখ করে। একইসঙ্গে কোয়েম্বাটোরে করা আর একটি এফআইআর–এ ছ’জনের নামের উল্লেখ করা হয়। তল্লাশিতে উদ্ধার হওয়া একটি ভিডিও থেকে স্পষ্ট হয় যে এদের প্রত্যেকের সঙ্গে জাহরান বিন হাশীমের যোগাযোগ রয়েছে এবং শ্রীলঙ্কায় একটি বড়সড় ধরনের হামলা চালাবার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আপাতত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এ যাবৎকাল প্রাপ্ত যাবতীয় তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পরীক্ষা করে বোঝার চেষ্টা করছে, যে হাশীম ক’জন ভারতীয়কে আইএস–এর মৌলবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৭০ জন আইএস সদস্যকে গ্রেফতার করে এনআইএ। এদের মধ্যে অধিকাংশই কেরল ও তামিলনাড়ুতে বসবাসরত তরুণ যারা আইএস–এর জঙ্গি অসহিষ্ণু ইসলামি আর্দশে দীক্ষিত হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার বিস্ফোরণের দায় ইতিমধ্যেই আইএস জঙ্গিরা স্বীকার করে নিয়েছে। এই জঙ্গি সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে আটজন ব্যক্তিকে দেখানো হয়েছে যারা ধারাবাহিক ভাবে আটটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ভিডিওতে দেখানো হয়েছে যে আত্মঘাতী জঙ্গিরা তাদের নেতার প্রতি কীভাবে আনুগত্য প্রকাশ করছে। এদের মধ্যে একজনই শুধু মুখ না ঢেকে ক্যামেরার মুখোমুখি হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.