এই লেখার “অনুপ্রেরণা” হলো তুর্কি রাষ্ট্রপ্রধান এরদোগানের মন্তব্য! নিচে লিঙ্ক রইলো! মুসলিমদের ন্যায় বিচার এর অর্থ- যেখানে মুসলিম ভোটার পঞ্চাশ শতাংশের বেশি সেখানেই মুসলিম দেশ বানিয়ে শরিয়তি প্রতিষ্ঠা হোক, আর দুনিয়ার সব অমুসলিম দেশ মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে খাইয়ে পরিয়ে রাখুক, যাতে একদিন সেই মুসলিমরা গণতান্ত্রিক ভাবে অধিক সন্তান জন্ম দিয়ে সেই দেশগুলোকেও ইসলামিক দেশ বানাতে পারে! কোনো মুসলিম দেশ অমুসলিম দের আশ্রয় দেয় না বা সাহায্য করে না!ওই ভূমির উপর অধিকার থাকলেও তাড়িয়ে দেয়। এটাই ইসলামের নীতি! অমুসলিমরা ইসলামের সহী রূপ বুঝে গেছে। কাজেই মাত্র একবার পৃথিবীতে মুসলিম অমুসলিম দ্বন্দ্ব ঘোচাবার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘ সক্রিয় হোক! ইসলাম ধর্ম রিফর্ম করার দায় অমুসলিমদের নয়। ইসলামের ভুল ধরাও অমুসলিম দের দায়িত্ব বা কর্তব্য নয়। মুসলিমদের ইসলামী নিয়মে বাঁচার অধিকার আছে, অন্যদের ক্ষতি না করে! আর সেটা নিজেদের দেশেই বাঁচতে পারবে। মুসলিমরা ধর্মের নীতির কারণে কোনো দিন অমুসলিমদের পাশে বাঁচতে পারে না। সেই জন্য মুসলিমরা দায়ী নয়, ইসলাম দায়ী! যারা মুসলিম, দরকার হলে তারা ইসলামের রিফর্ম করুক! না হলে ইসলাম ত্যাগ করুক! পৃথিবীতে শান্তি আসুক!
মুসলিম দ্বারা মুসলিমের উপরে অত্যাচার বেশি হয়, তাই মুসলিমরা অমুসলিম দেশে গিয়ে থাকতে বাধ্য হয়। অথবা পরিকল্পনা করে মুসলিমরা অত্যাচার করে মুসলিমদের অমুসলিম দেশে পাঠায় , সেই দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে
মুসলিমরা সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করে না। কেন করে না ভাবুন। কারণ দীর্ঘমেয়াদি তাদের লাভ হচ্ছে। এক দেশে মুসলিম জনসংখ্যা কমছে, অন্য দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হচ্ছে! এটাও জিহাদ। সৌদিতে মন্দির গির্জা বানাবার, মূর্তি বানাবার অধিকার অন্যদের নেই! কিন্তু মুসলিমরা তাতেই গর্বিত। কিন্তু সেই মুসলিমরা অন্য অমুসলিম দেশে গিয়ে তাদের টাকায় খেয়ে বিশাল মসজিদ না বানাতে দিলে, মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে বলে চিৎকার করে। গণমাধ্যমের মালিকদের ঘুষ দিয়ে তা প্রচার করে। সেক্যুলার, মানবিক মানুষদের ম্যানিপুলেট করে।
তুর্কিরা কতবার বিভিন্ন জাতির উপর গণহত্যা চালিয়েছে। ভাবুন , এখনো কুর্দিদের উপর গণহত্যা চালায়। তুর্কিরা মুসলিম। সুন্নিদের অসুন্নি মুসলিম বিনাশ করতে কষ্ট নেই!সুন্নি, সৌদিরা অসুন্নী ইয়েমেনকে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে! ইরাক, সিরিয়াতে অসুন্নীদের উপর সুন্নি আইসিস, তুর্কি, সুন্নি আরব ও পাকিদের মদতে, টাকায় , জনবল দিয়ে অত্যাচার চালিয়ে মানুষকে গৃহহীন করে, তার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে অমুসলিমদের উপর। ইউরোপ এখন মহা সমস্যায়। নিজেদের রাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য সৌদি ও অন্য আরব রাজবংশগলো, অসুন্নী মুসলিম দেশগুলোকে যেমন আমেরিকার সাহায্যে ধ্বংস করেছে তেমনই এরা অমুসলিম দেশে ইসলামের প্রতিষ্ঠায় ইনভেস্ট করে ধর্মীয় সমস্যার সৃষ্টি করছে। লিবিয়ার গাদ্দাফি, ইরাকের সাদ্দাম, বা সিরিয়া ধ্বংসের মূল কারণ এরাই। শিয়া ইরানকে ধ্বংসের জন্য সুন্নিরা আমেরিকাকে হাতে নিয়ে লড়াই করছে ইরানের বিরুদ্ধে! ইউরোপ কতদিন ঠেকাতে পারবে, জানি না। ইরান বাধ্য হয়ে গাজায় সমর্থন করছে, যাতে মুসলিম বিশ্বের সহী নেতা কে তা প্রমাণ করতে পারে ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন পায়! আমি জানি, ইহুদিদের বেশি আপন ভাবে শিয়ারা, যদি রাজনৈতিক চাপ না থাকে! আর ইসলামের মধ্যে সবচেযে বাস্তববাদী গ্রূপ হলে আহমেদিয়া, যাদের উৎপত্তি ভারতবর্ষে।
সুন্নি মুসলিমরা হয় অসহায় বা এরা আরব রাজবংশের এই নীতি সাপোর্ট করে, বিশ্ব কে অমুসলিম ও অসুন্নী মুক্ত করতে। কাজেই সুন্নিদের কাজকর্ম নিজেদের বিবেচনা করার চূড়ান্ত সময় এখন!
এবার আসি খিলাফত আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে। তুর্কিদের নেতৃত্বে বিশ্বে সুন্নি মুসলিম শাসন চালু করার অপর নাম খিলাফত আন্দোলন। কেন হিন্দু বা অমুসলিমরা তা সাপোর্ট করবে? মুসলিমরা ভারতবর্ষ জোর করে দখল করে ৮০০ বছর অমানবিক জিজিয়া কর ( অমুসলিম বলে বাঁচার জন্য এই কর দিতে হতো বা ইসলাম গ্রহণ করতে হতো) চালু করে, ভারতবর্ষের আদি জ্ঞান বিজ্ঞান ধ্বংস করে কোরানের শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে সব রকম অন্যায় কাজ করেছে! যে সব ভারতীয় অমুসলিম সেই খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করছে, তারা হিন্দুদের চোখে দেশদ্রোহী! বিদেশী শাসন থেকে এই সব মুসলিমরা ভারতকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করেনি।
মুসলিম শাসন থেকে ব্রিটিশরা ভারতকে মুক্ত না করলে ভারত আজ মুসলিম দেশ হতো! সর্বত্র শরিয়তি আইন চালু হতো! যেভাবে ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে ২৩% হিন্দু জনসংখ্যা আজ ২% এ নেমে এসেছে। তথ্য কথা বলে!
আমি চাই না আর ধর্ম নিয়ে যুদ্ধ হোক! কিন্তু মুসলিমরা তাদের নিয়মেই বাঁচুক নিজেদের দেশে! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার দিনকে ভিত্তিবর্ষ ধরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মাধ্যমে সব দেশ ভাগ হোক আর একবার, মুসলিম ও অমুসলিম দেশে। অন্য কোনো দিনকে ভিত্তিবর্ষ ধরার যুক্তি আছে কি?
তুর্কিরা তাদের নিয়ে রাজতন্ত্র ও শরীয়াতী-তন্ত্র চালু করুক! অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে! তেমনি করোনা ভাইরাসের মত জৈব অস্ত্র বানিয়ে অন্যদের বাঁশ দিতে গিয়ে নিজেরাই ধ্বংসের মুখে পড়বে না! জৈব অস্ত্র চাইলেই গ্যারেজে বসে বানানো যায়! কাজেই লড়াই এর দরকার না থাকলে কেহ অস্ত্র ও বানাতে চাইবে না! ওই টাকা যে যার সমাজের উন্নয়নে খরচ করুক।
মুসলিম বিশ্ব শিয়া, সুন্নি ও বাকি মুসলিমগোষ্ঠীদের নিয়ে আলাদা আলাদা দেশে ভাগ হোক। এতেই বিশ্বে শান্তি আসবে। মাদ্রাসায় বারো ক্লাশ পাশ করা এরদোগান নিজের দেশে খুব চাপে আছে! তার পরিবার দুর্নীতি তে জর্জরিত। তুর্কির সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে সুদের হার ২০১৮-তে পৌঁছে তেছিলো ২৫%-তে। আজ ১১%। ভারতে ৫.১৫%। জাপানে বোধ হয় -০.১% আর ইউরো তে ০%। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ১.৭৫%, সুইজারল্যান্ডে -০.৭৫%. রাশিয়াতে ৬%। অর্থনীতি না বুঝলে এর মানে বুঝবেন না!
নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে মুসলিম তাস খেলে এরদোগান। আরব, আফ্রিকান উদ্বাস্তুদের জিম্মি করে য়ুরোপীয় য়ুনিশনকে চাপে রেখে, তাদের থেকে টাকা আয় করছে! তার বক্তব্য হয় টাকা দাও, না হলে সবাইকে য়ুরোপীয় য়ুনিয়নে ঢুকিয়ে দেব! আর য়ুরোপীয় য়ুনিয়নের নাগরিকরা এই কারণে ইসলাম বিরোধী হচ্ছে। সব সেক্যুলার দলের জনসমর্থন দিন দিন কমছে। ক্ষমতায় উঁকি দিচ্ছে জাতীয়তাবাদী ও ইসলাম বিরোধী দল !রাশিয়া একদিন য়ুরোপীয় য়ুনিয়নে যোগ দেবে। তখন য়ুরোপীয় য়ুনিয়ন আরও ক্ষমতাশালী হবে।
ঠান্ডা যুদ্ধের সময় পৃথিবীতে ভারসাম্য ছিল। এখন চীন নিজের স্বার্থের জন্য ইচ্ছামত নীতি নেয়। তুর্কি/সৌদি , রাশিয়া, আমেরিকা ও য়ুরোপীয় য়ুনিয়ন, মোট পাঁচটা গোষ্ঠী। কাজেই বুঝতে পারছেন, পরিস্থিতি কত খারাপ।
কাজেই রাজনীতি ও ধর্ম ভুলে একটাই নীতি নিন, ০২.০৯.১৯৪৫-কে ভিত্তি বর্ষ ধরে, মুসলিমরা ইসলামের মতে নিজের দেশে থাকুক। বাকি বিশ্ব সেক্যুলার নীতিতে চলুক! তাতেই শান্তি। আর যদি অন্য কোনো শান্তির পথ, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে খুঁজে পান, জানাবেন!
মৃণাল মজুমদার, বার্লিন, ১৫.০২.২০২০