অব্যাহত করোনার দাপট। মারণ ব্যাধির দ্বিতীয় ধাক্কায় রীতিমতো বেসামাল গোটা দেশ। এই অবস্থায় পরপর দুবার ভারত সফর বাতিল করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ চলতি বছর জানুয়ারি মাসে এবং পরবর্তীকালে এপ্রিল মাসে তিন দিনের ভারত সফরে আসার কথা থাকলেও করোনার নয়া স্ট্রেনের কারণেই দুবারই ভারত সফর বাতিল করেন তিনি।
যদিও বরিসের ভারত সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল যে, পরে ভার্চুয়ালি বৈঠক করবেন এই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। সেই কথামতো আগামী মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
সোমবার এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে যে, মঙ্গলবার ৪ মে ভারত ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসবেন। যদিও এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে সেই দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক মহল।
তবে জানা গিয়েছে, এই দুই রাষ্ট্রনেতা মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রধানত বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতি, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এছাড়াও আঞ্চলিক সহযোগীতা এবং করোনা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করা হবে।
বিদেশমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে, ভার্চুয়ালি এই শীর্ষ সম্মেলনে ২০৩০ সালের একটি বিস্তৃত রোডম্যাপ চালু করা হবে। যা আগামী দশকে ভারত-যুক্তরাজ্যের পারস্পরিক সহযোগিতাকে জনগণের কাছে আরও বেশি সম্প্রসারিত ও গভীর করার পথ প্রশস্ত করবে। দুই দেশের সম্পর্ক, বাণিজ্য সমৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, জলবায়ু, কর্ম এবং স্বাস্থ্যপরিষেবার উন্নতি ঘটাবে।
ভারত ও যুক্তরাজ্য ২০০৪ সাল থেকে একসঙ্গে কাজ করেছে এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। উভয় দেশই বিভিন্ন ইস্যুতে উচ্চ-স্তরের মতবিনিময় এবং দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতিতে অংশ নিয়েছে।
এদিকে, চলতি সপ্তাহে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিনের জি-৭ সামিট শুরু হচ্ছে লন্ডনে। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি দেশ হিসেবে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন বিদেশমন্ত্রী এস.জয়শঙ্কর।
অন্যদিকে, দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ব্রিটেনেও। মঙ্গলবার এই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি বৈঠকের আগে অতিরিক্ত আরও ১০০০ ভেন্টিলেটর সরবরাহের কথা ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার।
এর আগেও গত সপ্তাহে ব্রিটেন থেকে ভারতে ২০০ টি ভেন্টিলেটর, ৪৯৫ টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছিল। এছাড়াও সেই সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের তরফে জানানো হয়েছিল যে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবসময় সবরকম ভাবে ভারতের পাশে রয়েছে ব্রিটেন।