সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিনটি গির্জায় চলছিল ইস্টারের প্রার্থনা। হঠাৎ করেই জোরালো বিস্ফোরণ। একটি নয়, পরপর ছ’টি। তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কলম্বো। মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে মানুষের আর্তনাদ, রক্ত। এই ঘটনায় অন্তত ৫২ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে খবর। আহতের সংখ্যা প্রায় ২৮০। তবে শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফে এখনও হতাহতের সংখ্যার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
জানা গিয়েছে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনিস চার্চে প্রথম বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতে কাটুয়াপিটিয়ার সেন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ ও কোচ্চিকাডের একটি গির্জায় পরপর বিস্ফোরণ হয়। এই তিনটি গির্জাতেই সেই সময় ইস্টারের প্রার্থনা চলছিল। প্রার্থনা শুনতে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে অনেক পর্যটকও যোগ দিয়েছিলেন।
এই তিনটি গির্জা ছাড়াও কলম্বোর তিনটি প্রথম সারির হোটেল দ্য শাংগ্রি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবিউরি হোটেলেও হয় জোরালো বিস্ফোরণ। জানা গিয়েছে বিস্ফোরণের তীব্রতা একটাই বেশি ছিল যে গির্জার ছাদ উড়ে গিয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে পুরো এলাকা। চারদিকে শুধুই ছড়িয়ে ছিটিয়ে জিনিসপত্র। পড়ে রয়েছে মানুষের দেহ। আহতদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। রক্তের ছিটে চারদিকে।
শ্রীলঙ্কা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই ছয় জায়গায় বোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পরেই সেখানে পাঠানো হয় পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের দেহ উদ্ধারের কাজ চলছে। গোটা শ্রীলঙ্কা জুড়েই জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলের কাছেই শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের বাসস্থান। অতিমধ্যেই জরুরি বৈঠক ডেকেছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, কলম্বোয় মোতায়েন করা হচ্ছে সেনা। কিন্তু এখনও কোনও জঙ্গি সংগঠন এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
ইতিমধ্যেই আত্মীয় পরিজনের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে শ্রীলঙ্কা প্রশাসন। সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্যও আলাদা করে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতও। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ টুইট করে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ভারত সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে। তিনি প্রতি মুহূর্তে সেখানকার ভারতীয় হাই কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন।