কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ করেননি। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার লন্ডনে ইকোয়েডরের দূতাবাসে ঢুকে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ধরে আনল ব্রিটিশ পুলিশ। অ্যাসাঞ্জ ২০১২ সাল থেকে ওই দূতাবাসের মধ্যেই ছিলেন। তাঁকে সেন্ট্রাল লন্ডন থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে।

লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ এদিন জানিয়েছে, আমাদের অফিসাররা দূতাবাসে ঢুকে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে এনেছে। তিনি সাত বছর ওই দূতাবাসে ছিলেন। কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ না করায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনে যৌন হেনস্থার মামলা আছে। তাঁকে যাতে বন্দি করে সুইডেনে পাঠানো না যায়, সেজন্য লন্ডনের নাইটসব্রিজে হ্যারডস ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্সের কাছে ইকোয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় চেয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। পরে অবশ্য সুইডেনে সেই মামলা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু অ্যাসাঞ্জ আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁকে বন্দি করে আমেরিকায় পাঠানো হতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে যত শীঘ্র সম্ভব ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে পেশ করা হবে।

ইকোয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো জানিয়েছেন, একসময় অ্যাসাঞ্জকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে তিনি বার বার নানা আন্তর্জাতিক বিধিভঙ্গ করেছেন। এরপর তাঁকে আর আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।

অন্যদিকে উইকিলিকস থেকে টুইট করে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে অ্যাসাঞ্জকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ইকোয়েডর। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব সাজিদ জাভিদ বলেছেন, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এখন পুলিশের হেপাজতে আছেন। তাঁকে ব্রিটেনের আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি টুইট করে বলেন, ইকোয়েডর সরকার যেভাবে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, ইকোয়েডরের দূত তাদের দূতাবাসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।

অ্যাসাঞ্জের অনেক ভক্ত ছড়িয়ে আছেন বিশ্ব জুড়ে। তাঁদের দাবি, অ্যাসাঞ্জ সত্যের জন্য লড়াই করেন। অন্যদিকে তাঁর বিরোধীদের দাবি, তিনি নিজের প্রচারের জন্য অপরকে বিপদে ফেলেন। নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি ফাঁস করে দেন। সকলেই বিশ্বাস করেন, কম্পিউটারের গোপন সংকেত ভাঙতে অ্যাসাঞ্জের জুড়ি নেই।

নানা দেশের সরকার যে খবর ও ছবি গোপন করতে চায়, সেসব ফাঁস করে দেওয়ার জন্য অ্যাসাঞ্জ ২০০৬ সালে উইকিলিকস নামে এক সংস্থা তৈরি করেন। ২০১০ সালে উইকিলিকস এক সাড়া জাগানো ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ইরাকে আমেরিকার সেনা হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে ১৮ জন নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.