মহিলা বিক্ষোভকারীদের মুখ, স্তন ও গোপনাঙ্গ লক্ষ্য করে পেলেট গান ছোড়া হচ্ছে। এমনই অভিযোগ উঠল ইরানের সুরক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিকিৎসক, নার্সরা জানিয়েছেন যে পুরুষ বিক্ষোভকারীদের পা, পিঠে পেলেট গানের আঘাত মিললেও মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন ও গোপনাঙ্গে সেই আঘাত দেখা যাচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রেফতারি এড়াতে ইরানের চিকিৎসক ও নার্সরা গোপনে সরকারি-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসা চালাচ্ছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিবাদীদের উপর দমন-পীড়ন চালাতে পেলেট গান ব্যবহার করা হচ্ছে। হামেশাই পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের চোখে পেলেট গানের ক্ষত দেখা যাচ্ছে। তার জেরে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কাও আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
তবে সেখানেই শেষ হয়নি দমন-পীড়ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহিলা এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ইরানের বাহিনী ছোবরা বন্দুক (পেলেট গান) ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইসফাহান প্রদেশের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, এক যুবতীর চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। বছর ২০-র ওই তরুণীর গোপনাঙ্গে দুটি পেলেট গানের ক্ষত ছিল। যা থেকে গোপনাঙ্গের সংক্রমণও হতে পারত। তাঁর উরুতে আরও ১০ টি ছোবরা গুলির ক্ষত ধরা পড়েছিল। ওই যুবতী জানিয়েছিলেন, যখন প্রতিবাদে নেমেছিলেন, তখন ইরানের সুরক্ষা বাহিনীর ১০ জন তাঁকে ঘিরে ধরেছিল এবং গোপনাঙ্গ লক্ষ্য করেই পেলেট গান ছোড়া হয়েছিল।
কিন্তু কেন মহিলাদের উপর সেই কায়দায় আক্রমণ চালানো হচ্ছে? ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসফাহান প্রদেশের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন যে ‘ওরা (ইরানের সুরক্ষা বাহিনী) মহিলাদের সৌন্দর্য নষ্ট করতে চায়।’ একইসুরে ইরানের রাজধানী তেহরানের নিকটবর্তী শহর কারাজের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন যে মহিলা সৌন্দর্য নষ্ট করতে সেই কাজ করা হচ্ছে।
ওই চিকিৎসকের মতে, পেলেট গান ছোড়ার ফলে স্তন, উরু, গোপনাঙ্গের মতো জায়গায় আঘাত লাগলে মহিলারা হীনমন্যতায় ভুগবেন বলে সম্ভবত মনে করছে ইরানের বাহিনী। অর্থাৎ মানসিকভাবে মহিলা আন্দোলনকারীদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যাঁরা ইরানে হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা হয়ে উঠেছেন। মাহসা আমিনিকে হত্যার (হিজাব না পরার জন্য হত্যা করা হয়েছিল) জন্য সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন। যদিও ইরান সরকারের দাবি, মাহসাকে হত্যা করা হয়নি।