ঐতিহাসিক মুহূর্ত, উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করলেন ট্রাম্প

পানমুনজম৷ ছোট্ট শহর৷ দুই কোরিয়াকে এক সূত্রে বেঁধেছে এই শহরই৷ তবে রবিবার বিশ্ব রাজনীতির অন্য সমীকরণের খেলা দেখাল এই পানমুনজম৷ ম্যাপে প্রায় খুঁজে না পাওয়া এই শহরেই তৈরি হল বেশ কয়েকটা ঐতিহাসিক মুহুর্ত৷ এখানেই ফের দেখা হল একসময়ের যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রনেতা কিম জং উনের৷

হাত মিলল৷ করমর্দনের সেই ছবি প্রত্যক্ষ করল গোটা বিশ্ব৷ আর তার সঙ্গে বোধহয় স্বস্তির নি:শ্বাসও পড়ল৷ তবে সৌজন্যের উষ্ণতার তাপ ছড়ানো বাকি ছিল আরও৷ বৈঠক শেষে পানমুনজম থেকে ২০ পা হেঁটে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশও করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ যা কিছুটা অপ্রত্যাশিতই ছিল৷

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে শেষবার ফেব্রুয়ারি মাসে মিলিত হয়েছিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভিয়েতনামে ট্রাম্প-কিমের বৈঠক কোনও চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। তারপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর৷ সম্পর্কে বরফ জমেছে৷ মান অভিমানের পালা চলেছে, হুমকি হুঁশিয়ারিও দেওয়া নেওয়া হয়েছে৷

তার যবনিকা পতন হল রবিবার৷ অসামরিক এলাকা পানমুনজমের মাটিতে সাক্ষাত করতে রাজি হয়েছিলেন কিম-ট্রাম্প৷ পরিসংখ্যান বলছে ১৯৫৩ সালে কোরিয়ান উপসাগরীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পানমুনজমে পা রাখলেন দুই দেশের রাষ্ট্রনেতারা৷ সেদিক থেকে এই বৈঠক ঐতিহাসিকও বটে৷

বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন অসামরিক বর্ডার পেরিয়ে গর্বিত ও সম্মানিত৷ এই ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাক্ষী হতে পেরে ধন্য৷ পালটা ওয়াশিংটনে কিমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ট্রাম্প৷ সেই আমন্ত্রণ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান গ্রহণ করেছেন কীনা সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি৷ বৈঠকের পর দুই নেতাই দক্ষিণ কোরিয়া চলে যান৷

এই বৈঠককে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন কিম জং উনও৷ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ট্রাম্পের আমন্ত্রণ যদি কিম গ্রহণ করেন, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনও উত্তর কোরিয়ার নেতার সফর হবে৷ উল্লেখ্য, দুদিনের সফরে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷

ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে কিমের৷ এমন ইঙ্গিত শনিবার দিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্র নেতা মুন জায়ে ইন৷ তবে ঠিক কোথায় সেই বৈঠক হবে, সে বিষয়ে তখনও কিছু জানা যায়নি৷

এদিকে, ২৪শে জুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ব্যক্তিগত চিঠি পান উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। সেই চিঠির বিষয়বস্তু গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখবেন বলেও জানান তিনি৷ চিঠি পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের ‘অসাধারণ সাহস’ এরও প্রশংসা করেন কিম।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, কিম জং-উনের কাছ থেকে তিনি একটি সুন্দর চিঠি পেয়েছেন। তবে ট্রাম্পের চিঠি কখন, কিভাবে কিমের কাছে পৌঁছেছে তা প্রকাশ করা হয়নি। চিঠির বিষয়বস্তু কি তাও জানানো হয়নি এবং হোয়াইট হাউজও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.