বিধ্বংসী আগুনে ছাই হয়ে গেল প্যারিসের বিখ্যাত সুপ্রাচীন ও ঐতিহ্যমণ্ডিত নতর দাম ক্যাথিড্রাল। সুবিশাল ও অপূর্ব কারুকার্যমণ্ডিত ওই গির্জায় কী ভাবে আগুন লাগল তা এখনও পরিষ্কার নয়। আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গির্জার সুউচ্চ চূড়াটি ভেঙে পড়ে। পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে দমকল ও নিরাপত্তাবাহিনী। কাছাকাছি যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দমকলের প্রায় চারশো কর্মী টানা কাজ করছেন গির্জাটির যতটুকু বাঁচানো যায়, তার চেষ্টা করতে।
কিন্তু কোনও নিষেধাজ্ঞাতেই আটকানো যায়নি মানুষের আবেগ। জ্বলন্ত গির্জার কাছাকাছি রাত বাড়তেই জড়ো হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। চোখের জলে তাঁরা গাইছেন খ্রিস্টান ধর্মীয় সঙ্গীত। গুড ফ্রাই ডে ও ইস্টারের ঠিক আগেই এই ঘটনায় আবেগে ভেঙে পড়েছেন ক্যাথলিকরা।সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম ভিড় করেছে প্যারিসে।
পৃথিবীর সব খ্রিস্টান, বিশেষত ক্যাথলিকদের কাছে এই ঐতিহাসিক গির্জার একটি বিশেষ স্থান আছে। এর ইতিহাস, সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে কয়েক কোটি পর্যটককে আকৃষ্ট করে।
চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত এই গির্জা দেখতে প্রতি বছর দেড় কোটি মানুষ ভিড় করেন। ধর্মীয় স্থান হিসেবে নতর দাম গির্জার যত খ্যাতি, সাড়ে আটশো বছরের পুরনো গথিক স্থাপত্য হিসেবে তার খ্যাতি কোনও অংশে কম নয়। বহু কালজয়ী সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে নতর দাম। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরাসি সাহিত্যিক ভিক্তর হুগোর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য হাঞ্চব্যাক অফ নতর দাম।‘
নতর দামের অন্দরের গথিক স্থাপত্য
রঙিন কাচে মোড়া ছাদ
ভিতরের একটি অংশ
ভিতরের ভাস্কর্য
একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, গির্জাটি সারানোর কাজ চলছিল। সেখান থেকেই আগুন লাগে কোনওভাবে। সুপ্রাচীন এই গির্জার সংস্কারের জন্য গত বছরেই অর্থ সংগ্রহ করার আবেদন জানিয়েছিল ক্যাথলিক চার্চ। কিছু অংশ ভেঙে পড়ছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরঁ সব কাজ ফেলে ঘটনাস্থলে গেছেন।