শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে ইস্টার সানডের দিন ধারাবাহিক বিস্ফোরণে যুক্ত ছিলেন স্বামী। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিলেন ইনসাফ আহমেদ ইব্রাহিম নিজেও। এ বার গর্ভের সন্তান ও আরও তিন সন্তানকে নিয়ে পুলিশের সামনেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিজেকে উড়িয়ে দিলেন তাঁর স্ত্রী ফাতিমা ইব্রাহিম। এই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন তিন পুলিশকর্মীও।
গত রবিবার কলম্বোর তিনটি চার্চ ও তিনটি হোটেলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণে ৩৫৯ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনার দু’দিন পরে এই বিস্ফোরণের দায় নেন ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইসিস। জানা যায়, কোটিপতি ইনসাফ আহমেদ ইব্রাহিম এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। ৩৩ বছর বয়সী ইব্রাহিম ও তাঁর ভাই ৩১ বছর বয়সী ইলহাম আহমেদ ইব্রাহিম আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বিস্ফোরণে দু’জনেই উড়ে গিয়েছেন।
এই দুজনের নাম জানতে পারার পরেই পুলিশ হানা দেয় দেমাতাগোদায় ইনসাফ ইব্রাহিমের প্রাসাদোপম বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ই নিজেকে উড়িয়ে দেয় ফাতিমা। গর্ভবতী সন্তান ছাড়াও সেই সময় তাঁর আরও তিন সন্তান সেখানে ছিল। বিস্ফোরণে তারাও নিহত হয়েছে। এ ছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদ করতে যাওয়া তিনি পুলিশকর্মীও প্রাণ হারিয়েছেন এই বিস্ফোরণে।
বিস্ফোরণের পরের দিনই জঙ্গি গোষ্ঠী আইসিস কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে। এই ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের দায়িত্বে থাকা জঙ্গিরা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে শপথ নিচ্ছেন। সেখানে ইনসাফ ও তাঁর ভাইও ছিলেন। এই ছবিতেই ইনসাফের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ফাতিমাও পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে জানতেন। তিনিও ওই পরিকল্পনার অংশ ছিলেন। এ কথা জানতে পারার পরেই তাঁকে জেরা করতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু ধরা পড়ার আগেই চার সন্তানকে নিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিলেন ফাতিমা।
শ্রীলঙ্কার অন্যতম বড়লোক মহম্মদ ইউসুফ ইব্রাহিমের ছেলে এই ইনসাফ ও ইলহাম। জনতা বিমুক্তি পেরামুনা দলের হয়ে নির্বাচনেও লড়েছিলেন তিনি। সে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী এই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষের অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছে। এই ঘটনার পর মহম্মদ ইউসুফ ইব্রাহিম ও তাঁর ছোট ছেলে ইজাজ আহমেদ ইব্রাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
কলম্বোতে ইনসাফের একটি ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা আছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই কারখানাতেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণের সময় ব্যবহার করা পোশাক তৈরি করা হয়েছিল। কারখানার ম্যানেজার ও ন’জন শ্রমিককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকেও জেরা করা হচ্ছে।