গাঁলওয়ানে চিনের (China) পিপিলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)নিষ্ঠুর ভাবে মেরেছে রাজেশ ওঁরাওকে।ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে ২০জন বীর জওয়ান সাম্রাজ্যবাদী চিনের পাঠানো আক্রমনকারীদের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ভারত মায়ের সার্ব্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যেসব সিংহহৃদয় প্রান দিয়েছেন তাঁদের একজন বাংলার বীর সন্তান রাজেশ। বীরভুমের মহম্মদ বাজার থানার বেলঘোড়িয়া গ্রামের এক সাঁওতাল পরিবারের ২৪ বছরের ছেলে রাজেশ। লাদাকে শহীদ এই জওয়ানের বাবা দর্জির কাজ করেন।দুই বোন রাজেশ্বরী আর শকুন্তলা। ২১ বছরের শকুন্তলা ওঁরাও ময়ূরাক্ষী কলেছে বিএ প্রথমবর্ষের ছাত্রী। বাড়ির একঅমাত্র উপার্জনশীল ভাই দেশের জন্য জীবন দিয়ে চলে গেল।
সারা বাংলা শোকস্তব্ধ। পাড়ায় পাড়ায় সাধারন মানুষ যখন শহীদ সেনার আত্মবলিদানের স্মরনে মোমবাতি নিয়ে, প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। মানুষ ফুলে ফুলে আর নয়নের জলে ভারতমায়ের ওই বীর সন্তানদের যখন স্মরণ করছিলেন ঠিক তখনই কলকাতার একশ্রেনীর সংবাদ মাধ্যম কিন্তু চিনের সাফল্যে দারুণ উচ্ছসিত। একটি ইংরেজী কাগজে শিরোনাম বেড়িয়েছে, “হামারে ঘর মে ঘুস কে মারা”। এতদিনে চেয়ারম্যানের চিন ভারতে ঢুকে মারতে পেরেছে। সেটাই যেন আনন্দ! যেদিন বাংলার বীর জওয়ান রাজেশ চলে গেলেন, তার পরের দিন সকালেই একটি বাংলা কাগজে চৈনিক পন্য কেনার ওকালতি করে কলম লেখা হয়েছে, “তুঘলকি চিন বর্জনের হিড়িকে ক্ষতি দেশেরই, মত বিশেষজ্ঞদের”।

সংবাদ মাধ্যমের একটা বড় অংশই এই অতিবামপন্থার সমর্থক। তাঁরা শিক্ষিত, দক্ষ সম্পাদক, অসাধারন উত্তর সম্পাদকীয় লেখেন। বাংলা বা ইংরেজীতে অনবদ্য লেখা তাঁদের হাতে। মানবতা, বিশ্বভাতৃত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি নিয়ে আগুন ঝরানো লেখা লেখেন। মালিকের নির্দেশমত চাকরীর স্বার্থে কখনো বিজেপির, কখনো কংগ্রেসের বা তৃণমূলের আদ্যশ্রাদ্ধ করেন ঠিকই, এবং এই টার্গেটও সময় ও পৃষ্ঠপোষকতার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু যেটার পরিবর্তন হয় না, সেটা হল এনাদের গনতান্ত্রিক ভারতবর্ষের বিপক্ষে মতামত। এব্যাপারে যেহেতু মালিকপক্ষের খুব বেশী তাপউত্তাপ থাকে না, তাই অতিবামপন্থা সংবাদমাধ্যমের বুদ্ধিজীবী মহলের ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হয়ে গেছে। পাঠকও ধরে নেয় সেটাই প্রগতিশীলতা।

অন্যসব কিছু নিয়ে প্রশ্ন করা যায়, কিন্তু কমিউনিস্ট নিষ্ঠুরতা নিয়ে কিংবা এই অগনতান্ত্রিক অন্ধবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করা যায় না। কারণ সেটা প্রগতি বিরোধী। একটু মনে করে দেখুন তো, ওইসব স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব কখনো এই নিষ্ঠুরতার বিরূদ্ধে এক কলমও লিখেছেন কিনা?
গত লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন উড়িষ্যায় মাওবাদীদের হাতে খুন হন ইলেকশন অফিসার সংযুক্তা দিগল। ১৭ এপ্রিল, ২০১৯ কান্দামাল জেলার গোচাপাড়া থানার বারালা গ্রামের কাছে দিনের আলোয় খুন হলেন ৩২ বছরের সংযুক্তা। তপশীলি জাতির অত্যন্ত গরীব ঘরের মেয়ে ছিলেন সংযুক্তা, বিয়ে হওয়ার পরে এক বছরও পূর্ণ হয়নি তখনো। সংযুক্তার একমাত্র অপরাধ তিনি ভারতীয় গনতন্ত্রের পক্ষে সরকারী আধিকারিক হয়ে ভোট করতে গিয়েছিলেন।

২০১০ সালে দান্তেওয়ারায় মাওবাদী হানায় ৭২ জন সিআরপিএফ জওয়ানের প্রান যায়। দিল্লীর জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষক ছাত্রদের নিয়ে এই নির্মম ঘটনায় আনন্দোতসব করেছিলেন বলে খবর হয়েছিল।ভারত রাষ্ট্র বস্তারের দান্তেওয়ারায় নিরস্ত্র নাগরিকদের দমন করতে সিআরপি এফ পাঠায়নি। সন্ত্রাস শুরু করেছিল মাওবাদীরাই। ৭২ জন জওয়ানের অপরাধ ছিল যে তাঁরা ভারতবর্ষের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র অভিযান দমন করতে বস্তারে গিয়েছিলেন

১৯৭০ সালের ৩০ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরেই নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন অধ্যাপক গোপালচন্দ্র সেন। মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রদরদী শিক্ষক গোপালচন্দ্র সেনের অপরাধ ছিল যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা বন্ধ হতে দেননি।হত্যাকারী এই অতিবামপন্থীরাই।

এই সবকটি ঘটনা এর জন্যই বললাম, কারণ চিনের সাফল্যে আজ যে সব শিক্ষিত মানুষ উচ্ছসিত, যারা কাগজে রেডআর্মির হাতে নিহত সৈনিকের নামের আগে শহীদ লিখতেও রাজি নন, ওপরের সবকটি পাপের তাঁরা পরোক্ষ সমর্থক। তাঁরা চেয়ারম্যান মাওয়ের পথে বিশ্বাস করেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে নরহত্যার বিচারে সম্ভবত মাও সে তুং এর নাম চিঙ্গিস খানের পরেই আসে। একজন মাত্র মানুষ নিজের জীবদ্দশায় এতমানুষকে হত্যা আর কেউ করেন নি। মাও নিজের জীবনে যত মানুষকে মেরেছেন তা হিটলার, স্ট্যালিন বা পল পটের থেকে অনেক গুন বেশী।

শুনতে অদ্ভূত লাগলেও আসল সত্যটা হল ওই প্রতিষ্ঠিত পন্ডিতেরা গনতান্ত্রিক ভারতবর্ষেরই বিরুদ্ধে। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে ভারতবর্ষের গনতন্ত্র ক্ষনস্থায়ী। এর অবসান ঘটিয়ে বিপ্লব আসবে। আর এর জন্য সংযুক্তা দিগল, নিরপরাধ সিআরপিএফ জওয়ান বা গোপালচন্দ্র সেনেদের মত মানুষের প্রান যাবে। এনাদের মনের গভীরে প্রত্যয় আছে যে সংযুক্তার হত্যাকারীরা বা অধ্যাপক সেনের আততায়ী রানা বসু আসলে মহৎ কাজই করেছেন। রানা বসু যে বাবার প্রভাব কাছে লাগিয়ে কানাডার পালিয়ে গিয়ে আরামের জীবন কাটাতে পেরেছেন সেটা বিপ্লবী হিসাবে তাঁর সাফল্য। না, অবাক হওয়ার কিছু নেই। এইসব উচ্চশিক্ষিত মানুষরা যে আদর্শে বিশ্বাস করেন তার প্রয়োগ রাশিয়ায়, চিনে বা কম্বোডিয়াতে যারা করেছেন, তারা এর থেকেও নিষ্ঠুর এবং এর থেকেও অমানবিক অগনতান্ত্রিক পথ নিয়েছিলেন।

১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মাও বলেছিলেন, “বিপ্লব নৈশভোজ নয়, প্রবন্ধ লেখা নয়, কাপড়ের উপরে সূচীশিল্পের কাজকরা নয়, এটি সুক্ষভাবে, সময় নিয়ে শান্তভাবে করার জিনিষ নয়। কবোষ্ণ, সহৃদয়, বিনীত, সংযত আর মহানুভব বিষয়ই নয়। বিপ্লব হল বিদ্রোহ, একটি শ্রেনী অপর শ্রেনীকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার হিংস্র প্রক্রিয়া।” হিংসা আর নরহত্যার অবাধ ছাড়পত্র। তখনই তৈরী হয় চাইনিজ ওয়ার্কাস এন্ড প্লেসেন্ট রেড আর্মি। সেই রেড আর্মিই আজ চিনের মূল সেনা।

গত ১৮ জুন, লবসাঙ সাঙগাই একটি সাংগাতিক কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সাঙগাই হলেন নির্বাসিত তিব্বতের সরকার, সেন্ট্রাল টিবেট এডমিনিস্ট্রেশনের প্রেসিডেন্ট।সাঙগাই মনে করিয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান মাওয়ের পুরোনো অতৃপ্ত বাসনার কথা। নিষ্ঠুর অত্যাচারের মাধ্যমে তিব্বিত দখলের সময় মাও বলেছিলেন, “ তিব্বতটা হল হাতের তালু, এটা তো নিতেই হবে। তারপর আমরা আর পাঁচটা আঙ্গুলও ছিনিয়ে নেব। প্রথম আঙ্গুলটা হল লাদাখ। অপর চারটি হল নেপাল, ভুটান, সিকিম আর অরুণাচল প্রদেশ”।
১৯৬২ সালে চিন যখন ভারত আক্রমন করে তখন এদেশের কমিউনিস্ট নেতারা বলেছিলেন, ‘কোন কমিউনিস্ট দেশ অপর দেশকে আক্রমন করতে পারে না’। নির্ভেজাল অসত্য কথা। অন্য কোন দেশ তো দূরের কথা চিন একটার পর একটা কমিউনিস্ট দেশকেই বিনা প্ররোচনায় আক্রমন করেছে।১৯৬৯ সালে মানচুরিয়ায় সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চিন আর সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্র। সেই সময় কব্জা করা একটি সোভিয়েত টি-৬২ ট্যাঙ্ক এখনও বেজিং এর মিলিটারি মিউজিয়ামে রাখা আছে।ঠিক ১০ বছর পরে ১৯৭৯ সালে চিন আক্রমন করে সোশালিস্ট রিপাবলিক অফ ভিয়েতনামকে। সাম্রাজ্যবাজী স্বার্থ ছাড়া চিনের কোন আদর্শ বা মহত্তর লক্ষ নেই।

১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে মাওয়ের গ্রেট লিপ ফরোয়াড পাগলামোর ঠ্যালায় চিনের প্রায় চার কোটি মানুষ মারা যান। নিজের দেশের ভেতরের এই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যেই চিন ভারত আক্রমন করেছিল।১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর চিন বিনা প্ররোচনায় ভারত ঢুকে পড়ে। খুব সামান্য কিছু সীমান্ত সমস্যা ছিল যা সহজেই মিটিয়ে নেওয়া যেত। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন একজন বামপন্থী, নেহেরুজীর অতি প্রিয় ভি.কে.কৃষ্ণ মেনন। ওই কমিউনিস্ট তাত্ত্বিক প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত নেহেরুকে বুঝিয়েছিলেন যে তিনি চিনকে “ম্যানেজ” করে নেবেন। মেনন চিনের রাষ্ট্রসঙ্ঘে অর্ন্তভুক্তির জন্য ওকালতি করেছিলেন। এতে ভারত চিরকালের মতো আমেরিকার বিরাগভাজন হয়ে যায়। ১৯৫৫ সালে চিনে আটকে থাকা আমেরিকার বৈমানিকদের আনার বিষয়ে মেনিন ব্রিটিশ প্রধানম্নত্রীর আদেশ মতো কিছুটা মধ্যস্থতাও করেন। যেহেতু বহিঃবিশ্বের কোন বিপদ নেই তাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে মেনন ভারতের অর্ডিনেন্স ফ্যাক্টারির উৎপাদন কমিয়ে দিলেন। যে সময় চিন ভারত আক্রমন করল দুই দিক দিয়ে।

চিনে তখন দুর্ভিক্ষে কোটি কোটি মানুষ মারা যাচ্ছে। সৈন্যরা তাঁদের বাড়ির খবর পাচ্ছে। সেই উত্তাল অবস্থায় চেয়ারম্যান মাওয়ের চিন ভারত আক্রমন করল। নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার এজেন্সি বা অরুনাচলের সীমাণ্তে তখন ভারতীয় সেনা নামমাত্র ছিল । রেড আর্মি বিনা বাধায় তেজপুর পর্যন্ত চলে আসে।অরুনাচলের গরীব গ্রামগুলিতে লুঠ করার মতো বিশেষ কিছু ছিল না। তাই একটার পর একটা গ্রাম থেকে মেয়ে লুঠ করে প্রতি রাতে লালসা মেটাতো চিনের রেড আর্মি
কৃষ্ণমেনন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বেঁচে গেলেন। ফাঁপড়ে পরলেন নেহরু। তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন কেনেডিকে ফাইটার প্লেন দিতে অনুরোধ করলেন। কিন্তু আমেরিকা রাষ্ট্রপুঞ্জে মেননের কৃতকর্মের প্রতিশোধ নিল। সি.আই.এর প্রাক্তন আধিকারিক ব্রুস রিয়াডেলের “জে এফ কে’স ফরগটেন ক্রাইসিস” বইয়ে এর বিশদ বর্ণনা আছে।ব্রিটেনের আগ্রহেই মেনন চিনে গিয়েছিলেন। কিন্তু চিনের আক্রমনের পরে নেহেরু ব্রিটেনের কাছে সাহায্য চেয়েও খালি হাতে ফিরলেন।

সেদিন চিনের সাফল্য কমিউনিস্টদের মনে আশার সঞ্চার করেছিল। চিন ভারত দখল করলে, লুঠে নেওয়া সম্পত্তি তাঁদের হাতেই দিয়ে যাবে! তাই চিনের চেয়ারম্যান হয়ে গেলেন আমাদের চেয়ারম্যান।দুটি বিদেশী দেশের প্রতি আনুগত্যের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে গেল ভারতের কমিঊনিস্ট পার্টি। ভি. এস. অচ্যুতানন্দন (V. S. Achutanandan) ভারতীয় সেনাদের জন্য রক্ত দেওয়ার আহ্বান করেছিলেন। সেই অপরাধে তাঁর পার্টির পলিটব্যুরো সদশ্যপদ বাতিল করে দেওয়া হয়।
দুভাগের থেকে আরও ভাগ হয়ে গেল কমিউনিস্ট পার্টি, জন্ম নিল আরও অবিশ্বাস আর সেই সঙ্গে শুরু হল বিপ্লব, শ্রেনীসংগ্রামের নামে ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা। জ্যোতিবসু তাঁর স্মৃতিচারনায় এই উগ্র চিনভক্তির সমালোচনা করে বলেছিলেন, “ ওরা বলেছিলেন যে মাওকে অনুসরণ করছে, স্লোগান দিলেন, ‘চিনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান’। ভুলে গেলেন দেশের বাস্তব অবস্থা, তাঁরা চিনের মডেল অনুসরণ করেছিলেন যার পরিনাম ছিল ভয়ঙ্কর, যার সঙ্গে মার্ক্সিয় দর্শনের কোন সম্পর্ক নেই।“
কিন্তু তাঁর দল কি আবার সেই একই ভুল করতে যাচ্ছে? ১৭ জুন তাঁদের বাংলা মুখপত্র লিখল, “সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ সহমতেও পৌঁছেছিল। কিন্তু বিস্ময়করভাবে ১৫ জুন ভারতীয় সেনারা সেই সহমত গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করে। এবং দুবার অবৈধ কাজ করতে চীনের সীমান্ত অতিক্রম করে। তারা চীনের জওয়ানদের প্ররোচনা দেয় ও আক্রমন করে।” চিনের আধিকারিকের এই বক্তব্য দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরাটা তাঁদের পবিত্র কর্তব্য। কিন্তু ভারতবর্ষের বিদেশ মন্ত্রক বা প্রতিরক্ষা দপ্তরের জবাব ছাপানোর কোন দায়বদ্ধতা তাঁদের নেই।

ভারতবর্ষের সংসদে দুই কমিউনিস্ট পার্টি মিলিয়ে সাংসদের সংখ্যা একটা সময় উর্ধশত ছুঁয়ে ছিল।কমিউনিস্ট পার্টি গনতান্ত্রিক পথে সাফল্য পেতে পারে, সারা পৃথিবীর সামনে একটা উদাহরন হয়ে উঠেছিল সিপিআই(এম) ও সিপিআই। আজ সেই সংখ্যা কমতে কমতে সর্বসাকুল্যে তিন জন হয়ে গেছে। তাই কি আবার ভারতীয় গনতন্ত্রের প্রতি অবিশ্বাসের ভাবনা শুরু হয়েছে পার্টির ভেতরেই। তারই কি প্রতিফলন চিনের প্রতি প্রকাশ্য আনুগত্য? তবে কি জ্যোতিবাবুদের সংসদীয় গনতন্ত্রে কমিউনিস্ট সাফল্য কেবল ইতিহাস হয়ে থাকবে? ফিরে আসবে সত্তরের দশকের সেই বীভৎসতা?
চিনের সামরিক শক্তি কতবেশী, অর্থনীতি কত এগিয়ে তার থেকেও অনেক বড় কথা ভারতবর্ষে বড় বড় কাগজে আজও এমন লেখা প্রকাশিত হতে পারে। এদেশের কোন রাজনৈতিক দলের মুখপত্র নিজের দেশের সৈন্যদের বিরূদ্ধে চৈনিক আধিকারিকের বক্তব্যই কেবল একপেশেভাবে বলতে পারে। একবার চোখ বুঝে চিন্তা করুন তো, একই ঘটনা চিনের মেনল্যান্ডে হলে কি হত? এখানেই চিনের সাফল্য।

জিষ্ণু বসু (Jishnu Basu)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.