আফগানিস্তানে শান্তিপ্রক্রিয়ার আগে নরেন্দ্র মোদীর চিঠি আশরাফ ঘানিকে, চুক্তিতে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের

বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শৃঙ্গলা আমেরিকা ও তালিবানদের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের একদিন আগে শুক্রবার কাবুল পৌঁছন এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল আফগানিস্তানের পক্ষে ভারতের যে প্রকাশ্য সমর্থন আছে তা ব্যক্ত করে । তিনি রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনির সঙ্গে সাক্ষাত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিঠি দিয়েছেন। শৃঙ্গলা আফগানিস্তানের প্রধান কার্য্যনির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ, নির্বাচিত সহ-রাষ্ট্রপতি অমরুল্লাহ সালেহ, জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব এবং নির্বাহী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হারুন চাকানসুরির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং আফগানিস্তানের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের জন্য ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সে সম্পর্কে অবহিত করেছেন ।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার তার টুইটে বলেছেন যে জাতীয় ঐক্য, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, গণতন্ত্র, বহুত্ববাদ, সমৃদ্ধি এবং বহিরাগত প্রযোজিত সন্ত্রাসের অবসান ঘটিয়ে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। গনির সঙ্গে শৃঙ্গলার বৈঠক প্রসঙ্গে কুমার বলেছিলেন যে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আফগানিস্তানে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকার জন্য ভারতের সহায়তার প্রশংসা করেছেন । কুমার বলেছিলেন যে বিদেশসচিবের আফগানিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে সেখানে উন্নয়ন ও শান্তি প্রচেষ্টা নিয়ে অর্থবহ আলোচনা হয় ।

শনিবার দোহায় যুক্তরাষ্ট্র ও তালিবানদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, যা এই দেশে প্রায় ১৮ বছর মোতায়েন থাকার পরে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত করবে। আফগানিস্তানে শান্তি ও পুনর্মিলন প্রক্রিয়াতে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে, ভারত ২০১৮ সালের নভেম্বরে মস্কোয় আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় বেসরকারী ভাবে দুই প্রাক্তন কূটনীতিককে প্রেরণ করেছিল । আফগানিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান ও চীনসহ অন্যান্য অনেক দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে তালিবানদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি নিয়ে রাশিয়া এই সম্মেলনের আয়োজন করে ।

শান্তিচুক্তির আগে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বলেছে যে আফগানিস্তানের শান্তির জন্য সবার সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও পাকিস্তান তার দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকবে। ঐতিহাসিক চুক্তির আগে ন্যাটো প্রধান আফগানিস্তানে পৌঁছন। চুক্তির আওতায় দুদেশই মধ্যকার উগ্রপন্থার অবসানের বিনিময়ে আফগানিস্তান থেকে কয়েক হাজার আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে একমত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগান জনগণকে নতুন ভবিষ্যতের তৈরির সুযোগটি কাজে লাগানোর আবেদন করেন ।

তিনি কর্মসূচির স্বাক্ষরের প্রাক্কালে বলেছিলেন যে তালিবান ও আফগান সরকার যদি তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সক্ষম হয় তবে আমরা আফগানিস্তানের যুদ্ধের অবসানের দিকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব এবং আমাদের সেনাবাহিনীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব। ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বিদেশ সচিব মাইক পম্পেওকে প্রেরণ করছেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার কাবুল সরকারের কাছে পৃথক ইশতেহার প্রকাশ করবেন। চুক্তিটি কাবুল সরকার এবং তালিবানদের মধ্যে আলাপ আলোচনার দিকে পরিচালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং যদি এই আলোচনা অর্থবহ হয়, তবে আফগান যুদ্ধ অবশেষে শেষ হয়ে যাবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.