শুক্রবার মাঝরাতেই পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। আরও শক্তি খুইয়ে ট্রপিক্যাল সাইক্লোনে পরিণত হলেও ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব শুরু হয় নোয়াখালি এলাকায়। সুবর্ণচর এলাকার প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু আগে থেকে সতর্কতা নেওয়ায় কোনও প্রাণহানি হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার রাত থেকেই গোটা নোয়াখালি জুড়ে শুরু হয় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। নোয়াখালির সুবর্ণচর ও সদর এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল সবথেকে বেশি। বেশিক্ষণ ছিল না এই ঝড়ের স্থায়িত্ব। তবে তার মধ্যেই এই এলাকার প্রায় শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে। বাড়িঘর ভেঙে পড়ায় অনেকে আহত হন। এ ছাড়াও এই এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর।
শনিবার দুপুরের দিকে টাঙ্গাইল, পাবনা ও ময়মনসিংহে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। তার আগে সকাল ন’টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি ফরিদপুর-ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছিল। বেলা দেড়টার দিকে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশের জামালপুর ও তার আশপাশে অবস্থান করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি অসমের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। এই সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে ঝড়ের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার, এমনটাই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফণীর কারণে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের ফলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের প্রধান শাসুদ্দীন আহমেদ শনিবার দুপুরে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এখন অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে এর বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, ফেনি, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার উপকূল এলাকায় দুই থেকে চার ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।