আবারও করোনাভাইরাসের(corona virus) সংক্রমণের আশঙ্কায় থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে গিয়ে বাধার মুখে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এবার কাশ্মীরে গোটা মেডিক্যাল টিমকেই পণবন্দি করা হল। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাঁদের দেখে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা। কোনওক্রমে স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্ধার করে এলাকা ছাড়েন পুলিশকর্মীরা।
ইন্দোর, বেঙ্গালুরুর পর এবার কাশ্মীর(kashmir)। ইতিমধ্যেই নোভেল করোনা ভাইরাস জাঁকিয়ে বসেছে উপত্যকায়। রবিবার সকাল পর্যন্ত জম্মু কাশ্মীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২০৭। মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভূস্বর্গে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে একাধিক এলাকায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কারও শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই তড়িঘড়ি তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
কাশ্মীরের বুধগামের শেখপোরা এলাকায় থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের কাজে গিয়েছিলেন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। সেখানে একটি বাড়িতে স্ক্রিনিংয়ের কাজে ঢুকতেই বিপত্তি। প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মীদের তাঁরা বাড়িতেই ঢুকতে দিতে রাজ হননি। পরে পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে বাড়িতে ঢুকে থার্মাল স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া শুরু করতেই এরপর স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্য করে শুরু হয় গালিগালাজ। শেষমেশ গোটা মেডিক্যাল টিমকেই বাড়িতে পণবন্দি করে রাখে পরিবারটি।
এদিকে, শেখপোরার ওই বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীদের পণবন্দি করে রাখার খবর যায় পুলিশের কাছে। খবর পেয়েই স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্ধারে এলাকায় যায় পুলিশ। এলাকায় পুলিশ ঢুকতেই বাসিন্দারা পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম দশা হয় পুলিশের।
এরপর কোনওমতে ওই মেডিক্যাল টিমের সদস্যদের উদ্ধার করে পুলিশ। এলাকাবাসীর ছোড়া পাথরের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীও। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।
গোটা দেশেই ক্রমেই বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কাশ্মীরেও ইতিমধ্যেই ২০৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। উপত্যকায় এখনও পর্যন্ত মারণ ভাইরাসের বলি ৪। করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করে তুলতে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন চিকিৎসক, নার্স-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের সেই ত্যাগের মূল্য দিচ্ছে না সভ্য সমাজ। সংকটের এই দিনেও যখন দেশের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীরা নিজেদের পরিবার ছেড়ে দেশবাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকছেন, তখনও একের পর এক হামলা চলছে তাঁদের উপর।