অজলপাইগুড়িতে দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়ন্যতম অভিযুক্ত যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সিজেএম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সোমবার সৈকত জেলা আদালতে হাজির হয়েছিলেন।
চলতি বছর ১ এপ্রিল পান্ডা পাড়ার পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান অর্পনা ভট্টাচার্য ও আইনজীবী সুবোধ ভট্টাচার্যর অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। দম্পতির ঘর থেকে সুইসাইড নোট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সেই সুইসাইড নোটে সৈকত সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ, মনোময় সরকার, সোনালী বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করা হয় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার জন্য। এরপর সৈকত বাদে সকল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়ে জামিনে ছাড়া পায়। সৈকতের জামিনের আবেদন নাকচ করে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। তারপর থেকে সৈকত গা ঢাকা দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানায় সৈকত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ২৬ অক্টররের মধ্যে জেলা আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় সৈকতকে।
এদিকে ১৯ অক্টবর থেকে আদালতের পুজোর ছুটি শুরু হবে। তার আগে এদিন প্রথমে জেলা আদালতের ডিস্ট্রিক কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেখান এই মামলার নথি না থাকায় সিজেএম কোর্টে আবেদন করতে বলা হয়।
এদিন দুপুরে সিজেএম কোর্টে জামিনের আবেদন করেন সৈকত। সৈকতের পক্ষের আইনজীবীর পাশাপাশি সৈকত নিজেও মামলা নিয়ে সওয়াল করেন এবং জামিনের আবেদন জানায়। কয়েক ঘণ্টা মামলা চলে দফায় দফায়। এদিকে পুলিশ সৈকতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানায়। দীর্ঘক্ষণ পরে সিজেএম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুতপ্রিয়া খাইবা সৈকতের জামিনের আবেদন নাকচ করে দুই দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সৈকতের পক্ষের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত।
তিনি আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সৈকত আদালতে হাজির হয়ে জেলা বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু জেলা বিচারক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করতে বলেন। কারণ তার আদালতে এই মামলা এখনো আসেনি। এর পরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দীর্ঘ সময় শুনানির পরে এদিন রাত সাতটার পরে আদালত দুই দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ অক্টবর আবার আদালতে সৈকতকে আনা হবে।
সৈকত বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জেলা আদালতে এসেছি। তবে আমি পলাতক ছিলাম না। আমার নাম চার্জশিটে সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। কেউ যদি আত্মহত্যার আগে দশজনের নাম লিখে যায় সেটাও পুলিশের উচিত নিরপেক্ষভাবে দেখা।”